পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যার নিবারণ মানুষের সাধ্যাতীত। ভূমিকম্প সরাসরি মানুষের প্রাণ নাশ না করলেও এর প্রকোপে আমাদের নির্মিত কাঠামোগুলো (স্ট্রাকচার) ভেঙ্গে পড়ে আমাদের মৃত্যু ঘটাতে পারে। কাঠামো হয়ত আবার তৈরি করা সম্ভব কিন্তু মৃত্যুর পরিবর্তন আর সম্ভব হয়ে উঠে না। ২০০৮ সালের ১২ মে ৭.৮ মাপের চীনের সিচুয়ানে ভূমিকম্প আমাদের এ ব্যাপারে আরো বেশি করে ভাবিয়ে তুলেছে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পেতে পারলে অন্তত লোকক্ষয় অধিকাংশ রোধ করা সম্ভব হতো, যদিও পূর্বাভাসের মাধ্যমে কাঠামোর ধ্বংস ও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি আটকানো সম্ভব নয়। আমরা পর্যালোচনা করে দেখতে চাই, বর্তমান প্রযুক্তিতে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দান কতটুকু সম্ভব।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে চীনে একটি আটমুখী ড্রাগন নির্মাণ করা হয়েছিল, যার প্রতিটি মুখে ছিল একটি করে ব্রোঞ্জ বল। ভূকম্পনের আন্দোলনে বল গড়িয়ে নিচে ধাতুনির্মিত ভেকের মুখে সশব্দে পড়ত। বল নিঃসারী ড্রাগনের অভিমুখ দেখে ভূকম্পের দিক নির্ণয় করা হতো। এটি সম্ভবত ভূকম্পের স্বল্পকালীন পূর্বাভাসের প্রাচীনতম চেষ্টা। ১৯৬০ সাল থেকে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস সংক্রান্ত বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা শুরু হয়। এ ব্যাপারে জাপান, রাশিয়া, চীন ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র অগ্রণী ভূমিকা নেয়। ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের দুটি নির্ণায়ক সূচক হলো তার স্থান ও কাল। পৃথিবীর ভূকম্পনপ্রবণ স্থানগুলো আমরা মোটামুটি চিহ্নিত করতে পেরেছি। কোন স্থানে কত মাপের ভূমিকম্প ঘটতে পারে তার একটি গণিতভিত্তিক ধারণা দেয়া সম্ভব। তবে ভূমিকম্পের কাল নিরূপণে বিপত্তি ঘটে। যেমন, ভারতের আসাম, মেঘালয় এবং আমাদের বাংলাদেশে বড় মাপের ভূমিকম্প ঘটতে পারে সেটি আমরা জানি, কিন্তু কখন তা ঘটবে তা আমাদের জানা নেই।
ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দানে যে সকল পন্থা ও পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে এখানে তার সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যেতে পারে।
১। ভূপৃষ্ঠের উচ্চাবচতার হঠাৎ পরিবর্তন: ভূতাত্তি¡ক কারণে ভূপৃষ্ঠের উচ্চাবচতার পরিবর্তন ঘটে। এ পরিবর্তন কম সময়ের মধ্যে ঘটে গেলে সেটি আসন্ন ভূকম্পের সংকেত বলে ধরা যেতে পারে। ভূপৃষ্ঠে স্থাপিত যন্ত্রপাতি ও উপগ্রহ যোগাযোগের মাধ্যমে ভূ-পরিবর্তন মাপা সম্ভব। জাপানের নিগাতা উপকূলে ১৯০০ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে ভূপৃষ্ঠের উচ্চাবচতার অস্বাভাবিক পরিবর্তন ধরা পড়ে। সময় যত এগিয়ে গিয়েছিল তত এ ভূ-পরিবর্তন বাড়তে থাকে। ১৯৬০ সালের নিগাতা ভূমিকম্পের পূর্বে এ পরিবর্তন সর্বাপেক্ষা বেশি ২০০ মিলিমিটারে দাঁড়ায়। এ তথ্য নিগাতা ভূমিকম্পের পূর্বাভাসে কাজে আসেনি কারণ তথ্যগুলো ভূমিকম্পের পরবর্তীকালে ধরা পড়ে। আপাতদৃষ্টিতে এ পদ্ধতিটি হৃদয়গ্রাহী হলে নিগাতা উপকূলের ভূ-পরিবর্তন তথ্য বর্তমান উন্নততর গবেষণায় সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে।
