Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

হুমকিতে কক্সবাজারের জীববৈচিত্র্য

কক্সবাজার থেকে বিশেষ সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের চাপে হুমকির মুখে পড়েছে কক্সবাজারের জীববৈচিত্র ও পরিবেশ। বিষিয়ে উঠেছে এলাকার ২০ লাখ মানুষের জীবন। ইউএনডিপি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে ওই এলাকার পাহাড়গুলো প্রাকৃতির ভারসাম্য হারিয়ে ভূমি ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
টেকনাফ, উখিয়া ও হিমছড়ি এলাকার মোট ১৫০২ হেক্টর বনের মধ্যে প্রায় ৭৯৩ হেক্টর প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া ৩ থেকে ৪ হাজার একর পাহাড়ের সব গাছপালাও কেটে ফেলা হয়েছে। প্রতিবেদনে এই বৃক্ষনিধনের কিছু কারণও খুঁজে বের করা হয়েছে। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রতি মাসে ৬৮০০ টন জ্বালানি কাঠ প্রয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়া প্রত্যেক রোহিঙ্গা পরিবার তাদের অস্থায়ী বাসস্থানের জন্য গড়ে ৬০টি করে বাঁশ ব্যবহার করেছে।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে পরিবেশগত প্রভাব’ বিষয়ক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শরণার্থী শিবির এলাকায় হাজার হাজার গভীর নলকূপ ওই এলাকার পানিস্তরের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। গাড়ি চলাচল বাড়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের কাঠ পোড়ানোর কারণে সেখানকার বায়ু দূষণও অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া রিসাইক্লিং ব্যবস্থা না থাকায় সেখানকার অনেক স্থানেই পলিথিন ও প্লাস্টিকের বোতল জমা হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচিব আব্দুল্লাহ আল মহসীন চৌধুরী, প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ শফিউল আলম চৌধুরী, ইউএনডিপি কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মূখার্জী, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মহসীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকার মূলত মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে আশ্রয় দিয়েছিল। কিন্তু ১১ লাখ রোহিঙ্গা সেখানে আশ্রয় নেওয়ায় এখন সেখানকার পাহাড়ি জমি নষ্ট হচ্ছে। গাছ কেটে ফেলার কারণে পাহাড় ও পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। জীব-বৈচিত্র হুমকির মুখে। তিনি বলেন, অল্প জায়গায় অধিক মানুষ থাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং অগ্নি নিরাপত্তার অভাব দেখা দিয়েছে। পরিবেশগত ক্ষতি রোধ করতে তিনি এই এলাকায় বনজ ও ফলজ গাছ লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গার যেসব এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে, সেখানকার স্থানীয়রাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহকে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের জীবনমান উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহব্বান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৈচিত্র্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