পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি ড. কর্নেল (অব) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, মুসলমান হিসেবে প্রত্যেককে কৃতকর্মের জন্য আল্লাহ’র কাছে জবাবদিহি করতে হবে। ৯০ বছর বয়সকে ৮০ বছর বানানো যায় না। পবিত্র কোরআনে রয়েছে সকলকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। পরকালে ছেলে-মেয়ে কেউ আপনার কর্মের জবাবদিহি করতে যাবেন না। অতএব হারাম-হালাল, ন্যায়-অন্যায়, বিচার-অবিচার সবকিছু বিবেচনা করে কর্ম করা উচিত। দেশের জনগণের ভোটের অধিকার, আইনের শাসন নেই। খুন, গুম, হত্যা, অন্যায়-অবিচারে ভরে গেছে দেশ। মুক্তিযুদ্ধ করেছি জনগণের ভোটের অধিকারের জন্য; সেই জনগণ ভোট দিতে পারে না। এখন দিনে নয় ভোট হয়ে যায় রাতে। ভোটারের বদলে ব্যালটে সিল মারে পুলিশ। এ অবস্থায় দায়িত্বশীল রাজনীতিকদের প্রত্যেকের উচিত জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ত্যাগ স্বীকার করা।
গতকাল এক যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মালয়েশিয়ার মাহথির মোহাম্মদ ৯২ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি পরিচ্ছন্ন-দুর্নীতি মুক্ত মানুষ। কিন্তু আমরা যারা এদেশে রাজনীতি করি তারা কেউ ছেলের কাছে বিক্রী হই, কেউ মেয়ের স্বার্থ দেখে নীতি আদর্শের কথা ভুলে যাই। আপনি ছেলের কথায় রাজনীতি করবেন না। আপনার ছেলে (মাহী বি চৌধুরী) ভিওআইপি ব্যবসা করে, আওয়ামী লীগের কাছে ব্যবসা নিয়েছে। আল্লাহ সামর্থ দিয়েছে; ছেলের কথা না শুনে মানুষের উপকার হয় সে কাজ করুন। শুধু বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য কেন জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সবাইকে এক কাতারে দাঁড়াতে হবে।
রাজধানীর তেজগাঁওস্থ দলীয় কার্যালয়ে এই যোগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় বক্তৃতা করেন দলের মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদ, কেন্দ্রীয় নেতা শাহাদত হোসেন সেলিম, মেহেদী হাসান মাহবুব প্রমুখ। মোঃ সিদ্দিকী, মোঃ কাউসার, মোঃ এনামূল এলডিপিতে যোগদান করেন।
ড. অলি আহমদ বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ দল হিসেবে বিএনপি জাতীয়তাবাদের প্রতীক। বিপুল জনসমর্থিত দলটির পক্ষ্যে সবকিছুই সম্ভব। নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে তারপরও বলবো এখন ভোট নিয়ে কথা বলার সময় নয়। সবার আগে চাই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। তাঁর মুক্তির পর ভোট নিয়ে কথাবার্তা হবে। সবার বোঝা উচিত দেশে আইনের শাসন নেই, জনগণের ভোটের অধিকার নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে না। সে কারণে মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়ার মতো বরেণ্য নেত্রীকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে। সুশাসন থাকলে তিনি অনেক আগেই বের হয়ে আসতেন। কাজেই সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যা করা দরকার তাই করতে হবে। দেশে চলছে ক্ষমতাসীনদের অহংকারের রাজনীতি। দাম্ভিকতা পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে হবে। ভোটের অধিকার, সামাজিক ন্যায় বিচার, আইনের শাসন অপরিহার্য। শুধু উন্নয়ন দিয়ে রাজনীতি-গণতন্ত্র হয় না। দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে এটা মাথায় রেখেই এগিয়ে যেতে হবে। সরকার আমলা নির্ভর হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র সচিব