Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাশ্মিরে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড বন্ধে ভারতকে ওআইসির আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৮, ৮:২৭ পিএম | আপডেট : ১২:১৪ এএম, ৪ অক্টোবর, ২০১৮

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি'র মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমাদ আল আসিমিন কাশ্মিরি জনগণের ওপর হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও তাদের অধিকার রক্ষার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ভারতকে অবশ্যই আলোচনার মাধ্যমে ও জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মির সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং ওই এলাকার জনগণের দাবির প্রতি সম্মান জানাতে হবে। ওআইসি মহাসচিব ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব কাশ্মিরে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানান। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব এবং দীর্ঘ দিনের সংকট নিরসনের জন্য ওআইসি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে কাশ্মিরের জনগণ আশা করছে।
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে কাশ্মিরের মালিকানা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। কাশ্মির সংকট বিশ্বের অন্যতম একটি পুরাতন সংকট যা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের জনগণের দুর্দশার কারণ। ১৯৪৮ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর কাশ্মির সংকট নিরসনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাশ হয়। প্রস্তাবে গণভোট অনুষ্ঠানের কথা বলা হয় যাতে ওই এলাকার জনগণ তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে। কিন্তু ভারত আজ পর্যন্ত জাতিসংঘের এ প্রস্তাব বাস্তবায়নতো করেনি বরং ওই এলাকাকে তারা ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে এবং এ নিয়ে আলোচনায় বসতেও তারা রাজি নয়।
কাবুল বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইয়্যেদ রহমতুল্লাহ নাসেরি বলেছেন, “ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের জনগণের ওপর পুলিশের হত্যা নির্যাতন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনকারী ওই এলাকার মানুষের ওপর যে বিপর্যয় নেমে এসেছে এবং হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে তা কোনো বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারে না।”
পাকিস্তান মনে করে কাশ্মির সংকট ভারতের সঙ্গে তাদের বিরোধের প্রধান কারণ। সুতরাং যতদিন পর্যন্ত ভারত এ সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ না নেবে ততদিন পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তাহীনতা ও সংকট অব্যাহত থাকবে। যদিও ভারত সরকার কেবল কাশ্মিরের বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে আলোচনার কথা বলে আসছে এবং তা অবশ্যই হতে হবে ভারতের সংবিধান অনুযায়ী। কিন্তু কাশ্মিরের কোনো গ্রুপ দিল্লির এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয়। তাদের মতে, সংবিধান অনুযায়ী সংলাপের অর্থই হচ্ছে ভারতের আধিপত্য মেনে নেয়া।
ভারতের নিরাপত্তা বিষয়ক বিশ্লেষক প্রকাশ মালিক মনে করেন, “সেদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উচিত কাশ্মিরি জনগণের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা এবং বিরাজমান ভুল বোঝাবুঝি ও সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেয়া।" তিনি বলেন, "কাশ্মির সংকট নিরসনে কেবল সেনাবাহিনীর ওপর ভরসা করা নয়া দিল্লীর উচিত হবে না। কারণ কেবল সেনাবাহিনী দিয়ে কাশ্মির সংকট সমাধান ও সেখানকার জনগণের অসন্তোষ দূর করা সম্ভব নয়। তাই রাজনৈতিক সংলাপের উদ্যোগ নিতে হবে।”
যাইহোক, ওআইসি হচ্ছে মুসলিম দেশগুলোর সবচেয়ে বড় জোট বা সংস্থা। এ কারণে কাশ্মির সংকট নিরসনে ওআইসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে কাশ্মিরের জনগণ আশা করছে। ভারত কাশ্মির সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সংস্থা বা কোনো দেশের অংশগ্রহণের বিরোধী। কিন্তু পাকিস্তান কাশ্মির সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সমাজের অংশগ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছে যাতে সংকট নিরসনে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়। এ অবস্থায় কাশ্মির সংকট নিরসনে ওআইসি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। সূত্র : গালফ নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মির


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