নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শক্তিশালী ফিলিস্তিনকে হারাতে মরিয়া স্বাগতিক বাংলাদেশ। কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আজ মুখোমুখী হচ্ছে দু’দল। বেলা আড়াইটায় শুরু হবে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার শেষ চারের দ্বিতীয় ম্যাচটি। এর আগে টুর্নামেন্টের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে তাজিকিস্তান। গতকাল অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিফাইনালে তারা ২-০ গোলে সহজেই হারায় ফিলিপাইনকে।
টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শক্ত প্রতিপক্ষের মোকাবেলাই করছে লাল-সবুজরা। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৯৩ ধাপ এগিয়ে ফিলিস্তিন। তাই প্রতিপক্ষকে শক্তিশালীই মেনে নিচ্ছে লাল-সবুজরা। ম্যাচকে সামনে রেখে গতকাল কক্সবাজারের বিজিবি গ্রাউন্ডে অনুশীলন সারে বাংলাদেশ দল। শেষ মূহূর্তের অনুশীলনে স্বাগতিক ফুটবলাররা ছিলেন খুবই মনযোগী। আগের দিন অনুশীলনে যাওয়ার পথে বাংলাদেশ দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তাৎক্ষনিক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে আশার কথা এই যে, সেখানে ইসিজিসহ বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পুরোপুরি সুস্থ অনুভব করলে কাল ছেড়ে দেয়া হয় বাংলাদেশ কোচকে। ফলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই দলের সঙ্গে যোগ দেন জেমি। অনুশীলনে ফুটবলারদের টিপসও দেন। জেমি জানান, ফিলিস্তিনের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের। তিনি বলেন,‘আমি অবশ্যই জয় আশা করছি। আমার ধারণা ছেলেরা তা পারবে। দলের অবস্থা এখন খুবই ভালো। ফুটবলাররা সেমিতে উঠে বেশ উজ্জীবিত আছে। নিজেদের সেরাটা কাল (আজ) মাঠে ঢেলে দিতে পারলে জয় নিয়েই তারা ফিরতে পারবে। দলের সব খেলোয়াড় সুস্থ আছে। এবং আমার ধারণা তারা ভালো খেলতে মুখিয়ে রয়েছে।’ ফিলিস্তিনকে নিয়ে বাংলাদেশ কোচ বলেন,‘দলটি বেশ শক্তিশালী। তাদের এমন ক’জন খেলোয়াড় আছে, যারা যে কোন সময় ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। এটা মানতেই হবে- ওদের বিপক্ষে আমার ছেলেদের কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে। তাদেরকে হারানো কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।’
এদিকে বর্তমান জাতীয় দলের ফুটবলারদের মধ্যে চারজন কক্সবাজারের সন্তান। এরা হলেন- ফরোয়ার্ড সবুজ, মিডফিল্ডার ইব্রাহিম, ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। এখানকার সন্তান হিসেবে ১০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসমপন্ন জেলা স্টেডিয়ামটি তাদের খুবই চেনা। তাই প্রতিপক্ষ ফিলিস্তিনকে শক্তিশালী মেনে নিয়ে নিজেদের মাঠে সবুজ-ইব্রাহিমরা ভালো খেলতে মুখিয়ে আছেন। তারা সেরাটা দিয়েই জয় তুলে আনতে চান। ২০১০ সালে মহিলাদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর এই প্রথম রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক কোন ম্যাচ হচ্ছে। পুরুষদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ এই প্রথম। তাই এখানে আলো ছড়াতে প্রস্তুত ফরোয়ার্ড সবুজ। তার কথায়,‘মাঠে বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের লোকজন আসবে। এটা আমার জন্য চাপ নয়, বেশি অনুপ্রেরণা। চাপ না নিয়ে নিজের সেরাটা দিয়ে খেলার চেষ্টা করবো। নিজে গোল করতে না পারলেও দল জিতলেই খুশি হবো। ফরোয়ার্ড হিসেবে আমাকে গোল করতে হবে এটা ঠিক আছে, কিন্তু আমিই গোল করবো এভাবে কখনো ভাবি না।’
ইব্রাহিমের লক্ষ্যও একই। তিনি ভালো পারফরমেন্স করে ‘লোকাল হিরে’ হতে চান। যেমনটা হয়েছে সিলেটে লাওস ম্যাচে বিপলু। ইব্রাহিম বলেন, ‘ভালো খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়-স্বজন মাঠে আসবে। যে সুযোগই পাই, তা কাজে লাগিয়ে জিতে ফাইনালে খেলতে চাই। সিলেটে বিপলু নায়ক হয়েছে, এখানে আমি হতে চাই। আমি দেশের মানুষকে, কক্সবাজারবাসীকে হতাশ করতে চাই না।’ টুর্নামেন্টে প্রতিপক্ষ হিসেবে লাওসের চেয়ে ফিলিস্তিন অনেক বেশী শক্তিশালী। ‘এ’ গ্রæপে তারা তাজিকিস্তান ও নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই শেষ চারে এসেছে। আর বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে লাওসকে ১-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে একই ব্যবধানে ফিলিপাইনারে কাছে হেরে ‘বি’ গ্রæপ রানার্সআপ হয়ে সেমিতে পা রাখে। ফিলিপাইনের বিপক্ষে হার থেকে অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন বাংলাদেশ ফরোয়ার্ড সবুজ। দেখছেন ফিলিস্তিনের বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন। আর মিডফিল্ডার ইব্রাহিমের আশা ফিলিস্তিনের বিপক্ষে অঘটন ঘটানো।
এদিকে গতকাল বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে তাজিকিস্তান ২-০ গোলে ফিলিপাইনকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা পায়। ফিলিপাইনের বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসে এটা প্রথম জয় তাজিকিস্তানের। ফিফার পরিসংখ্যানে দুই দলের প্রথম খেলাটি গোলশূন্য ড্র হওয়ার পর টানা তিন ম্যাচ ফিলিপাইনের বিপেক্ষে হেরেছিল তাজিকিস্তান। পঞ্চম ম্যাচে এসে দারুণ জয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে উঠঠে গেছে দলটি। ম্যাচে তাজিকিস্তানের পক্ষে তুরসুনোভ কমরন ও নাজারোভ আখতাম একটি করে গোল করেন। ১২ অক্টোবর ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।