পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে অনেকটা নিস্তেজ ও গৃহবন্দী ছিল জাল নোটের কারবারীরা। বারবার জায়গা বদল এমনকি রাজধানীর অদূরে গিয়েও নিরাপত্তা বাহিনীর নজর এড়াতে পারছিল না চক্রের সদস্যরা। অনেকটা অন্তরালে থেকেই উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছিল জাল নোট। অথচ হটাৎ করে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে আত্মগোপনে থাকা জাল নোট কারবারীরা। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তুরাগের বাউনিয়া থেকে শীর্ষ জাল নোট উৎপাদনকারী আবুল হোসেন ইমনসহ চক্রের ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। ডিবি জানায়, আসন্ন নির্বাচন ও দুর্গা পূজাকে টার্গেট করে প্রতিমাসে ৪ কোটি টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল চক্রটির।
ডিবি সূত্র জানায়, ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে তুরাগ থানাধীন ৮ নং ওয়ার্ডের বাউনিয়ার বাদালদী রোডের বি বøকের ২ নম্বর লেনের ১৬ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবি উত্তর বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিম। ওই বাড়ির ৬ষ্ঠ তলা থেকে চক্রের মূল হোতাসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
টিমের নেতৃত্বে থাকা ডিবি উত্তর বিভাগের সহকারি পুলিশ কমিশনার (এসি) সুমন কান্তি চৌধুরী বলেন, ওই বাসা থেকে চক্রের মূল হোতা আবুল হোসেন ওরফে ইমনসহ (৩৫) ৬ জাল নোট কারবারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যরা হলো- শেখ সুমন (৩২), ছগির হোসেন ওরফে শাহীন (৪২), ইকবাল হোসেন (৩২), স্বপ্না (১৯) ও তৌকির আহম্মেদ ওরফে সুজন (৩০)। এ সময় বাসা থেকে ৫১ লাখ টাকা মূল্যের জাল নোট, দুটি কালার প্রিন্টার, টাকা তৈরির বিভিন্ন কাগজ, জাল নোটে ব্যবহৃত ফয়েল পেপার ও ২৯ হাজার ৮শ’ টাকার আসল নোটসহ জাল নোট তৈরিতে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ পণ্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই চক্রে কয়েকজন তরুণীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
ডিবি সূত্র জানায়, জাল নোটের কারবারীরা মূলত বড় কোন উৎসব বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে টার্গেট করে তৎপরতা বৃদ্ধি করে। সামনে জাতীয় নির্বাচন ও দুর্গা পূজা রয়েছে। এ সময়ে অর্থের চাহিদা ও সরবরাহ বাড়বে অনেক বেশি। যার কারণে চক্রটি নির্বাচন ও দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে প্রতিমাসে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। সে জন্য বেতনভিত্তিক লোকজনও নিয়োগ দিয়ে পুরোপুরি উৎপাদন শুরু করে তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ডিবির কাছে এ সব কথা স্বীকার করেছে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, চক্রের হোতা ইমনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে। প্রায় এক যুগ আগে সে কাওছার নামে একজনের সাথে জাল টাকা তৈরিতে সহযোগি হিসেবে কাজ শুরু করে। পরে ২০১৩ সাল থেকে জাল নোট তৈরির সরঞ্জামাদি কিনে নিজেই জাল নোট তৈরি ও বাজারজাত শুরু করে। ডিবি জানায়, ইমনই বর্তমান সময়ের দেশের সর্বোচ্চ জাল নোট উৎপাদনকারী। এর আগেও জাল নোট তৈরির অপরাধে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। প্রতিমাসে নিজস্ব ডিলারদের মাধ্যমে প্রায় এক কোটি টাকার জাল নোট বাজারজাত করতো সে।
ডিবির সূত্র জানায়, ইমন ওই জাল নোট কারখানার মালিক। সে ও তার সহযোগীরা প্রথমে অভাবী ও অস্বচ্ছল লোকদেরকে লোভ দেখিয়ে টার্গেট করতো। পরে তাদেরকে দিয়ে উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল টাকা তৈরি ও ব্যবসা করে করতো। সূত্র আরও জানায়, জাল নোট স্থানন্তরে মূলত সুন্দরী তরুণীদের ব্যবহার করা হতো। প্রত্যেক তরুণীর শরীরের সাথে ডিভাইস লাগানো থাকতো। তাদের কথোপোকথনে সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করতো। জাল নোট হস্তান্তর হওয়ার আগ পর্যন্ত কোন বিপদ বা ঝামেলা হয় কিনা সেটি মনিটরিং করতে এই ডিভাইস লাগানো থাকতো।
সূত্র আরও জানায়, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সুমন ও স্বপ্না জাল নোট তৈরির কারিগর। আর নোট সরবরাহের কাজ করত ছগির ও স্বপ্না। এ ছাড়া পল্টন এলাকার ব্যবসায়ী সুজন জাল নোট তৈরির কাগজ ও কালি সরবরাহ করত। উদ্ধারকৃত সরঞ্জামাদি দিয়ে তাদের আরো প্রায় ৭ কোটি টাকা মূল্যের জাল নোট তৈরির পরিকল্পনা ছিল বলে জানা গেছে।
ডিবি সূত্র জানায়, প্রথম ধাপে এক লাখ জাল নোট তৈরিতে চক্রটির খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় ধাপে পাইকারি বিক্রেতার কাছে তা বিক্রি হয় ১৪-১৫ হাজার টাকায়। পাইকারি বিক্রেতা প্রথম খুচরা বিক্রেতার কাছে ২০-২৫ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় খুচরা বিক্রেতার কাছে তা ৪০-৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। পরবর্তীতে মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সময় আসল টাকার সাথে এইসব জাল নোট মিলিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।