বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আবারও একটি ফরমায়েশি রায় দেয়ার জন্য আদালত দিন ধার্য করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা সাজানো মিথ্যা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না করেই সরকারের হুকুমে আরেকটি ফরমায়েসী রায়ের দিন ধার্য করেছেন নিম্ন আদালত। যেটি সম্পূর্ণরুপে বেআইনী ও নিম্ন আদালতে সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ। গতকাল (বুধবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, অসুস্থ ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য চলার বিধান পৃথিবীর দেশগুলোতে নেই। বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার বেআইনী খারাপ নজীর সৃষ্টিকারী সরকার। তারা জিঘাংসার নতুন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন, এটিও তার একটি। যেমন বন্দুকের জোরে দেশের প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছাড়তে ও পদত্যাগ করতে বাধ্য করা এবং বিচারক মোতাহার হোসেনকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার নজির সারা দুনিয়াতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তেমনি অসুস্থতাজনিত কারণে বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে রায় দেয়া হলে তাও হবে পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এই রায় হতে যাচ্ছে তুষের আগুনের মতো জ্বলতে থাকা প্রতিহিংসা পূরণের চাঞ্চল্য।
গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণরুপে নিশ্চিহ্ন করতে এবং মানুষকে বোবা বানাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পর জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার নামে সরকার আরেকটি ভয়ঙ্কর আইন করতে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, এই সরকার মানুষের ভোটের অধিকার ছিনতাই করে গুম-খুন-বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং গায়েবী মামলা, কবরে শায়িত লাশের বিরুদ্ধে মামলা, হাসপাতালে শায়িত অশীতিপর বৃদ্ধ ও পবিত্র হজ¦ পালনরত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলায় বাছ-বিচারহীন গ্রেফতারের মাধ্যমে দেশটাকে নৈরাজ্যে ভরিয়ে দিয়েও তারা স্বস্তি পাচ্ছে না। সেজন্য জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও ভয়াবহ দুঃশাসন ও মহা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এই কারণে তারা সবসময় আতঙ্কে ভোগে যে, কোন সময়, কোন গণমাধ্যমে, কোন ফাঁকে তাদের মহা দুর্নীতির মহা কেলেঙ্কারীর খবর ফাঁস হয়ে পড়ে। দুর্নীতির খবর চেপে রেখে নিজেদেরকে নিরাপদ করার জন্যই কি মিডিয়ার মুখ বন্ধ করতে একের পর এক ভয়ংকর কালো আইন করে যাচ্ছে সরকার?
কালাকানুন করে সরকার দেশকে দু’শ বছর পূর্বের যুগে নিয়ে যাচ্ছেন মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুখে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলে জনগণকে গবাদি পশুর খোয়াড়ে আটকে রাখছেন। সরকারের করা একেকটা কালো আইন দেখে মানুষ এখন ৭২-৭৫এর কথাই বলাবলি করছে। সেই বাকশালী কালো আইনই বর্তমান সরকার তৈরি করছেন নতুন আদলে। সেই সময়ে গণকন্ঠকে বন্ধ করে এর সম্পাদক কবি আল মাহমুদ, সত্য সংবাদ পরিবেশনের জন্য ‘হলিডে’র সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান, সাংবাদিক আতিকুল আলম, চট্টগ্রামের ইস্টার্ন এক্সামিনারের সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়েছিল নির্ভীক লেখনির জন্য। ঢাকায় স্পোকসম্যান ও মুখমাত্র নামে ইংরেজি-বাংলায় ফয়েজ আহমেদের সম্পাদনায় দু’টি পত্রিকা বের হতো, সত্য প্রকাশের জন্য তাঁর ওপর চালানো হয়েছিল জুলুম। অবশেষে ‘৭৫ এ বাকশাল গঠনের পর ৪টি সরকার অনুগত পত্রিকা রেখে সব গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়েছিল। সে সময় গণমাধ্যমের লোকজনদেরকে চাকরি হারিয়ে হকারগিরি করতে হয়েছে। গণমাধ্যম নিগ্রহের সেই ঐতিহ্য এখন বহন করে চলছে শেখ হাসিনার ভোটারবিহীন আওয়ামী মহাজোট সরকার। এবার যেসব ভয়ঙ্কর নিবর্তনমূলক আইন করা হচ্ছে তাতে গণমাধ্যমের মালিকরাই গণমাধ্যম বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। মানুষ ভয়ে কথা না বলে নিজে নিজে বোবা হয়ে যাবেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফরহাদ হালিম ডোনার, হায়দার আলী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।