বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে বার্ষিক এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি জানায়, ঘূর্ণিঝড়কে শস্য ক্ষতির সবচেয়ে বড় হুমকি বিবেচনা করেছে তারা। এছাড়া খরা ও বন্যার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গত সপ্তাহে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মূলত উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় বেশি হয়। এতে করে সমুদ্রের পানির লবণাক্ততা মিঠা পানিতে জমা হচ্ছে। ফলে বিশুদ্ধ পানির অভাবে খাদ্য উৎপাদন অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। স্টেট অব ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হয় সেখানে মানুষ পুষ্টিহীনতায় বেশি ভোগে। এছাড়া যেসব দেশের জনসংখ্যার বিশাল অংশ কৃষিক্ষেত্রের ওপর নির্ভরশীল সেসব দেশেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পুষ্টিহীনতা দেখা যায়। খরার মতো দুর্যোগকেই আগে শুধু শস্য ধ্বংসের দুর্যোগ মনে করা হতো। কিন্তু অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টিকে কখনোই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার আঘাতে বাংলাদেশে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। এতে করে দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূল চাষাবাদের অনুপোযুক্ত হয়ে পড়েছিলো। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে ধান উৎপাদন কম হলে প্রায়ই চালের দাম বেড়ে যায়। এফএও-র প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে লবণাক্ত পানি উপকূল পেরিয়ে আসে। হঠাৎ বন্যার কারণে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়, বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গাছ। সবকিছু একইসাথে হতে পারে।
তারা জানায়, বিরূপ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষিব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত এবং সবাই অন্য কোথাও জীবিকার খোঁজ করতে পারে। দেখা দিতে পারে অনাহার ও মৃত্যুরও। ২০১৪ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিশ্বে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ১ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। সংস্থাটি জানায়, বেশিরভাগই ঘর ছাড়তে বাধ্য হয় মূলত হঠাৎ ঝড়ে। কখনও কখনও স্থায়ীভাবে অঞ্চল ছাড়তে হয় তাদের। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্যান্ত অঞ্চলের ২২ শতাংশ মানুষ জলোচ্ছ¡াসের শিকার হয়। আর ১৬ শতাংশ মানুষ নদীভাঙনের শিকার। এই মানুষগুলোই জীবিকা ও নিরাপত্তার কারণে শহরমুখী হচ্ছে। বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইতোমধ্যে শস্য উৎপাদনের হার কমে গেছে। বিশেষ করে গম ও চাল। জলবায়ু পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এটি আর ভয়াবহ রুপ ধারণ করতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত কয়েকবছরে শস্য উৎপাদন হয়েছে এমন অঞ্চলে উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং শস্য উৎপাদনের হার হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিপাতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে যেসব স্থানে বৃষ্টিপাত হতো এখন তেমনটা নেই।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি একটি পৃথক প্রতিবেদনে,বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৯৪০ জন মানুষ বসবাস করে। আর মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষ যেখানে বসবাস করে তারা সবাই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৫ মিটার উঁচুতে রয়েছেন। ফলে এই মানুষেরা বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, লবণ পানি ও নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বাংলাদেশের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ মানুষ প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।