Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তদন্ত শুরু করেছে আইসিসি

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পাশবিকতা পরিমাপ করা কঠিন : ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলামদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। হেগের এই আদালতের কৌঁসুলি ফাতোও বেনসুদা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে যেভাবে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে, তাতে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না-সে বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে হাত দিয়েছে তার দপ্তর। রোহিঙ্গাদের বিতাড়নে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের বিচারের এখতিয়ার হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রয়েছে বলে সিদ্ধান্ত আসার ধারাবাহিকতায় এই তদন্ত শুরু হল। বিবিসির খবরে বলা হয়, আইসিসির এই তদন্তের পথ ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পথ খুলতে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করার সময় তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলো যুদ্ধাপরাধ নাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ তা খতিয়ে দেখা শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি’র আইনজীবী ফাতো বেনসুদা। মঙ্গলবার তিনি এই কথা জানিয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে। বেনসুদা বলেন, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করার ঘটনায় যুদ্ধাপরাধ হয়েছে নাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে তা নির্ধারণের জন্য প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে তার দফতর। অপর এক খবরে বলা হয়, গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংস অভিযান চালিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এক্ষেত্রে তাতমাদো (মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অফিশিয়াল নাম) যে পাশবিকতা ও নৃশংসতা ঘটিয়েছে, তা মাপকাঠিতে ‘পরিমাপ করা কঠিন’। এ গণহত্যার জন্য দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের চলমান অধিবেশনে প্রকাশ করা হয়। মিশনের প্রধান তদন্তকারী মারজুকি দারুসমান প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। ৪৪৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিতে রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর ওপর দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর চালানো মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সার্বিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে মারজুকি জানান, ‘তাতমাদো অভিযানের নৃশংসতার পরিমাপ করা কঠিন। এটি প্রকৃতপক্ষে বেসামরিক নাগরিক জীবনের প্রতি সম্পূর্ণরূপে অশ্রদ্ধা প্রদর্শন।’ মিয়ানমারের শাসন প্রক্রিয়া এবং সরকারের ওপরেও প্রভাব বিস্তার করে আসছে সেনাবাহিনী। দেশটির রাজনীতি থেকে তাদেরকে সরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সত্যানুসন্ধানী তদন্তকারীরা। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে দশকের পর দশক ধরে শাসন ক্ষমতায় প্রভাব বিস্তার করে আসছে সেনাবাহিনী। ২০১৫ সালে একটি নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আংশিক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও পার্লামেন্টের এক-চতুর্থাংশ আসন এখনও সেনা দখলে। মন্ত্রিসভার তিন সদস্যও সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা। নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকটি স্থাপনায় একযোগে হামলার পর গত বছর ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে সেনাবাহিনীর ওই দমন অভিযান শুরু হয়। সেইসঙ্গে শুরু হয় এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