বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোরের চৌগাছায় হতদরিদ্র হাসিনা বেগমের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পেরে ঘর ভেঙে নেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবাদত হোসেনের বিরুদ্ধে নারারয়ণপুর ইউনিয়নের বাদেখানপুর গ্রামের হতদরিদ্র হাসিনা বেগমের নির্মিত সরকারি ঘর ভেঙে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী হাসিনার স্বামী শওকত আলী বলেন, গত কোরবানির ঈদের পর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন তার ঘর ভেঙে নিয়েছেন ইউএনও। ঘর ভেঙ্গে নেয়ার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবাদত হোসেন বলেন, ঘর কেন ভেঙে নেয়া হয়েছে তা চেয়ারম্যান-মেম্বাররা বলতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পে যার জমি আছে ঘর নাই তার নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ উপ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ৫শ ৫১টি ঘর নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে যশোর জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ফুলসারা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে সুবিধাভোগীদের মধ্যে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেছেন। সরকারের দেয়া ঘর পাওয়া ব্যক্তিদের মাঝে যখন আনন্দের জোয়ার, সে সময় ঘর পেয়েও না পাওয়ার বেদনায় চরম হতাশায় হাসিনার পরিবার। জানা যায়, উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নে ৩৪ জন দরিদ্র ব্যক্তি ঘর পেয়েছেন, যার মধ্যে বাদেখাঁনপুর গ্রামের মৃত আনছার আলীর ছেলে ভ্যানচালক শওকত আলীর নাম রয়েছে। তালিকা অনুযায়ী তার ঘর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে, এমন মুহুর্তে সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বার বাবুল আক্তার ওই বাড়িতে গিয়ে বলেন, ঘর নির্মান বন্ধ। আপনাকে ঘর দেয়া যাবে না উপরের নিষেধ আছে। এই বলে তিনি মিস্ত্রি দিয়ে নির্মানাধীন ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যান।
সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে চার সদস্যের পরিবার জরাজীর্ণ একটি ঝুপড়ি ভাঙ্গা ঘরে থাকেন হাসিনা। শওকত আলীর স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন, আমার চাচাতো বোনের ছেলে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান হাবিব তৌহিদ আমাদের ১টি সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করে দেন। তিনি চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলে আমার স্বামী শওকত আলীর নামে ১টি ঘর বরাদ্দ দেন। তিনি বলেন, রোজার ঈদের দু’দিন পর ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়। এর কিছুদিন পর আমার ভাইপো নূর নবীর পাঁচ শতক জমি কম দামে কিনতে চায় তৌহিদ। কিন্তু অন্য ভাইপোরা ওই জমি বেশি দাম দিয়ে কিনে নেয়। তৌহিদ সন্দেহ করে, আমি নিষেধ করায় তাকে জমি দেয়নি আমার ভাইপোরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন, তোমার সরকারি ঘর ভেঙ্গে নেয়ার ব্যবস্থা করছি।
এ ব্যাপারে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবাদত হোসেন বলেন, ঘর কেন ভেঙে নেয়া হয়েছে তা চেয়ারম্যান-মেম্বাররা বলতে পারবেন। আমি কারও দ্বারা প্রভাবিত হইনি। তালিকায় ১৪ নম্বরে থাকা শওকত আলীর ঘর ভেঙে নেয়া হল। অথচ ইউপি সদস্য বাবুল আক্তার পেয়েছেন সরকারি এ ঘর। এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, জনপ্রতিনিধি গরিব হলে তো এ ঘর পাবেন। এতে আইনগত কোনো নিষেধ নেই।
এ ব্যপারে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান হাবিব তৌহিদ বলেন, আমার কথায় কি ঘর বরাদ্দ হয় ? আমার কথায় যদি সরকারি ঘর বরাদ্দ হয়, তাহলে তো চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে নামতে হবে। চৌগাছা ইউএনওর সঙ্গে আমার এ বিষয়ে কোনো কথাও হয়নি। তিনি বলেন, শওকত আলীর ২০ শতকের বেশি জমি রয়েছে তাই তার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়ার কথা নয়। তবে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শওকত আলীর নামে ১২ শতক ও তার স্ত্রীর নামে ৩ শতক মোট ১৫ শতক জমি রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।