Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চৌহালি রক্ষা বাঁধে ধস নিঃস্ব ১৮ পরিবার

সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

আশা নিয়ে বাঁধের পাড়ে বাড়ি করেছিলাম সব হারিয়ে। যা ছিল সব শেষ হয়ে গেল। এখন আমাদের আর কিছু রইলো না। বাঁধটির নিম্নমানের কাজ ও তদারকি যথাযথ না হওয়ায় ধসে গেল। আমরাও সব খোয়ালাম। আমরা ১৮টি পরিবার পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ। ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া সিরাজগঞ্জের চৌহালীর বৃদ্ধা আখলিমা খাতুন, সরবেশ আলী, দোকানী আবু সাইদ ও আনোয়ার হোসেনের কণ্ঠে এমন করুণ চিত্র ফুটে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত চৌহালীতে তীর সংরক্ষণ বাঁধে হঠাৎ ধস নেমেছে। যমুনার পানি কমতে থাকায় স্রোতে পশ্চিম জোতপাড়া অংশে বিলীন হয়েছে প্রায় ৫শ মিটার এলাকা। মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন হয়ে ১৮টি পরিবারের বসতি ও ঘরবাড়ি। এ ধসের বিস্তৃতি ঠেকাতে তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তীরবর্তী সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র এবং এলাকাবাসি জানায়, চৌহালী উপজেলা সদরের পৌনে ৪ কিলোমিটার এবং টাঙ্গাইলের সোয়া ৩ কিলোমিটার মিলে ৭ কিলোমিটার এলাকা যমুনা হাত থেকে রক্ষায় এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ১২২ কোটি টাকার কাজ ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু করে তা গতবছর শেষ হয়। এতে রক্ষা পায় নদীর পুর্ব পাড়ের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সরাতৈল থেকে দক্ষিণে নাগরপুর উপজেলার পুকুরিয়া, শাহজানীর খগেনের ঘাট, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ঘোরজানের চেকির মোড়, আজিমুদ্দি মোড়, খাসকাউলিয়া, জোতপাড়া পর্যন্ত।
তবে নদীর পানি কমতে থাকায় রাতে হঠাৎ প্রচন্ড স্রোতে বাঁধের পশ্চিম জোতপাড়া অংশে ভাঙন দেখা দেয়। যা গতকাল ভোর পর্যন্ত প্রায় ৫শ মিটার ধসে যাওয়ায় বাঁধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয় পাথরের বোল্ড ও জিও টেক্স। বিলীন হয় এর পাড়ের ১৮টি ঘরবাড়ি। কোন রকমে তীরে উঠে জীবন রক্ষা করে অন্তত ৫০ জন মানুষ। অসহায় এসব মানুষের আর্তনাদে ছড়িয়ে পড়ে শোকের ছায়া ও আতঙ্ক। তারা অভিযোগ করেছেন নিম্নমানের কাজ ও রক্ষণাবেক্ষণে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ায় বাঁধটি ধসে পড়েছে।
এদিকে ভাঙনের খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত আনিসুর রহমান। তিনি অসহায় মানুষদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পাশে থাকার কথা জানিয়ে বলেন, আমরা সকল পরিবারকে আপাতত খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছি। পরে এদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এছাড়া বাঁধের তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত টাঙ্গাইল পাউবো ভাঙনের বিস্তৃতি ঠেকাতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছে যদি ধস ঠেকাতে কোন পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে বাধ আরো বিপর্যয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জানান, আমরা বিষয়টি শুনেছি এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাঁধ

৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৭ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