২। ভিন্ন গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ বল: ১৭৯৪ সালে জনৈক লেখক বলেন, যখন সৌরমন্ডলের গ্রহগুলো এক রেখায় থাকে তখন পৃথিবীর উপর মাধ্যাকর্ষণ বল বেড়ে গিয়ে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। এমনটি ঘটে ১৭৯ বছর পর পর। ১৯৮২ সালে গ্রহগুলো আবার এক রেখায় আসবে ও তাতে ক্যালিফোর্নিয়ায় ঘটবে বিধ্বংসী ভূকম্প এমনটি লেখক দাবি করেন। ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে ১৯৮২ সাল পেরিয়ে গেল কিন্তু এ জায়গায় ভূকম্প ঘটল না। বস্তুত লেখকের ১৭৯ বছরের ক্যালিফোর্নিয়া ভূমিকম্পের পর্যায় সারণি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। তাছাড়া দূরবর্তী গ্রহের পৃথিবীর উপর মাধ্যাকর্ষণ বল নগণ্য। কাছের ভারি গ্রহগুলোর প্রভাব বেশি হবার কথা। এ কাছের গ্রহগুলোর বিভিন্ন সমবায়ে এক রেখায় আসা ঘটে অসংখ্য সময় সারণিতে। এ সকল কারণে এ তত্ত¡টি ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে পরিত্যক্ত হয়েছে।
৩। ভূমিকম্পের ঐতিহাসিক পর্যায় সারণি থেকে পূর্বাভাস: পার্ক ফিল্ডের পরীক্ষা-স্থিতিস্থাপক উৎসারী তত্ত¡ (ইলাস্টিক রিবাউন্ড থিয়োরি) অনুযায়ী ভূতাত্তি¡ক কারণে শিলাতে ক্রমশ কর্ষণ (স্ট্রেইন) উৎপন্ন হয়। কর্ষণের মান শিলার সহন ক্ষমতা অতিক্রম করলে ভূচ্যুতি হয় এবং ভূকম্প ঘটে। এতে শিলা কর্ষণমুক্ত হয়। আবার সে জায়গায় ধীরলয়ে কর্ষণ উৎপন্ন হতে থাকে এবং আর একটি ভূচ্যুতিজনিত ভূকম্প ঘটে। এভাবে ভূমিকম্প প্রবণ স্থানে বারবার ভূমিকম্প ঘটতে থাকে। শিলার গুণাগুণ আকস্মিকভাবে পরিবর্তিত না হলে এ কর্ষণ ও কর্ষণমিক্তি প্রক্রিয়ায় একটি নির্দিষ্ট সময় লাগার কথা। এভাবে ভূমিকম্প সংগঠনের একটি পর্যায় সারণি তৈরি হয়। ভূকম্পবিদরা লক্ষ্য করলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ভূমিকম্প প্রবণ পার্কফিল্ড নামক স্থানে ১৮৫৭, ১৮৮১, ১৯০১, ১৯২২, ১৯৩৪ এবং ১৯৬৬ সালে বড় মাপের ভূমিকম্প ঘটে। এ সারণিতে ২২ বছর পর পর ভূমিকম্প ঘটছে (শুধু ১৯৩৪ ব্যতিক্রম, যদিও ১৯২২ থেকে ১৯৬৬ হল ৪৪ বছর)। এ হিসাবে ১৯৮৮ সালে পরবর্তী ভূমিকম্প ঘটা উচিত। একটি সুযোগ পাওয়া গেল ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ভূমিকম্প ঘটে কিনা তা দেখার, গবেষকদের মধ্যে সাজ সাজ রব উঠল। রাষ্ট্র অনুদান নিয়ে এগিয়ে এল ভূমির পরিবর্তন মাপতে নানা যন্ত্রপাতি বসানো হলো কিন্তু প্রকৃতি নিয়ম মানতে চাইল না। পার হয়ে গেল ১৯৮৮ সাল, কোন বড় মাপের ভূমিকম্প ছাড়াই। আজ ২০০৮ সাল পর্যন্ত কোন ভূমিকম্প ঘটেনি। মেনে নেয়া হয়েছে যে পার্কফিল্ড পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে, পার্কফিল্ডে যে কোন সময় একটি বড় মাপের ভূমিকম্প ঘটতে পারে।
ভূমিকম্পের পর্যায় সারণি অন্যান্য ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে। আসামের ঐতিহাসিক কালের প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প ঘটে ১৮৯৭ এবং ১৯৫০ সালে। এটিকে ৫০ বছরের সারণি মনে করা হয়। সে হিসাবে ২০০০ সালে আসামের এ ভূমিকম্পের পূণরাবৃত্তি ঘটার কথা থাকলেও ২০০৮ সাল পর্যন্ত ঘটেনি। অনেকে মনে করেন একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প বাংলাদেশ ও আসামে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে।
