Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাউদকান্দিতে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালের ছড়াছড়ি

চলছে চিকিৎসাবাণিজ্য

দাউদকান্দিতে (কুমিল্লা) থেকে সেলিম আহমেদ : | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ১৮টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ৩২টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে বলে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জালাল হোসেন জানিয়েছেন ।
তবে দাউদকান্দি উপজেলা সরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫০টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে মাত্র তিনটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে লাইসেন্স রয়েছে এবং সাতটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এ ছাড়া ৪০টি হাসপাতালে ছয়টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, এ সমস্ত হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অভিজ্ঞ সার্জারি, গাইনি, অ্যানেসথেসিস্ট ডাক্তার না থাকার কারণে ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতের মৃত্যু হচ্ছে। এর আগে দাউদকান্দির গৌরীপুর লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী খাদিজা আক্তারের (২২) সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এ সময় পেটে একটি সন্তান পেটে রেখেই পেট সেলাই করে দেন হাসপাতালের ডাক্তার। শেষ পর্যন্ত এ ঘটনাটি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। এ ছাড়া গৌরীপুর খিদমা হসপিটাল ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যু রংধনু হসপিটালে প্রসূতির মৃত্যু হয়। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অপচিকিৎসা দিয়েই চলছে বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও প্যাথলজি। এ ছাড়া নিবন্ধন ওই হাসপাতালেগুলোতে যদি অনুমোদন থাকে ১০ শয্যা বেড সেখানে রাখে ১৫ শয্যা। হাতুড়ে নার্স দিয়ে সেবা করা হয় রোগীদের। ভাড়া করা ডাক্তার দিয়ে চলে এ সব বেসরকারি হাসপাতাল। সার্বক্ষণিক এমবিবিএস ডাক্তারের বদলে থাকেন ম্যানেজার মালিক। অ্যানেসথেসিস্ট (অজ্ঞান করা ডাক্তার) ছাড়াই করা হয় বিভিন্ন রেীগের অপারেশন। এলাকাবাসীর প্রশ, ৫০টি হাসপাতল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে মাত্র তিনটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বৈধভাবে চিকিৎসা ব্যবসা করে যাচ্ছে। বাকি ৪৭টি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার যে রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছে তাতে এলাকাবাসীর নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে শাপলা হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ইনকিলাবকে জানান, সরকার হাসপাতাল নবায়ন করা বন্ধ করে দিয়েছিল তবে বর্তমানে নবায়ন করা শুরু হয়েছে। কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও দাউদকান্দি পৌরসভার প্যানেল মেয়র রকিব উদ্দিন বলেন, সরকারের নিয়মনীতি অনুযায়ী হাসপাতাল চলা দরকার, কারণ বেসরকারি হাসপাতালে অ্যানেসথেসিস্ট ডাক্তার এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকার কারণে মা-শিশু মারা যাচ্ছে। কুমিল্লার সিভিল সার্জন মজিবুর রহমান ইনকিলাবকে জানান, বেসরকারি হাসপাতালের নবায়ন বন্ধ ছিল। তবে বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদফতর অন লাইনে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নবায়ন করার জন্য ঘোষণা করেছে। তিনি আরো জানান, যে সমস্ত হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে লাইসেন্সর ত্রুটি রয়েছে, ওই হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রত্যেক উপজেলায় টিএসওকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দাউদকান্দি উপজেলা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জালাল হোসেন জানান, বেসরকারি হাসপাতল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোনো মৃত্যুর ঘটনা বা লাইসেন্সে ত্রুটি দেখা গেলে কুমিল্লা সিভিল সার্জনের নির্দেশ মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, তালিকার বাইরেও একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে।



 

Show all comments
  • বলতে অনিচ্ছুক ৬ জুলাই, ২০২১, ৪:২৫ পিএম says : 0
    ডাঃ জালাল তো আরও বড় বাটপার
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাসপাতাল

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