জাতিসংঘে গিয়ে বলে দিলেন বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় দেখতে চায়। জনগণের ট্রাক্সের টাকায় বেতনভুক্ত একজন সরকারি কর্মচারীর এমন বক্তব্য চাকরিবিধি লংঘন। তিনি কী রাজনীতি করেন? সরকার তার বিরুদ্ধে কি শাস্তির ব্যবস্থায় নেয় সেটাই দেখার বিষয়। প্রধানমন্ত্রীকে বলবো এই সচিবের মত মতলববাজ-চাটুকার-চামচাদের সঙ্গে রাখবেন না। তিনি আরো বলেন, চীরদিন কেউ ক্ষমতায় থাকে না। যারা এটা বিশ্বাস করবে না তারা কাফের। যদি এই অবস্থায় সংকট সমাধান না করে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে না দিয়ে ক্ষমতা থেকে আওয়ামী লীগ বিদায় নেন; তখন জনগণ তাদের কুকুরের মতো পিটিয়ে মারবে। মানুষের কর্মই তার ভাগ্য নির্ধারক করে দেয়। এটা কোরআন-হাদিসের কথা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে এই সরকার এমন নিবর্তনমূলক আইন করতো না। এখনো সময় রয়েছে সম্পাদকদের সঙ্গে বসে তাদের মতামত নিয়ে আইন সংশোধন করুন। অংশিজনদের মতামতের গুরুত্ব দেন। তা না হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে গেলে তাদের বিরুদ্ধেও এই আইন ব্যবহার হবে; কী পরিণতি হবে ভাবছেন? আইন হবে জনগণের জন্য; কাউকে শাস্তির জন্য নয়।
২০ দলীয় জোট, যুক্তফ্রন্ট, ঐক্য প্রক্রিয়ার রাজনীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোটে আছি। দেশের সব দলই যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে অসুবিধা কি? জোটে যত লোক নেয়া যায় নেন। তবে আমি কাউকে নেতা বানানোর রাজনীতি করবো না। জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দল ও জনগণের বৃহৎ ঐক্য অপরিহার্য। ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন এসেছিলেন; তাঁকে সে কথাই বলেছি।
জামায়াতের নাম উল্লেখ না করলেও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বীর বিক্রম খেতার পাওয়া এই নেতা বলেন, বি চৌধুরী যখন ক্ষমতাসীন বিএনপির মহাসচিব ছিলেন তখন মুসলিম লীগ নেতা শাহ আজিজ প্রধানমন্ত্রী, জয়পুরহাটের আবদুল আলীম রেলমন্ত্রী ছিলেন। বি চৌধুরী যখন বিএনপির শাসনামলে প্রেসিডেন্ট তখন জামায়াতের মতিউর রহমান নিযামী, আলী আহসান মুজাহিদ মন্ত্রীত্ব করেন। ওই সময় আমি মন্ত্রিত্ব করিনি। মাংস হালাল, মাংসের ঝোল হারাম এটা কেমন কথা? এদেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। জনগণের কাছে যান তারাই রায় দিয়ে দেবে। সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করা উচিত দাবি করে বলেন, র্যাব-পুলিশ চুনোপুঁটি মাদক ব্যবসায়ীদের ক্রস ফায়ারে মারছে। যারা রাঘব বোয়াল তাদের স্পর্শ করছে না। কারণ ওদের কাছে টাকার বাটোয়ারা তারাও পায়। অতএব টুনোপুটি নয়; রাঘব বোয়ালদের ধরুন। দেশের ব্যাংকের টাকা উধাও। ব্যাংকের টাকা যারা লুট করছে তারা মাদক ব্যবসায়ীদের চেয়েও ভয়ঙ্কর; এদের ক্রস ফায়ারে দিন। ড. রেদোয়ান আহমদ বলেন, বেগম জিয়ার নেতৃত্বে চার দলীয় জোটে জামায়াত ছিল। জেনে শুনে আমরা ১৮ দলীয় জোটে গেছি। পরে হলো ২০ দল। মাহী বি চৌধুরী বিভিন্ন এজেন্সির ফরমাস খাটেন ও সরকারের সুবিধাভোগী হওয়ায় হঠাৎ জামায়াত ইস্যু তুলেছেন। বি চৌধুরী ও মাহীরা যদি জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বৃহত্তর জোটের বিরোধিতা করতেই থাকেন তাহলে তারাই আস্তাকূঁেড়র নিক্ষিপ্ত হবেন। বিএনপি ও জোটের কোনো ক্ষতি করতে পারবেন না। জামায়াত ইস্যু নয়; এখন চলছে জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।