Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল কোরআনে বর্ণিত আম্বিয়া (আ:)-এর বিশেষ দোয়া

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

(পূর্বে প্রকাশিতের পর) আল্লাহ তাআলা হযরত মূসা আ. কে শরীয়াত হিসেবে তাওরাত দেওয়ার জন্য প্রথমে ত্রিশ দিন পরে আরও দশ দিন বৃদ্ধি করে মোট চল্লিশ দিন সিয়ামসহ ই’তেকাফের মতো একই স্থানে ধ্যানমগ্ন থাকতে বললেন। হযরত মূসা আ. শর্তসহ মেয়াদ পূর্ণ করে যখন নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হলেন, তখন আল্লাহ পাক নূরের পর্দার অন্তরাল থেকে তার সঙ্গে কথা বললেন। হযরত মূসা আ. তখন আল্লাহ পাককে সরাসরি দেখার প্রার্থনা করে বলেছিলেন, “ হে আমার প্রতিপালক, আমাকে দর্শন দিন, আমি আপনাকে দেখব” (সূরা- আরাফ ১৪৩)।

আল্লাহ পাক হযরত মূসাকে বললেন, তুমি আমাকে ইহকালে কখনই দেখতে পাবেনা। তুমি বরং পাহাড়ের প্রতি লক্ষ কর। তা স্বস্থানে স্থির থাকলে আমাকে দেখতে পাবে। যখন আল্লাহ তাআলা পাহাড়ের উপর তার নূর প্রকাশ করলেন, তখন পাহাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেলে, আর মূসা আ. সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন। মূসা আ. জ্ঞান ফিরে পেয়ে আল্লাহ পাকের নিকট তওবা করে প্রার্থনা করলেন- “ হে আল্লাহ, আপনার পবিত্রতা ঘোষনা করছি। আমি অনুতপ্ত হয়ে আপনার নিকট প্রত্যাবর্তন করলাম এবং মুমিনদের মধ্যে আমিই প্রথম” (সূরা- আরাফ ১৪৩)।

বনী ইসরাঈল যখন হযরত মূসা আ. এর নিকট আল্লাহ পাকের বাণী সরাসরি শোনার আবেদন করল, তখন হযরত মূসা আ. তাদের সত্তর জন নেতা নিয়ে তুর পাহাড়ে গমন করেন। আল্লাহ পাক হযরত মূসার সঙ্গে কথা বললেন এবং তারা তা শুনতে পেলো। তৎসত্তে¡ও তারা বলল, আমরা নিজেদের চোখে আল্লাহকে না দেখলে শুধু কথা শুনে বিশ্বাস করব না। তখন প্রচন্ড ভূকম্পনে তারা মুত্যুমুখে পতিত হল। এ মূহুর্তে মূসা আ. আল্লাহ পাকের নিকট নিবেদন করেন আমাদের মধ্যে যারা নির্বোধ তাদের কৃতকর্মের কারণে কি আপনি আমাদেরকে ধ্বংশ করে দেবেন? তারপর তিনি প্রার্থনা করেন, “ আপনিই তো আমাদের অভিভাবক সুতরাং আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও আমাদের প্রতি দয়া করুন। ক্ষমাশীলদের মধ্যে আপনিই শ্রেষ্ঠ” (সূরা- আরাফ ১৫৫)।

