যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
সারা বিশ্বে খুব জনপ্রিয় একটি খাবার পেঁপে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, সি এবং কে। পাশাপাশি রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন ক্যারোটিন এবং প্রাকৃতিক আঁশ। পেঁপে গাছের প্রত্যেকটি অংশেই কিছু না কিছু ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে। এত গুণেভরা যে পেঁপে তার বিচিগুলো কিন্তু ফেলনা নয়। যদি জানতেন এর মধ্যে কত স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তবে নিশ্চয়ই ফেলতেন না।
যদিও এর স্বাদ এবং গন্ধ একটু তীব্র। তবুও এর বিচিতে বা বিজে কিন্তু রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যগুণ। পেঁপের বিচি ফেনোয়েলিক এবং ফ্লেবোনয়েড উপাদানে ভরপুর। এতে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস।
তাই পেঁপে খাওয়ার সময় এর বিচিও খেতে পারেন। এ ছাড়া সালাদ ইত্যাদিতে পেঁপের বিচি ব্যবহার করা যায়। তবে গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে কিংবা পেঁপের বিচি খাওয়া ঠিক হবে না। শুধুমাত্র গাছপাকা পেঁপেই এই সময় খাওয়া যায়। আসুন আমরা জেনে নিই পেঁপের বিচির কিছু গুণের কথা।
হৃদরোগ প্রতিরোধ : নিয়মিত পেঁপের বিচি খেল হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই এবং শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। শরীরের বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
হজমের জন্য উপকারী : হজমের সমস্যা থাকলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন পেঁপের বিচি। বিচির মধ্যে থাকা পেপেইন হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, যকৃত ও পেট ভালো রাখে। বিচি শরীরের ভেতর প্রোটিন ফাইবারকে ভাঙ্গতে সাহায্য করে ও পরিপাক নালিকে পরিষ্কার রাখে। ফলে হজম প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত হয়। এতে পাকস্থলির উপর চাপ কম পড়ে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধেও সাহায়ক হয়।
লিভার সিরোসিসে পেঁপের বিচি : গবেষণায় দেখা গেছে, লিভার সিরোসিসে যারা ভুগছেন, তাদের জন্য পাকা পেঁপের বিচি মহৌষধ। রোজ এক চামচ করে পেঁপে বিচির গুঁড়া খান। লিভারকে ডিটক্সিফাই করবে। এর পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইলেও পরিবর্তন আনতে হবে। পানি ও দইয়ের সঙ্গে পেঁপের বিচির জুস নিয়মিত পান করলে যকৃত ভালো থাকে।
ক্যানসার প্রতিরোধ : ক্যানসারকে দূরে রাখতে নিয়মিত পেঁপে ও পেঁপের বিচি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপে ও এর বিচিতে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট আইসোথিয়োসায়ানেট, যা স্তন, প্রস্টেট, ফুসফুস ও কোলনকে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। এটি অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পেঁপের বীচিতে উপকারি গ্লকোট্রোপিওলিন থাকে যা শরীরে বিপাকের মাধ্যমে শক্তিশালী ক্যান্সার বিরোধী উপাদান আইসোথায়োসায়ানেট উৎপন্ন করে।
দৃষ্টি শক্তি ভাল করে : পেঁপে ও পেঁপের বিচি খোলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ, সি, ই এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কারণে এটি চোখের জন্য ভালো। এটি রেটিনাকে সুরক্ষা দেয়। এ ছাড়া ছানি এবং গ্লুকোমা প্রতিরোধে কাজ করে।
আরথ্রাইটিস : পেঁপের ও এর বিচির মধ্যে রয়েছে প্রদাহরোধী উপাদান। এটি আরথ্রাইটিসের ব্যথা প্রতিরোধ করে এবং প্রদাহ কমাতে কাজ করে।
ডেঙ্গু জ্বর : ডেঙ্গু প্রতিরোধে পেঁপের বিচির তুলনা নেই। ডেঙ্গু জ্বর হলে প্লেটেলেট কমতে শুরু করে। এসময় নিয়মিত পেঁপের পাতা ও বিচি খেলে প্লেটেলেট স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে আসে।
ক্ষতিকর জীবাণুনাশক : পেঁপের বিচি প্রচুর প্রোটিওলাইটিক উৎসেচক। এই এনজ্ইম. পেপেইন দেহের ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করতে বা পরজীবীর (প্যারাসাইট) সংক্রমণ প্রতিরোধে এর জুড়ি নেই।
চুলের য়ত্ম : শুষ্ক চুল এবং খুসকির সমস্যায় ভোগেন অনেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত পেঁপে বিচি খেলে চুল ঘন হয় এবং খুসকি দূর হয়।
ত্বকের যত্ম : তেলতেলে ত্বক এবং ব্রণের সমস্যা দূর করতে পেঁপে বিচি দিয়ে বানিয়ে ফেলুন ঘরোয়া মিশ্রণ। পেঁপে বিচি এবং পাতা বেটে ফেস প্যাক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। ত্বকের হারানো ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসবে। দেহের ত্বক মসৃণ ও সতেজ রাখতে পেঁপে ও পেঁপের এই বিচি খুব উপকারী।
পিরিয়ডের ব্যথা : এটি সম্পূর্ণ উপশমের কোনো উপায় নেই। তবে কিছু জিনিস মেনে চললে ব্যথা অনেক বশে থাকবে। পিরিয়ড চলার সময় পেঁপে বিচির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান। ব্যথা অনেক কম হবে।
ক্রিমি ধ্বংস করে : পেঁপের বীচিতে থাকা এন্থেলমিন্টিক উপক্ষার কারপেইন পরজীবী ক্রিমি ও অ্যামিবা ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
পেঁপের অনেক গুণাগুণের কথা আমরা জানি। সেটা কাঁচা হোক বা পাকা। কিন্তু পাকা পেঁপের বীজেরও যে গুণ আছে তা আমাদের অনেকেরই অজানা। লিভার, কিডনি, হজমশক্তি এই সব কিছুতেই পেঁপের বিচি উপকারী। তাই এখন থেকে পাকা পেঁপের বীজ আর ফেলবেন না। সূত্র : স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট টপটেন হোম রেমিডিস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।