রিড নামের এক ভূকম্পবিদ লক্ষ করেন যে, ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান অ্যান্ডিজ চ্যুতিতে ১৮৫৫ থেকে ১৯০৬ সালের ব্যবধানে ভূ-বিচ্যুতির পরিমাণ ছিল ৩.২ মিটার। অর্থাৎ ৫০ বছরে গড় চ্যুতির পরিমাণ হল বছরে ৬.৪ সেন্টিমিটার। ১৯০৬ সালের বড় মাপের ক্যালিফোর্নিয়া ভূকম্পে ভূ-চ্যুতি ঘটে ৬.৫ মিটার। সহজ হিসাবে দেখা যায় যে, প্রায় ১০০ বছর পর পর এ ভূমিকম্প ঘটতে পারে। ২০০৬ সালে সেমিনার ইত্যাদি মাধ্যমে ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ফ্রান্সিস্কো ভূকম্পের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব পালন করা হয়। যদিও ২০০৮ সাল পর্যন্ত কোন ভূমিকম্প না ঘটলেও যে কোন দিন সেটি ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দেখা গেল ভূমিকম্পের সময়ানুযায়ী পর্যায় সারণি একটি পর্যবেক্ষিত সত্য হলেও তা ঘড়ির কাঁটার মত সময় ধরে চলে না।
৪। ভূমিকম্পের প্রাথমিক তরঙ্গের বেগের পরিবর্তন থেকে পূর্বাভাস: ভূগর্ভে সৃষ্ট ভূকম্পনের যে অংশ শব্দের মতো তরঙ্গের গতি অভিমুখ সঙ্কোচন-প্রসারণের দ্বারা এগিয়ে যায় তাকে প্রাথমিক তরঙ্গ বলে। এ তরঙ্গের গতি সর্বাপেক্ষা বেশি। এটি একটি বৈজ্ঞানিক সত্য যে, তরঙ্গের গতি নির্ভর করে তরঙ্গ যে মাধ্যমে যাতায়াত করে তার ভৌতিক ধর্মের উপর। ধরে নেয়া যেতে পারে ভূমিকম্পের সূচনায় ভূগর্ভস্থ শিলার পরিবর্তন ঘটে। শিলাতে ফাটল দেখা দিতে পারে বা শিলার ঘনত্ব পরিবর্তিত হতে পারে। শিলার এ পরিবর্তন ভূমিকম্পের প্রাথমিক তরঙ্গের গতিবেগের পরিবর্তন ঘটায়। পর্যবেক্ষণে এ পরিবর্তন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। এ গতিবেগের পরিবর্তন ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দানে কাজে লাগানো যেতে পারে। আধুনিক গবেষণায় এ পদ্ধতির যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতা পাওয়া যায়নি।
৫। ভূস্তরে রেডন গ্যাসের উদগীরণ থেকে পূর্বাভাস: রেডন হলো একটি তেজস্ক্রিয় গ্যাস। তেজস্ক্রিয়তার জন্য স্বল্পমাত্রায় থাকলেও এটিকে সনাক্ত করা সম্ভব। এ তত্তে¡র প্রবক্তারা বলেন ভূমিকম্পের কিছুদিন আগে থেকে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ভূগর্ভে রেডন গ্যাসের নিষ্কাশন ঘটে। প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি ভূমিকম্পে এমনটি ঘটেছিল বলে দাবি করা হয়। ১৯৯৫ সালে জাপানের কোবে ভূমিকম্পে গভীর নলকূপে ভূমিকম্পের নয়দিন আগে রেডনের মাত্রা দশগুণ বেড়ে গিয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে। আলোচ্য তত্ত¡টি বেশ আশাপ্রদ কিন্তু এখন পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য এত সামান্য যে এ তথ্যের ভিত্তিতে কোন বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
৬। শিলার বৈদ্যুতিক পরিবর্তন থেকে পূর্বাভাস: শিলার মধ্য দিয়ে স্বল্প পরিমাণ হলেও বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে। ভূমিকম্পের প্রাক্কালে শিলায় ফাটল দেখা দিতে পারে ও অন্যান্য নানা কারণে শিলার বিদ্যুৎ প্রবাহী ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটে। অন্যভাবে বলা যায়, শিলার বৈদ্যুতিক রোধের পরিবর্তন ঘটে। তাই শিলার বিদ্যুৎ প্রবাহী ক্ষমতার পরিবর্তনকে শিলার পদার্থবিদ্যাগত পরিবর্তনের সূচক হিসাবে সহজে চিহ্নিত করা যায়। এভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব। গবেষকরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের আগে শিলার বৈদ্যুতিক রোধ কমে যায়। তবে ভূস্তরে অন্যান্য বিদ্যুৎ তরঙ্গের অনাকাঙ্খিত প্রভাব এত বেশি যে মূল পরীক্ষায় বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যায়।
