পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরামসহ ডান-বাম ও মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি মিলে গড়ে তুলেছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। ঐক্য প্রক্রিয়ার মঞ্চ থেকে বিএনপির দাবিগুলোই সবার মুখে মুখে উচ্চারিত হওয়ায় আশার আলো দেখছেন তারা। কেবল নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিই নয়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদেরও মুক্তি চেয়েছেন জাতীয় নেতারা। এতে বিএনপি নেতারা মনে করেন, দলটি দীর্ঘদিন ধরে যে দাবিগুলো জানিয়ে আসছে তা এখন ক্ষমতাসীনদের বাইরে সবার দাবিতে পরিণত হওয়ায় এখন জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। দাবি আদায়ে গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলো একই মঞ্চে ওঠায় এবং রাজপথে নামার ঘোষণা দেয়ায় এবার সরকারের পতন হবেই।
যদিও এই ঐক্যকে সাম্প্রদায়িক ও তাদের হ্যাডম নাই বলে মনে করেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে জাতীয় ঐক্যের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরে আসবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এই ঐক্য সফল হবেই জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের শক্তি বড় শক্তি। এই শক্তি কখনো ব্যর্থ হয় না, সফল হবেই। জনগণের শক্তির কাছে বন্দুকের নল কোন কাজে আসবে না। অতীতে যতবারই জাতীয় ঐক্য হয়েছে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দেশের মানুষকে নিয়ে জাতীয় নেতৃবৃন্দ আন্দোলনে নেমেছে প্রতিবারই সেই আন্দোলন সফল হয়েছে এবং স্বৈরাচার ও অগণতান্ত্রিক সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই ঐক্যের আহ্বান করে আসছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির সিনিয়র নেতারা। কারাবন্দি হওয়ার আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে দলের নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি দেশের সকল গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও সংগঠনকে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। ৭ ফেব্রæয়ারি কারাবন্দি হওয়ার আগের দিনও এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একই আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর থেকেই দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আহ্বান এবং সকল দলের সাথে আলোচনা চালিয়ে যান। যার সর্বশেষ ফলাফল দেখা যায় গত শনিবার রাজধানীর নাট্যমঞ্চে। যেখান থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে এই ঐক্য প্রক্রিয়া। যেখানে সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি একই মঞ্চে ওঠেন। ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার।
এককভাবে ও ২০ দলীয় জোটের মাধ্যমে দেশ গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে সরকারের হামলা, মামলা, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী। সভা-সমাবেশ করতে এসে আটক এবং ভূতুড়ে মামলায় ঘরবাড়ি ছাড়াও হয়েছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। এমন অবস্থায় জাতীয় ঐক্য ছাড়া এককভাবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্পও দেখছিলেন না বিএনপি নেতারা। অবশেষে সেই পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া এখন সফলতা দেখছেন দলটির নেতারা। এই ঐক্যের সফলতার ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করে বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলেন, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে বৃহত্তর আন্দোলনের ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির ভিত্তিতে দেশের জনগণের একটা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠতে যাচ্ছে। যে আন্দোলনের মুখে সরকারের শুধু পদত্যাগ নয়, লজ্জাজনক পরাজয় হবে। তারা মনে করেন এই ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সূচনা হয়ে গেল। কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যাবে। শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে, গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জাতীয় ঐক্যকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, আমি নিশ্চিত, এ জাতীয় ঐক্য আগামী দিনে জাতিকে মুক্তির সনদ এনে দেবে। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং সফল হয়েছে। আর স্বৈরাচার পরাজিত হয়েছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাশা পূরণে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের দিকে তাকিয়ে আছে।
ঐক্য নিয়ে একইরকম আশাবাদী বুদ্ধিজীবীরাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, যাদেরকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হয়েছে তারা সবাই সর্বজন গ্রহণযোগ্য। বিশেষ করে এই ঐক্যে ড. কামাল হোসেন এবং ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী থাকায় জোটের কর্মসূচি সফল হবে বলে আশাবাদী তিনি। এই জোটে এখন যারা আছেন তাদের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঐক্য মাঠের আন্দোলনের মাধ্যমেই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করে নেবে বলেও মনে করেন তিনি।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানান, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না এবং দেশে যে গণতন্ত্রের লেশ মাত্র নেই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি বলে আসছে। ওই নির্বাচন বর্জন যে বিএনপির পক্ষে যৌক্তিক ছিল তা পরবর্তী সব নির্বাচনেই সরকার ও নির্বাচন কমিশন প্রমাণ দিয়েছে। এজন্য বেগম খালেদা জিয়া শুরু থেকেই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার, সংসদ ভেঙে দেয়া, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছিল। এজন্য জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিল বিএনপি। তাদের এই দাবির সাথে দেশের গণতন্ত্র প্রত্যাশি দল ও ব্যক্তিরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। সেটি এখন দৃশ্যমান। দেশের সর্বজন গ্রহণযোগ্য নেতারা রাস্তায় নামলে তাদের সাথে দেশের মানুষও এই সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণ ও কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানাবে এবং তাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। ফলে এই সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে বৃহত্তর আন্দোলনের ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। এটাকে সরকার ভয় পাচ্ছে। আগামী দিনে ইনশাআল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির ভিত্তিতে দেশের জনগণের একটা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠতে যাচ্ছে। যে আন্দোলনের মুখে সরকারের শুধু পদত্যাগ নয়, এই সরকারকে পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর ভাষায় লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে বলেন, এই ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সূচনা হয়ে গেল। কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যাবে। শেখ হাসিনার পতন হবে, গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসবে।
৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে দাবিগুলো রয়েছে তা মেনে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ঐক্যের নেতারা। তা না হলে আগামী ১ অক্টোবর থেকে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় ঐক্য। আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা না হলেও ঐক্য প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, প্রাথমিকভাবে জাতীয় ঐক্যের নেতারা রাজধানীসহ সারাদেশে সমাবেশ করবেন। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।