Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনাবাহিনীর ইন্ধনেই রোহিঙ্গা নিধন

মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটস’র গোপন ভিডিও প্রকাশ, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারে আন্তর্জাতিক প্যানেল তৈরি, ৩ দেশের বিরোধিতা

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের রোহিঙ্গাদের উপর চালানো জাতিগত নিধনযজ্ঞের পেছনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটস। এ দাবির পেছনে প্রমাণ হিসেবে সংস্থাটি বৃহ¯পতিবার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা নিধনের পূর্বে এ ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে দেখা যায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একজন সদস্য রাখাইনের স্থানীয় বাসিন্দাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে কেন ও কীভাবে এ অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করা হবে। এ থেকে স্পষ্ট হয় যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করে আসছিল দেশটির সেনাবাহিনী। প্রকাশিত মূল ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ৮ মিনিটেরও অধিক। সেখানে একজন সেনাসদস্যকে স্থানীয়দের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে উস্কে দিতে দেখা যায়। ওই সদস্য বলতে থাকে, রোহিঙ্গারা আস্তে আস্তে রাখাইন এবং পর্যায়ক্রমে সমগ্র মিয়ানমার দখল করে নেবে। তাদের উচ্চ জন্মহারকে দেশের জন্য হুমকি বলেন তিনি। এ ভিডিও ফুটেজে থাকা প্রমাণের ভিত্তিতে ফোর্টিফাই রাইটসের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই দ্রুততার সঙ্গে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যেভাবেই হোক রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রমাণ সংগ্রহ করে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচার নিশ্চিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনর্থক নিষ্ক্রিয়তার কোনো কারণ নেই। মিয়ানমারের বর্তমান অবস্থা যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উত্থাপন করা প্রয়োজন। অপরদিকে, মিয়ানমারের রাখাইনে জুলুম-নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের বিচার পাওয়ার পথ তৈরির প্রক্রিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক প্যানেল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে মিয়ানমারে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করার পর মানবাধিকার কাউন্সিলের এ সিদ্ধান্ত এল। বৃহস্পতিবার জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশনে ভোটাভুটির মাধ্যমে এই প্যানেল তৈরির প্রস্তাব পাস হয়। ৪৭ সদস্যের এই কমিশনে প্রস্তাবের পক্ষে ৩৫ এবং বিপক্ষে তিন ভোট পড়ে। সাত সদস্য দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসির আনা ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ভোট দেয় কেবল মিয়ানমারের চীন, ফিলিপিন্স ও বুরুন্ডি। আন্তর্জাতিক এই প্যানেল রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চালানো গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি করতে মামলার নথি তৈরির কাজও এই প্যানেল এগিয়ে নেবে। রয়টার্স, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