৭। প্রাক-ভূমিকম্পের ও উত্তর-ভূমিকম্পের মাত্রার পরিবর্তন থেকে পূর্বাভাস: কোনো কোনো বড় ভূমিকম্পের পূর্বে ছোট মাপের অনেক ভূকম্পন হতে দেখা যায়। এ প্রাক-ভূমিকম্প (আফটার শক) বলে। ১৯৭৫ সালে অরিভিল ভূমিকম্পে প্রাক-ভূমিকম্প অভিঘাত থেকে মূল ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল। অপরদিকে, ১৯৭৬ সালে ইতালির ফ্রিডলি ভূমিকম্পে উত্তর-ভূমিকম্প অভিঘাতের পৌনপুনিকতা থেকে পরবর্তী একটি বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল।
উপরের আলোচনায় দেখা গেল যে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দানের চেষ্টা বহু বছর থেকে চলছে কিন্তু নির্ভরযোগ্য ও অবিসংবাদি কোনো পদ্ধতি এখনো আবিস্কৃত হয়নি। অনেকে জীবজন্তুর আচরণের পরিবর্তন থেকে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া যায় বলে দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে কোন সর্বজনস্বীকৃত সিদ্ধান্তে যথেষ্ট তথ্য নেই। ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের তত্তে¡র একশ ভাগ সাফল্য বুঝাবে না। কারণ এলাকাটি ভূমিকম্পপ্রবণ (তা না হলে এ স্থানের ভূমিকম্প পূর্বাভাসের প্রয়োজন হতো না) এবং এখানে যে কোনো সময় একটি ভূমিকম্প ঘটে যেতে পারে! উল্টো পক্ষে, পূর্বাভাস অনুযায়ী ভূমিকম্প না ঘটলে পূর্বাভাস তত্ত¡টি পরিত্যক্ত হবে। এত সব জেনে কোন উৎসাহী পাঠক হয়তো ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের একটি নতুন তত্ত্ব দাঁড় করতে চাইবেন। যদি তাই হয় তাহলে পূর্বাভাস তত্তের প্রাথমিক শর্তগুলো জেনে নিন: ১. যে সময়কালে ভূমিকম্প ঘটবে তার নির্দেশ, ২. কোথায় সেটি ঘটবে তার স্পষ্টিকরণ, ৩. ভূমিকম্পের মান (ম্যাগনিচ্যুড) নির্ধারণ এবং ৪. ভূমিকম্পে যে ক্ষয়ক্ষতি ঘটবে তার মূল্যায়ন।
ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের একটি আর্থ-সামাজিক দিকও রয়েছে যা ভুলে গেলে চলবে না। রাষ্ট্রীয় অনুদানে পূর্বাভাস সংক্রান্ত গবেষণা চলে। গবেষণায় যে বিপুল পরিমাণ মানবশক্তি ও তথ্যের প্রয়োজন তা যথেষ্ট ব্যয়-সাপেক্ষ। তাত্তি¡ক পূর্বাভাস দানের পর সর্বসাধারণকে অবহিত করা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের দায়িত্ব। পূর্বাভাস পাবার পর সম্ভাব্য এলাকা থেকে জনগণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সরকারের করণীয়। পূর্বাভাস মতো সঠিক সময়ে ভূমিকম্প না ঘটলে সরকারকে সমালোচনায় পড়তে হবে। কোনো একটি স্থানে বড় মাপের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়া হলে সে স্থানে নিযুক্তি ও ব্যবসায় মন্দা আসতে পারে। স্থাবর সম্পত্তির অবমূল্যায়ন ঘটতে পারে। ব্যাপক জনপরিচলনে জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটতে পারে। এসব হলো ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের আর্থ-সামাজিক দিক।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।