তখন হযরত মূসা আ.- এর দুআয় তারা সকলে পুনরায় জীবিত হল। হযরত মূসা আ. বনী ইসরাঈলদের নিয়ে সিনাই মরুভূমিতে অবস্থানকালে তাদেরকে বললেন, পার্শ্ববর্তী আরীহা জনপদে তোমরা প্রবেশ কর। সেখানে অত্যাচারী শত্রু বাহীনের বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ হও। আল্লাহ পাকের ওয়াদা রয়েছে- তোমাদের পিতৃভূমি পুনরায় তোমাদের অধিকারে আসবে। বনী ইসরাঈল অভদ্রোচিত ভাষায় বলল, হে মূসা আ. তুমি তোমার প্রভূকে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে সেখানে গিয়ে যুদ্ধ কর। আমরা এখানেই রইলাম। হযরত মূসা আ. তখন আল্লাহ পাকের নিকট আরয করেন- “ হে আমার রব, আমার ও আমার ভ্রাতা ব্যতীত অপর কারও উপর আমার আধিপত্য নেই, সুতরাং আপনি আমাদের ও সত্যত্যাগী সম্প্রদায়ের মধ্যে ফায়সালা করে দিন” (সূরা-মায়িদা ২৫)।

হযরত দাউদ (আঃ)-এর প্রার্থনা ঃ আল্লাহ তাআলা হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম এর প্রশংসায় বলেনে, দাউদ আ. অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী ছিলেন। পর্বতমালা ও বিহঙ্গকুল হযরত দাউদ আ. এর সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহ পাকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করত। আল্লাহ তাআলা হযরত দাউদ আ.-এর রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলেন এবং তাঁকে অনেক প্রজ্ঞা ও মীমাংসাকারী বাগ্নিতা দান করেছিলেন। হযরত দাউদ আ. ও তার পুত্র সুলাইমান আলাইহিস সালামকে আল্লাহ পাক বিভিন্ন বিষয়ে প্রভূত জ্ঞান দান করেছিলেন। তারা উভয়ে আল্লাহ পাকের নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে দুআ করেন, “ সকল প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আমাদেরকে তাঁর বহু মুমিন বান্দার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন” (সূরা-নাম্ল ১৫)।

হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর দুআ ঃ হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম ছিলেন বিশাল রাজ্যের অধিপতি। তার রাজত্ব শুধু মানুষের উপরই সীমিত ছিল না; বরং জিন, পশু, পাখি, ও বাতাসের উপরও তার আধিপত্য ছিল। এই সব কিছু আল্লাহ পাকের হুকুমে হযরত সুলাইমানের নির্দেশের আনুগত ছিল। তার এত ব্যাপক ক্ষমতার কারণ ছিল, তিনি একবার আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করেছিলেন, “ হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে দান করুন এমন এক রাজ্য, যা আমার পর আর কারো হাসিল হবে না। নিশ্চয় আপনি পরম দাতা” (সূরা- সাদ ৩৫)। আল্লাহ তাআলা তার এ দুআ কবুল করেছেন। তাঁকে এমন বিস্ময়কর রাজত্ব দান করা হয় যা তার আগে বা পরে দ্বিতীয় কাউকে দেওয়া হয়নি। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন বলেছেন, গত রাএে জনৈক অবাধ্য জিন আমার নামাজ নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। তখন আল্লাহ তাআলা তার উপর আমাকে ক্ষমতা প্রদান করলেন। আমি তাকে পাকড়াও করে ইচ্ছা করলাম, তাকে মসজিদের খুঁটির সঙ্গে আবদ্ধ করে রাখি। যাতে তোমরা সকালে তাকে দেখতে পাও। কিন্তু তখনই আমার ভাই সুলাইমান আ.-এর দুআ তিনি আল্লাহ পাকের নিকট আরয করেছিলাম হে আল্লাহ, আমাকে এমন এক রাজত্ব দান করুন যার অধিকারী আমি ছাড়া। আর কেউ হবেনা। এ কথা স্মরণ হওয়া মাএ আমি তাকে ছেড়ে দেই। হযরত সুলাইমান আ. দীর্ঘদিন যাবৎ বিশাল রাজ্য পরিচালনা করেন। মানুষ, জিন, পশু, পাখি সকলেই তার হুকুমের অনুগত ছিল। তিন সকল পশু পাখির ভাষা বুঝতেন। তিান সুষ্ঠু বিচারকার্য পরিচালনায় অসাধারণ জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারী ছিলেন। আল্লাহ প্রদত্ত এই চতুর্মুখী ও সর্বব্যাপী অনুগ্রহ লাভ করে তিনি আল্লাহ পাকের শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা আদায় করে মোনাজাত করেন, “হে আমার প্রাতিপালক, আমাকে সামর্থ্য দিন যতে আমি আপনার প্রাতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি আমার পতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তার জন্য এবং যাতে আমি সংকর্ম করতে পারি, যা আপনি পসন্দ করেন এবং আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের শ্রেণীভুক্ত করুন। -সুরা নামল ১৯।”

