মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমারে ফিরে গেলেই মৃত্যুর মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভারত থেকে বিতাড়িত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা রোহিঙ্গারা। এখন রাজধানী দিল্লির একটি ক্যাম্পে আশ্রয় হয়েছে তাদের। এখান থেকেই তাদের ফেরত পাঠানো হবে মিয়ানমারে। সেখানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন আতঙ্কের কথা। তাদের অনেকেই নিশ্চিত যে ফিরে গেলেই মৃত্যুর মুখে পড়তে হবে তাদের। আবারও মায়ের কোল থেকে কেড়ে নেওয়া হবে সন্তানকে। কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, সরকারের বোঝা উচিত যে রোহিঙ্গারা কেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। ভারত সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে জাতিসংঘসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংগঠন।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাত লাখের মতো মানুষ। সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সময় ভারতেও আশ্রয় নিয়েছে অনেক রোহিঙ্গা। এখনও দেশটিতে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।
দিল্লির ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমি নিশ্চিত আমাকে মেরে ফেলা হবে, শিশুকে কেড়ে নেওয়া হবে মায়ের কোল থেকে। এমনটা আমি নিজের চেখেই দেখেছি।’
আব্দুর রহমানের মতো হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। দিনে দেড়শ রুপি আয় করে মানবেতর জীবনযাপন করলেও দেশে ফিরতে চান না আব্দুর রহমান। তিন সন্তানকে নিয়ে থাকা রহমান বলেন, ‘মিয়ানমারে যাওয়ার চেয়ে এখানে থাকা ভালো।’
চলতি মাসের শুরুতে ভারত ঘোষণা দেয় যে সাতজন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে পাঠিয়েছে তারা। ২০১২ সাল থেকে তাদের আটক রাখা হয়েছিলো। আব্দুর রহমান বলেন, ‘আপনার কি মনে হয়? তাদের স্বাগত জানানো হবে? তাদেরকে হত্যা করা হবে এবং নিশ্চিত থাকুন বিশ্ব তাদের খুঁজে পাবে না।’
দিল্লির ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া আব্দুল করিম নামে আরেক রোহিঙ্গা বলেন, মিয়ানমারে শান্তি ফিরে আসলেই কেবল সেখানে যাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ‘সরকারের বোঝা উচিত যে, আমরা কেন সেই দেশ ছেড়ে চলে এসেছি। যদি সেখানে আমাদের মৃত্যু ভয় না থাকতো তবে কখনোই পালিয়ে আসতাম না। ফিরে গেলে আবারও সেই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে আমাদের।
মোহাম্মদ শাকিল নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, প্রতিনিয়তই তার মাঝে দেশে ফিরে যাওয়ার আকুতি কাজ করে। তিনি বলেন, ‘শরণার্থী হিসেবে কে বাঁচতে চায়। কিন্তু আমি আমার সন্তানদের পেটে ভাত দিতে পারি না।
ভারত সরকার রোহিঙ্গাকে জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি বিবেচনা করে। তাদের ধারণা, মুসলিম জঙ্গিরা তাদের ব্যবহার করতে পারে। তবে ভারতের এমন সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। আর মানবাধিকার সংগঠনগুলা চায় মিয়ানমারের এমন আচরণ বন্ধে অন্যান্য দেশের মতোই অবস্থান নিক ভারত। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানায়, তারা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত দিয়ে ভারতের আশ্রয় দেওয়ার ঐতিহ্যকে ক্ষুন্ন করেছে সরকার। অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক আকার পাটেল বলেন, সরকার গত দুই বছর ধরেই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এমন আচরণ করে আসছে।
বর্ণবাদ বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত তেনদায়ি আশিউম বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি ভারতের আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তিনি বলেন, ‘তাদের জাতিগত পরিচয় বিবেচনা করে তাদের নিরাপত্তা থেক বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাদের রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি দায়বদ্ধ ভারত সরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।