মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মিশনে অর্থসহায়তা বন্ধের এবার ওয়াশিংটনে অবস্থিত দেশটির কূটনৈতিক মিশন অফিস বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার এ সিদ্ধান্ত জানায় ট্রাম্প প্রশাসন। তার প্রশাসন থেকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে (পিএলও) এ তথ্য জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পিএলও।
যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের এই দূতাবাসকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। ‘পিএলও’র যুগ্ম পরিচালক সাইব এরেকাত বলেছেন, তার অফিসকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে যে, ওয়াশিংটনে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়া হবে।’ তার দাবি, ইসরাইলের অপরাধকে সুরক্ষা দিতে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মার্কিন সরকার। তিনি আরো জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এমন নীতিতে তারা মাথা নিচু করবেন না। ইসরাইলের বিরুদ্ধে তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন না। সাইব এরেকাত আরও বলেন, ‘আমরা বার বার বলেছি, ফিলিস্তিনি মানুষদের অধিকার বিক্রির জন্য নয়।’
রোববার মধ্যরাতে (বাংলাদেশ সময় সোমবার দুপুর) ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দশক ধরে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধ করে দেয়া হবে। কারণ, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আমেরিকার নেতৃত্বে আলোচনায় বসতে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সবসময় তার বন্ধুরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে থাকবে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও জড়িত অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধ’ এর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের শুনানি ও তদন্তের সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের কিংবা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং ওই সংস্থাকে অর্থ বরাদ্দ বন্ধের মত পদক্ষেপ নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র বলে জানানো হয়। কারণ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আমাদের কাছে মৃত। তবে, এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশন (পিএলও)।
ফিলিস্তিনিরা দাবি করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করেছে এবং তারা সম্পূর্ণভাবে ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছে। এ কারনে একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক ফোরামের মধ্যস্থতায় আলোচনায় বসার পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিন।
গত বছরও ওয়াশিংটনে ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধের হুমকি দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে আলোচনা চলায় মিশন বন্ধ করা হয়নি। এখনও ইসরায়েল ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি শেষ হয়ে যায়নি। একারণে ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হতে পারে ধারনা করা হচ্ছে।
গত ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী উল্লেখ করে তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন। তারপর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ফিলিস্তিন। এই ঘটনার পর ফিলিস্তিন জানিয়েছে, ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান করায় ‘সৎ মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনিরা যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসরাইলের সাথে শান্তি চুক্তিতে সম্মত হবে, তার দেশ ততক্ষণ কোনো সহযোগিতা দেবে না ফিলিস্তিনকে। তিনি বলেন, আমরা ফিলিস্তিনি নাগরিক ও নেতাদের জন্য যে সাহায্য দিতাম, তা বাতিল করছি। যুক্তরাষ্ট্র তাদের বড় অংকের অর্থ দিত এবং আমি বলতে চাই, আপনারা অর্থ পাবেন; কিন্তু চুক্তি করার আগে নয়। যদি চুক্তি না করেন, আমরা আপনাদের কোনো সাহায্য আর দেব না।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ইসরাইল অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা দেয় এমন হাসপাতালে দেয়া দুই কোটি মার্কিন ডলারের অর্থ সহায়তা বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার আগে গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য ত্রাণ বিতরণ করে এমন একটি জাতিসংঘের প্রকল্পকে অর্থ বরাদ্দ বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ‘আনরাওয়া’ নামের সংস্থাটি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জরুরি সেবা দিয়ে থাকে। সংস্থাটির সবচেয়ে বড় দাতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা সংস্থাটির ব্যয়ের ২৫ শতাংশ অনুদান দিত। ফিলিস্তিনিদের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বন্ধের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই সহযোগিতা বাতিল করা হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।