হযরত আইয়ুব আ.- এর দুআ ঃ হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম ঐশ্বর্য, প্রচুর্য ও সন্তান-সন্ততির দিক থেকে অত্যন্ত সফল ও ভাগ্যবান ছিলেন। হঠাৎ করে শুরু হল তার ঈমানী পরীক্ষা। তার সহায়-সম্পদ, পরিবার-পরিজন, শরীর ও প্রাণ মহাসংকটের আবেষ্টনীতে পতিত হল। অর্থবিও ধ্বংস হল, স্বজন পরিজনের মৃত্যু ঘটল এবং দেহ কঠিন রোগে আক্রান্ত হল এ ধরনের মহা দুর্দশায় আপতিত হয়েও তার কোনো অভিযোগ নেই, অনুযোগ নেই; বরং তিনি সবর ও ধৈর্যের সঙ্গে আল্লাহ পাকের নিকট শুধু অবস্থা পেশ করে বললেন, “শয়তান তো আমাকে যন্ত্রনা ও কষ্টে ফেলেছে।”-সূরা সাদ ৪১। যেহেতু মন্দ কাজ কোনো না কোনোভাবে শয়তানের প্ররোচনার প্রতিফলন, তাই আইয়ুব আ. তার কষ্ট ও যন্ত্রনার জন্য শয়তানকে দায়ী করেছেন অথবা অসুস্থতার সময় শয়তান তার ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চেষ্টা করলে তিনি মানসিক কষ্ট পান এবং আল্লাহ তাআলার নিকট এই দুআ করেন। তারপর হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম নিজের অবস্থা প্রকাশের জন্য অতি উচ্চাঙ্গের ও অলঙ্কারমন্ডিত বর্ণনা ভঙ্গি গ্রহণ করে প্রর্থনা করেন, “আমি দুঃখকষ্টে পড়েছি, আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ট দয়ালু।” সূরা আম্বিয়া-৮৩। আল্লাহ পাক হযরত আইয়ূব আলাইহিস সালামের দুআ কবুল করেন। তার যে বিওবৈভব ও সন্তান-সন্তনি ধ্বংস হয়ে ছিল, আল্লাহ পাক তার দ্বিগুন তাকে দান করেন। আর তার সুস্থতার জন্য একটি প্রসবণ প্রবাহিত করেন, যার সুশীতল পানিতে গোসল করে এবং পানি পান করে তিনি সুস্থ হন।

