Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিজ দেশের মানুষ হত্যা করেছে মিয়ানমার

স্বাধীন রাষ্ট্র মানে নিজের দেশের মানুষকে হত্যার স্বাধীনতা নয়, অপরাধ ঢাকতে চাইছেন সু চি : মাহাথির

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, স্বাধীন রাষ্ট্র মানে নিজের দেশের মানুষকে হত্যার স্বাধীনতা নয়। মিয়ানমার তার নিজের দেশের লোকদের হত্যা করেছে। রোহিঙ্গা সঙ্কটের জন্য মিয়ানমার সরকার সরাসরি দায়ী। শুক্রবার জাতিসঙ্ঘে সাধারণ পরিষদে ৭৩তম অধিবেশনের চতুর্থ দিনে ভাষণ দানকালে মিয়ানমারের সমালোচনা করতে গিয়ে একথা বলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির সমালোচনা করেন মাহাথির। বিশ্বের প্রবীণতম এ প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, শান্তিতে নোবলজয়ী সু চি রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান সেনা বর্বরতা ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেননি। বরং এখন পুরো বিষয়টি তিনি নানাভাবে আড়াল করতে চাইছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিলে এবং ইসরাইলি নৃশংসতা থামানো গেলেই কেবল সন্ত্রাসবাদ বন্ধের সুযোগ তৈরি হবে। মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেকড় চিহ্নিত করে তা উপড়ে ফেলে হৃদয় ও মন জয় করা না গেলে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলমান এই যুদ্ধ শেষ হবে না। এই যুদ্ধের শেকড় কোথায়? ১৯৪৮ সালে, ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনে ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল। ফিলিস্তিনিরা হত্যাযজ্ঞের শিকার এবং তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। ফিলিস্তিনিরা সহানুভূতিশীল প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় প্রচলিত ধারায় লড়াই করতে চেয়েছিল। কিন্তু ইসরাইলের মিত্র রাষ্ট্রগুলো নিশ্চিত করে তা যেন ব্যর্থ হয়। ফিলিস্তিনিদের ভূমি আরও বেশি দখল করা হয়। বর্তমান বিশ্বের অবস্থা শোচনীয় উল্লেখ করে ৯৩ বছর বয়সী মাহাথির বলেন, বিশ্বের অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ। অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে যায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। মাহাথির বলেন, মিয়ানমার সরকারের কর্মকাণ্ডে দেশটিতে প্রাণহানি, বাড়িঘর ধ্বংস করে দেওয়া এবং নিজ দেশের মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু দেশটির নেত্রী অং সান সু চি এসব অস্বীকার করছেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ রাখাইনের সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘ এরইমধ্যে নিধনযজ্ঞের আলামত সংগ্রহ শুরু করেছে। তবে এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। মাহাথির বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের হত্যা করা হচ্ছে। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১০ লাখ শরণার্থী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। গভীর সমুদ্রে ডুবে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। বেঁচে থাকা লোকজনের ঠাঁই হয়েছে খাবার, পানি কিংবা স্যানিটেশনের সুবিধাবিহীন অস্থায়ী শিবিরে। তারপরও নোবেলজীয় অং সান সু চি’সহ দেশটির কর্তৃপক্ষ সেখানকার পরিস্থিতি অস্বীকার করছে।› চ্যানেল নিউজ এশিয়া, রয়টার্স, বারনামা।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:১৮ পিএম says : 0
    Khoub shondor shusposhto boktobbo diasen eai 93 botshor boyoshi neta mr.mahateer mohammod.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