পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্তমান সরকার বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য আদালতকে যেভাবে ব্যবহার করছে তার আরেকটি নগ্ন উদাহরণ আগামী ১০ অক্টোবরও হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দলটির নেতারা। ওই দিন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা- মামলার রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই মামলায় সরকার তার অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য তারেক রহমানসহ অন্য আসামীদের ফরমায়েসি রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করার সফল অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। গতকাল (সোমবার) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার পরপরই বিএনপি সরকার মামলা দায়ের করে এবং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচার কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করে। এই প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের অসহযোগিতা এবং তাদের কিছু ষড়যন্ত্রের কারণে তা শেষ করে আসা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে অবৈধ সরকারও যে চার্জশিট দাখিল করেছিল সেখানে বিএনপি এবং এর নেতাকর্মীকে যুক্ত করা হয়নি। ২০০৮ সালে চার্জশিট দাখিল করার পূর্বে মুফতি হান্নান যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল সেই স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারেক রহমান কিংবা ওই সময়ের প্রশাসনের কোন কর্মকর্তার নাম বলেনি। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুফতি হান্নানকে দ্বিতীয় দফা দীর্ঘদিন রিমান্ডে রেখে নির্যাতন করে তথাকথিত দ্বিতীয় স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। মওদুদ জানান, মুফতি হান্নানের কাছে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়ার পরও তিনি আদালতে তা প্রত্যাহার করে নেন। তা সত্তে¡ও আওয়ামী লীগ সরকার তাদের স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করার জন্য আব্দুল কাহার আকন্দের মতো একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা যাকে বিএনপির সময় অবসরে পাঠানো হয়েছিল তাকে অবৈধভাবে চাকরিতে ফিরিয়ে এনে তাকে দিয়ে মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিয়ে তাকে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক নির্বাচনে মনোনয়নের আশ্বাস দিয়ে সরকারের কুৎসিত রূপের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে রায়ের আগেই বলা হচ্ছে কি রায় হবে এতে আশ্চার্যান্বিত হয়ে বিএনপির এই প্রবীণ আইনজীবী বলেন, এ মামলায় তারেক রহমানসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা এবং তৎকালীন প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে যেভাবে জড়ানো হয়েছে তা যে কোন দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি এক নির্লজ্জ বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর মতো। এ ধরণের ষড়যন্ত্রমূলক বিচার প্রক্রিয়া একমাত্র নৈরাজ্যবাদী সরকারের পক্ষে সম্ভব। দেশের বিচার ব্যবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপের চিত্র তুলে ধরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা, ন্যায় বিচারের ধারণা এবং বিচারকদের উপর ক্ষমতাসীন দলের নগ্ন হস্তক্ষেপের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেশে-বিদেশে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তারেক রহমানকে ২১ আগস্ট হামলার মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। এর প্রমাণ হলো মুফতি হান্নানের প্রথম স্বীকারোক্তিতে এবং চার্জ শিটেও তারেক রহমানের নাম ছিল না। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুফতি হান্নানের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতনের ফলে দ্বিতীয়বারের তথাকথিত স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর নেয়া হয়। যেটি আইন অনুযায়ি করা যায় না। যদিও পরের দিনই এটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা সরকারের একেবারে নিজস্ব মানুষ। তিনি বেআইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারেক রহমানের নাম অন্তর্ভূক্ত করেছেন।
এড. খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ২০০৭ সালের চার্জশিটে তারেক রহমানসহ পরবর্তি পর্যায়ে যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের কারো নাম ছিল না। ৬১ জনের জেরা করা হয়েছে তাদের একজনও তারেক রহমান বা বিএনপির কোন নেতার নাম বলেনি। হঠাৎ করে অহি নাজিল হলো মামলাটি পুনঃতদন্তে যাবে এবং লোক ঠিক করা হলো বিতর্কিত তদন্ত কর্মকর্তা। যিনি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীতা চেয়ে নিজ এলাকায় পোস্টার টানিয়েছিলেন। তিনি তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে এসে মুফতি হান্নান যে স্বীকারোক্তি দিয়েছিল তা প্রত্যাহার করে চার বছর পরে আবার তাকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়া হলো।
ওই মামলার এই আইনজীবী বলেন, মুফতি হান্নানের প্রথম জবানবন্দিতে তারেক রহমানসহ বিএনপির কোন নেতার নাম ছিল না। পরবর্তিতে তারেক রহমানসহ বিএনপির চারজন নেতার নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। উনি আদালতে লিখিতভাবে তার সেই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করেছেন এবং হাত দেখিয়ে বলেন, আমার হাতের নকগুলো তুলে ফেলা হয়েছে। এটা আমার স্বীকারোক্তি না, জোর করে আমার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। এই মামলায় ২২৫জন সাক্ষি সাক্ষি দিয়েছে কিন্তু একজনও বলেনি যে, তারেক রহমানসহ বিএনপির কোন নেতা জড়িত।
তিনি বলেন, আইন অনুযায়ি, কোন আসামি স্বীকারোক্তি দিলে শুধু তার বেলায় সেটি প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ, ভারত, ভারতীয় উপমহাদেশ কিংবা পৃথিবীর কোন দেশে এমন কোন আইন নাই যে, যদি কোন সাক্ষি কারো নাম না বলে তাহলে একজন আসামির স্বীকারোক্তি দিয়ে অন্য একজনকে আসামি করে সাজা দেয়া যায়। এছাড়া কোন আসামিকে তার অভিযোগের বিষয়ে আদালতে বক্তব্য দিতে দেয়া হয়। কিন্তু মুফতি হান্নাকে সেটা করতে দেয়া হয়নি। হঠাৎ করে তাড়াহুড়া করে তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। যেটা অত্যন্ত রহস্যজনক।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ড. শাহিদা রফিক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।