হযরত ইউনুস আ.-এর প্রার্থনা ঃ হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম দীর্ঘদিন মানুষকে তাওহীদের দাওয়াত দিতে থাকেন। তার সম্প্রদায় সত্যের আহ্বানে কোনোরূপ কর্ণপাত করেনি; বরং অহমিকা ও ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে আল্লাহ পাকের নাফরমানীতে লিপ্ত থাকে। আর অতীত যুগের সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদাযেল মত সত্য দ্বীনের আহ্বানকারী পয়গম্বরের সঙ্গে ঠাট্টাতামাশা করতে থাকে। হযরত ইউনুস আ. আপন সম্প্রদায়ের লাগাতার শত্রু তা ও বিরোধিতায় খুবই দুঃখিত হন। এক পর্যায়ে তিনি তাদের প্রতি বদ দুআ করে তাদের কাছ থেকে অন্যত্র রওয়ানা হন। তিনি নিজ অঞ্চল ইরাকের নিনাব থেকে বের হয়ে ফুরাত নদীর তীরে পৌছেন। এখানে এসে তিনি লোক বোঝাই জাহাজে আরোহণ করেন। নদীতে কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর বিক্ষুদ্ধ ঝঞ্ঝায় জাহাজ নিমজ্জিত হওয়ার উপক্রম হয়। জাহাজের চালকগণ বললেন, মনে হয় নৌযানে কোনো পলাতক গোলাম রয়েছে। তাকে আমাদের পৃথক না করা হলে আমাদের থেকে পৃথক না করা হলে আমাদের রক্ষা পাওয়া মুশকিল হবে। হযরত ইউনুস আ. ভাবলেন, ওহীর অপেক্ষা ব্যতীত নিনাব থেকে আমার চলে আসা আল্লাহ পাক পছন্দ করেননি। তিনি সকলকে বললেন, আমিই আমার মনিবের কাছ থেকে অনুমতি ব্যতীত পলায়ন করে চলে এসেছি। সুতরাং আমাকে নদীতে নিক্ষেপ করে দিন। কিন্তু কেউ তাঁকে ফেলতে সাহস করল না। শেষে লটারী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হল। লটারীতে তার নামই আসল। সঙ্গে সঙ্গে হযরত ইউনুস আ. নদীতে ঝাঁপ দিলেন। তখনই তাঁকে এক বিরাট মাছ গলাধঃকরণ করল। আল্লাহ পাক মাছকে হুকুম দিলেন, ইউনুস তোমার খাদ্য নয়; তোমার উদর তার কায়েদখানা মাত্র। হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম আল্লাহর অভিমুখে অথৈ জলরাশির গভীল অন্ধকার তলদেশে মাছের পেটের অন্ধকার হৃদয়বিগলিত আর্তনাদসহ দয়াময় পরম দয়ালু, সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী ও একমাত্র আশ্রয়স্থল মহান রবের নিকট সকরুণ প্রার্থনা করেন। “আপনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই, আপনি পবিত্র, মহান। নিশ্চয়ই আমি নিজের প্রতি অত্যাচারী।”- সূরা আম্বিয়া ৮৭। আল্লাহ আরহামুর রাহিমীন হযরত ইউনুসের এই দরদভরা প্রার্থনা কবুল করেন। তিনি মাছকে হুকুম করেন, ইউনুস তোমার নিকট আমার আমানত, তাকে উগলে দাও। মাছ নদীর কিনারায় গিয়ে কিনারায় গিয়ে তাঁকে উগলে দিল। হযরত ইউনুস আ. আল্লাহ্ পাকর অনুগ্রহে কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা পান। এই দু’আ সম্পর্কে হযরত রাসূল সাল্লাল্লা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহপাকের একটি নাম হলে তিনি জওয়াব দেন যার দ্বারা প্রার্থনা করা হলে তিনি দান করেন। তা হল ইউনুছ ইবনে মাত্তা দুআ।

