পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অকাল বন্যার ঠিক মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছে যমুনা পাড়ের বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। পাউবো সূত্র জানায়, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বগুড়া, জামালপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। অন্যদিকে উজানের গঙ্গা নদীর পানিতে প্রবল স্রোতের তোড়ে পদ্মা নদীর পাড়ে ভাঙন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল (শুক্রবার) থেকে উজানের পানির ঢল আরো বেড়ে গিয়ে উত্তর-পূর্বে কলমাকান্দায় সোমেশ্বেরী নদী বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে।
মধ্যাঞ্চলের টাঙ্গাইলে ধলেশ্বরী নদীর পানিও ক্রমাগত বাড়ছে এবং সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। তিস্তা নদীর উজানে ভারতে বন্যার পানির চাপ সামাল দিতে গজলডোবা বাঁধের গেটগুলো খুলে দেয়ায় ভাটিতে উত্তর জনপদের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। নদীভাঙন ও ঢল-বানের আতঙ্কে রয়েছে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। বৃহত্তর সিলেটের সুরমা নদীর পানি গতকাল বিপদসীমার নিচে নেমে গেছে।
অপরদিকে চীন-ভারতসহ হিমালয় পাদদেশের উজান থেকে অব্যাহত ঢলের কারণে প্রধান নদ-নদী, শাখা ও উপনদীগুলোতে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধিতে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে মধ্যাঞ্চল হয়ে ভাটিতে চাঁদপুরের কাছাকাছি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে নদীভাঙন। প্রতিদিনই ভাঙছে বসতঘর, হাট-বাজার, রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন স্থাপনা। নদী গ্রাস করছে আবাদী জমি, ভিটেমাটি। অসহায় হয়ে পড়েছে নদ-নদীপাড়ের হাজার হাজার মানুষজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহাী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকায় নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী তিন দিনের মধ্যে বগুড়া, জামালপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
পাউবো সূত্রের সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত অনুসারে, উত্তর জনপদে যমুনা নদের পানি ৬টি পয়েন্টে একযোগে বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এরমধ্যে যমুনা বগুড়ার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে পানি আরো বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ৫ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনার পানির প্রবাহ ফুলছড়ি ও বাহাদুরাদে বিপদসীমার ২০ থেকে ২২ সেমি নিচে রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া এবং চিলমারী পয়েন্টে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র চিলমারীতে বিপদসীমার ৪২ সেমি নিচে রয়েছে। সর্ব উত্তর জনপদের তিস্তা নদীর পানি আরো বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার মাত্র ১৫ সেমি নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোনো সময় তা ছাড়িয়ে যেতে পারে। উত্তরের কুড়িগ্রামে ধরলা, গাইবান্ধা জেলায় ঘাগট নদীর পানিও বেড়ে চলেছে।
মধ্যাঞ্চলের ভাটিতে ঢাকা বিভাগেও বাড়ছে উজানের পানির অবিরাম চাপ। ধলেশ্বরী নদী টাঙ্গাইল জেলার এলাসিন ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ৪ সেমি নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল। উত্তর-পূর্বে সোমেশ্বরী নদী কলমাকান্দায় বিপদসীমার ১৯ সেমি ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীতে পানি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ভারতে উজানে গঙ্গায় পানি বৃদ্ধির ফলে ভাটিতে পদ্মা নদীতেও পানি বেড়ে গেছে। গতকাল পদ্মা গোয়ালন্দে বিপদসীমার ১৫ সেমি নিচে প্রবাহিত হয়। উজানে গঙ্গা পাংখায় বিপদসীমার ৯৬ এবং রাজশাহীতে ১২৭ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মায় অসময়ে অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গোয়ালন্দ, ভাগ্যকুল, সুরেশ্বরসহ ভাটিতে নদীর দুই তীরে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
দেশের ৯৪টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৫৯ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৩২টিতে হ্রাস পায়। দুটি পয়েন্টে অপরিবর্তিত থাকে। গত বৃহস্পতিবার নদ-নদীর ৭৪টি স্থানে পানি বৃদ্ধি, ১৮টিতে হ্রাস পায়। গত বুধবার ৬৪টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ২৭টিতে হ্রাস পায়। গত মঙ্গলবার ৫৬টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৩২টিতে হ্রাস পায়।
গত বৃহস্পতিবার পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র দশ দিনের সম্ভাব্য পূর্বাভাসে জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার বাহাদুরাবাদ ও অন্যান্য স্টেশনে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি (দশ দিনের কম) বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে। পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। রাজবাড়ী জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি (দশ দিনের কম) বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। ঢাকার আশপাশের নদ-নদীগুলোর পানির সমতল বাড়তে পারে, বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।