বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিসি ক্যামেরায় চোর ধরে, কিন্তু পুলিশ চোর শনাক্ত করতে পারে না। এমন ঘটনা ঘটছে ঝিনাইদহ শহরসহ বিভিন্ন দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে। এ সব প্রতিষ্ঠানে বসানো ৬ শাতাধিক সিসি ক্যামেরা থাকার পরও চুরিধারী হচ্ছে। চোরেদের মুখমন্ডল ও পোশাক পরিচ্ছদ দেখা যাচ্ছে স্পষ্টভাবে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের ও ভিডিও ফুটেজ জমা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সিসি ক্যামেরার আওতায় চুরি হওয়া কোন আসামীকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। তদন্ত কর্মকর্তাদের স্বদিচ্ছার অভাবেই আসামী গ্রেফতার হয়নি এমনটি মনে করেন ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররা। তবে দ্রুত আসামী গ্রেফতারের আশ্বাস দিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস।
এ আর অটো। ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়া জোড়া পুকুর এলাকায় অবস্থিত। গত ৫ জুন চুরি সংঘটিত হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে চোরেরা ট্রাকে করে দোকানের প্রায় ৮/১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে চম্পট দেয়। সিসি ক্যামেরায় স্পষ্ট দেখা যায়। কিন্তু ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও চোর ধরা পড়েনি। উদ্ধার হয়নি মালামাল। ঝিনাইদহ সদর থানা থেকে প্রায় ২ শ’ গজ দুরে প্রিয়ান্না ট্রেডার্সে চুরি হয় ৮ মাস আগে। এখানে সিসি ক্যামেরা থাকলেও ভোর সাড়ে ৫ টা থেকে সাড়ে ৬ টার মধ্যে ১৪ লাখ টাকার মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায় ৭/৮ জনের একদল চোর। সিসি ক্যামেরার স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ জমাসহ এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর দীর্ঘ ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও কোন আসামীকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শহরের শহীদ বীজ ভান্ডার, শামীমা ক্লিনিকের পাশে একটি টায়ার ও টাইলসের দোকানসহ একাধিক দোকান কিংবা বাসা বাড়িতে চুরি হলেও অদৃশ্য কারণে চোর শনাক্ত হচ্ছে না। সিসি ক্যামেরার আওতায় দিনে দুপুরে, রাতে কিংবা ভোরে ঘটে যাওয়া সকল চুরির ঘটনায় থানায় মামলা ও অভিযোগ দায়ের করা হয়, জমা দেয়া হয় ভিডিও ফুটেজ। কিন্তু গেল দুই বছরে ঝিনাইদহ শহরসহ জেলায় সিসি ক্যামেরার আওতায় ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনারই সমাধান হয়নি। এমনকি ঝিনাইদহ পৌর কার্যালয়ের একাধিক সিসি ক্যামেরার মধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটে। সেই চোরও ধরা পড়েনি। জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় অপরাধ দমনে পুলিশের পক্ষ থেকে ২০১৬ সাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে ৯ শতাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। এর মধ্যে ঝিনাইদহ শহরসহ সদর উপজেলায় বসানো হয় ৬ শতাধিক। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে বসানো অধিকাংশ সিসি ক্যামেরাই অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অনেক স্থান থেকে খুলে নিয়ে গেছে কে বা কারা। এছাড়া পুলিশের আহবানে সাড়া দিয়ে ব্যক্তিগতভাবেও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। কিন্তু কোনো কাজেই আসছে না এ উদ্যোগ। সিসি ক্যামেরা থাকা সত্তে¡ও বেড়েই চলেছে অপরাধমুলক কর্মকান্ড। জেলা পুলিশের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে জেলায় ৫৭ টি ও ২০১৮ সালের বর্তমান সময় পর্যন্ত ৫৪ টি চুরির ঘটনা ঘটে। ব্যবসায়ীরা জানান, সিসি ক্যামেরার আওতায় চুরির অন্তত একটা ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারত ও বিচারের মুখোমুখি করা গেলে সব চুরির রহস্য বের হতো। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ চেম্বার সভাপতি সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, খুবই দু:খজনক যে, কোনো ঘটনারই সমাধান হচ্ছে না। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, অপরাধ দমনে সিসি ক্যামেরা বসানো হলেও অস্পষ্ট ছবির কারণে অনেক সময় অপরাধীদের চেনা যায় না। আমরা স্বচেষ্ট আছি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য। প্রিয়ান্না ট্রেডার্স এর মালিক আব্দুস সাত্তার বলেন, আমার দোকানে চুরির পর সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ জমা দিয়েছি। কোন কাজ হয়নি। তিনি বলেন, চুরির পর পুলিশ একবার দেখতেও আসেনি। চোরই যদি ধরা না পড়ে তাহলে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে লাভ কি ? প্রশ্ন তোলেন তিনি। শহরের আরাপপুর এলাকায় খায়রুল কবীরের জুয়েনা স্টেশনারীর দোকানে দিনে দুপুরে চুরি হয়। গত ৪ আগষ্ট চোরেরা সব কিছু নিয়ে গেলেও কোন মালামাল উদ্ধার হয়নি। ঝিনাইদহ জুয়েলারী মালিক সমিতির সভাপতি পঞ্চরেশ পোদ্দার বলেন, শহর জুড়ে একের পর এক চুরির ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা বাড়ির নিরাপত্তা চাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।