পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাতাসের গতি বদলাচ্ছে। শরৎ ঋতু বিদায়ের পথে, দরজায় কড়া নাড়ছে হেমন্ত। সেই সাথে নির্বাচনমুখী রাজনীতিতে লেগেছে নতুন হাওয়া। বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে রাজনীতির মাঠে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ নিয়ে ঘরে-বাইরে চলছে সরব আলোচনা। জাতীয় পর্যায়ের নামিদামি সুপরিচিত ও প্রবীণ রাজনীতিবিদগণ গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক মঞ্চে সমবেত হন। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে তারা ৫ দফা এবং ৯টি লক্ষ্য ঘোষণা করে বড় ধরনের ঐক্যের সূচনা করেন।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ঢেউ এসে পড়েছে চট্টগ্রামেও। আবার ওইদিনই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামে সড়ক পথযাত্রা কর্মসূচি ও একাধিক পথসভা করে গেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া সূচনার ফলে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আগের সব হিসাব-নিকাশ এখন বদলে যেতে শুরু করেছে। চাটগাঁর ঝানু রাজনৈতিক পন্ডিতরাও ভাবছেন নতুন করে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সিনিয়র-জুনিয়র নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। দলের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রেখে মাঠ দখলে রাখতে দলীয় বৈঠক, সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিচ্ছেন। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের দিকে সজাগ ও কৌতূহলী দৃষ্টি চট্টগ্রাম বিএনপি এবং আওয়ামী লীগেরও।
২৯ তারিখের পরই দুই প্রধান দল চট্টগ্রামে যার যার কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এখন তার মহড়া শুরু হয়ে গেছে। মাঠ দখলে রাখতে চায় উভয় পক্ষ। আবার দুই দিকের জোট-মহাজোটও আগের তুলনায় তৎপর হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ সারাদেশে রাজনীতির অঙ্গন দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সার্বিক পরিস্থিতি কেমন হবে? প্রাণবন্ত থাকবে নাকি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে তা নিয়ে সর্বস্তরের সাধারণ জনগণের মাঝে আশা-নিরাশার দোলাচলে ঘুরপাক খাচ্ছে নানান প্রশ্ন। জনমনে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত মঙ্গলবার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আগামী ৮ অক্টোবর লালদীঘি ময়দানে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আগামী ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার তারিখকে ঘিরে ৮ থেকে ১১ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি দল। এর আগে আগামীকাল ২৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ এবং র্যালি বের করা হবে।
তাছাড়া চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আগামী সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে সরব থাকতে চায়। এর পাশাপাশি জেলা, নগর, উপজেলা, থানা, ওয়ার্ড পর্যায়ের মূল দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের ভেতরে বিরাজমান সাংগঠনিক বিরোধ-গ্রুপিং মিটমাট করার চেষ্টা চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। এর পাশাপাশি ১৪ দলকে সক্রিয় করে তোলার চেষ্টাও চলছে।
অন্যদিকে বিএনপি বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আরো চাঙ্গা করে চায় ঘুরে দাঁড়াতে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন জানান, চট্টগ্রাম বিএনপির ঘাঁটি। জনসমর্থনে সবসময়ই বিএনপি অনেক এগিয়ে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মিথ্যা অভিযোগে অসংখ্য গায়েবী মামলা, হুলিয়া ও বিভিন্ন অপকৌশলে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। তবে এখন কর্মীরা অনেক বেশী উজ্জীবিত। বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রতি সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া দেখা যাচ্ছে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমাবেশ থেকে যে কর্মসূচি ও নিদের্শনা আসবে সেই অনুসারে চট্টগ্রামে জোরালো কর্মসূচি দেয়া হবে। বিএনপি আন্দোলন এবং নির্বাচন উভয় প্রস্তুতি নিয়েই অগ্রসর হচ্ছে। জনগণের দাবি বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করেই সুষ্ঠু নির্বাচন। শিগগিরই বড় ধরনের কর্মসূচি নিয়ে দল মাঠে তৎপর থাকবে বলে জানান তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা নেতারা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন।
এদিকে সরকার এবং বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষের পাল্টাপাল্টি মাঠের কর্মসূচিকে ঘিরে আগামীতে নির্বাচনী রাজনীতি সরব এবং প্রাণবন্ত থাকুক তা রাজনীতি সচেতন সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা। তবে পরিস্থিতি দিন দিন উত্তেজনা এবং মারমুখী অবস্থানের দিকে গড়াচ্ছে কিনা এ নিয়ে মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। দোকান-পাটে, বৈঠক-মজলিসে, অফিস পাড়ায়, আলাপে-আড্ডায় সর্বত্রই ঘুরেফিরে উঠে আসছে নির্বাচনী রাজনীতির নানা দিক। ইতোমধ্যে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের’ সূচনা সাধারণ মানুষ নির্বাচনমুখী রাজনীতির গতিপথে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন।
ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতৃবৃন্দ একাদশ সংসদ নির্বাচনকে অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য করতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন বিষয়ে যেসব দাবি-দাওয়া এবং বক্তব্য দিচ্ছেন তা সচেতন মানুষকে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে। এখানে-সেখানে এ বিষয়গুলো আলোচনা-পর্যালোচনায় উঠে আসছে প্রতিদিনই।
আবার বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য ‘শেষ পর্যন্ত টিকবে না’ এবং ‘দুনীতিবাজরা এক হয়ে ষড়যন্ত্র করছেন’ মর্মে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতৃবৃন্দের দেওয়া মন্তব্য ও বক্তব্যগুলো সাধারণ মানুষ যার যার আঙিকে বিশ্লেষণ করছেন।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সাথে আলাপকালে তারা বলেছেন, নির্বাচনী রাজনীতিতে সরকারি এবং সরকারবিরোধী দুই পক্ষই সমানভাবে তৎপর থাকুক তা সবাই চান। তবে মাঠ দখলের রাজনীতির নামে মারমুখী কর্মসূচি, সংঘাত-হানাহানির মাধ্যমে ঘোলাটে পরিস্থিতি কারোই কাম্য নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।