হযরত যাকারিয়া (আ:)-এর দু‘আঃ হযরত ঈসা আ.-এর মাতা হযতরত মারাইয়াম আলাইহি সালাম কৈশোরকালে বাইতুল মুকাদ্দাসের একটি কুঠরিতে আল্লাহ পাকের ইবাদত বন্দেগী করতেন। তৎকালীন নবী হযরত যাকারিয়অ আলাইহিস সালাম ছিলেন হযরত মারইয়ামের খালু। তিনি যখন হযরত মারইয়ামের হুজরাতে প্রবেশ করতেন, তখনই তার নিকট বে-মওসুম ফল দেখতে পেতেন। এতে তিনি বিস্মিত অভিভূত হন। একদিন জিজ্ঞাসা করলেন, হে মারাইয়াম তোমার নিকট এসব ফল কোথা থেকে আসে? উত্তরে মারইয়াম বললেন, এগুলো আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে আসে। আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দিয়ে থাকেন। হযরত জাকারিয়া আ. নিঃসন্তান ছিলেন। তখন তার বয়স সাতাত্তর বছর। এবং তার স্ত্রী বন্ধ্যা। তিনি সন্তান হওয়ার ব্যাপারে নিরাশ ছিলেন। কিন্তু হযরত মারইয়ামের নিকট অকালে ফল দেখে তার হৃদয়ে উদ্দপিনা সৃষ্টি হল যে, যে ম;হান সত্তা অকালে ফল পঠাতে পারেন তিনি আমার প্রতিও দয়াপরবশ হয়ে আমাকে বার্ধক্যে সন্তান দান করতে পারেন। যে সন্তান আমার অবর্তমানে দ্বীনী দাওয়াতের খেদমত আঞ্জাম দেবে। তখন তিনি আল্লাহ পাকের নিকট সবিনয় নিবেদন করেন, “হে আমার প্রতিপালক, আমার অস্থিদুর্বল হয়ে গেছে, বার্ধক্যে আমার মস্তক শুভ্রোজ্জ্বল হয়েছে। হে আমার প্রতিপালক, আপনাকে আহ্বান করে আমি কখনও ব্যর্থকাম হইনি। আমি আশঙ্কা করছি আমার পর আমার স্বগোত্রীয়দের সম্পর্কে; আমার স্ত্রী বন্ধ্যা; সুতরাং আপনার নিকট থেকে আমাকে দান করুন উত্তরাধিকারী, যে আমার উত্তরাধিকারীত্ব করবে এবং উত্তরাধিকারীত্ব করবে ইয়াকুবের বংশের। হে আমার প্রতিপালক, তাকে করুন সন্তোষভাজন।”-সূরা মারইয়াম-৪-৬। হযরত যাকারিয়ার নিকট সন্তানের দৌলত থেকে বঞ্চিত থাকা কোনো দুঃখের বা চিন্তার কারণ ছিল না; বরং তিনি নবুওয়াত ও দ্বীনী শিক্ষার উত্তরাধিকারীত্বের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এজন্য তিনি অতিশয় বিনয়াবনত হয়ে প্রার্থনা করেছেন, “ হে আমার রব,আমাকে নিঃসন্তান রাখবেন না। আপনি তো চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।” সূরা: আম্বিয়া-৮৯। কখনও তার হৃদয়ের গহীন অতল কন্দর থেকে উথলে ওঠে করুণ আর্তি- “হে আমার প্রতিপালক, আমাকে আপনার নিকট থেকে সৎ বংশধর দান করুন। আপনিই প্রার্থনা শ্রবণকারী।”-সূরা আলে ইমরান ৩৮। আল্লাহ পাকের মনোনীত একজন নবীর সকাতর প্রার্থনা, প্রার্থনা নিজের জন্য নয়; বরং সমাজ ও জাতির পথ প্রদর্শন ও কল্যাণচিন্তায়, সঙ্গে সঙ্গে কবুল হল। হযরত যাকারিয়া আ. ইবাদতে মশগুল ছিলেন। এমন সময় ফেরেশতার অবিভার্ব ঘটল। ফেরেশতা সুসংবাদ দিলেন, আপনার একজন পুত্রসন্তান জন্মলাভ করবে, আপনি তার নাম ইয়াহইয়া রাখবেন। একথা শুনে হযরত যাকারিয়া (আ:) সীমাহীন আনন্দিত হন। উপর উল্লেখিত আল কুরআনে আম্বিয়া (আ:)-এর বর্ণিত বিশেষ দু’আ আলোচনার আলোকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন।-আমিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আল কোরআন

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৭ মার্চ, ২০২১
৮ অক্টোবর, ২০২০
২০ মার্চ, ২০২০
১৩ মার্চ, ২০২০
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