পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অতিবৃষ্টিতে তিব্বত অরুণাচল
আসামে পানি বৃদ্ধি
চীনে বন্যা সতর্কতা
বাংলাদেশে ধেয়ে আসতে পারে ঢল
ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তিস্থলে ভারী বর্ষণ হয়েছে। এতে করে ব্রহ্মপুত্রের উজানে ফুঁসে উঠেছে নদ। চীনের তিব্বত ও উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল-আসামে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপক। ভারতকে বন্যা সতর্কতার কথা জানিয়েছে চীন। উজানে পানি বৃদ্ধির কারণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের ভাটিতে থাকা বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসতে পারে ঢল। এ কারণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা পাড়ে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে এই দুই নদের পানি বৃদ্ধির দিকে রয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙনও ভয়াবহ আকারে বঢ়ছে। গতকাল শুক্রবার পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ আজ (শনিবার) অরুণাচল, আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চীনের তিব্বত থেকে উৎসারিত সাঙপো নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা সতর্কতা জারি করেছে চীন। নদীটি ভারতের অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং এবং আসামে ব্রহ্মপুত্র নামে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে উৎসে ভারী বর্ষণের কারণে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উজানে পানি বাড়ছেই। এতে করে বন্যার আশঙ্কায় গভীর উদ্বেগ ব্যক্ত করেছে অরুণাচল প্রদেশের সরকারি মহল। বন্যার ঝুঁকিতে বসবাসরত জনসাধারণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পানিসম্পদ বিভাগ বলছে, ব্রহ্মপুত্র নদের উৎস ও উজানভাগে চীনের অংশে সাঙপো নদীর পানির প্রবাহ গত ১৫০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
এ বছর থেকে পানি বৃদ্ধির আগাম তথ্য-উপাত্ত বিনিময় চালু থাকায় ব্রহ্মপুত্রের উজানভাগে তিনটি স্টেশনে পানির প্রবাহ ও সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে তা ভারতকে জানিয়েছে চীন। চীনের সরকারি তথ্য অনুসারে, গত বুধবার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ স্টেশনের হিসাবে ৯০২০ কিউমেক পর্যন্ত পানি সাঙপো হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে প্রবাহিত হচ্ছিল। এরমধ্যে উজানে ইয়ানচান পয়েন্টে পানিবৃদ্ধির মাত্রা নাজিরবিহীন। অবশ্য ভারতের পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞগণ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলছেন, চীনে ব্রহ্মপুত্রের উৎস ও উজানে ব্যাপক পানি বৃদ্ধি এবং বন্যা সতর্কতা জারি হলেও ভারতের অংশে এতে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আপাতত নেই।
এদিকে পাউবো নদ-নদীগুলোর পানির সমতল পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য বন্যার পূর্বাভাস প্রদান করে পাঁচ দিন আগে। এছাড়া পরীক্ষামূলক বন্যা পূর্বাভাস দেয়া হয় দশ দিন আগে। এক-দুই মাসের কোন দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। আগস্ট মাসের সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত নেই। অতীত অভিজ্ঞতায় সেপ্টেম্বর মাসেও স্বাভাবিক বন্যার ঝুঁকি থাকে বলে জানায় পাউবো সূত্র। পাউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সবধরনের ছুটিছাটা আগেই বাতিল করে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়।
বিশেষজ্ঞ সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশের অভিন্ন নদ-নদীগুলোর উৎস মূলত ভারতে। কিন্তু উজানে পানি প্রবাহের পূর্বাভাস মিলছে না। ভারত বন্যার চাপ সামাল দিতে গঙ্গায় ফারাক্কা, তিস্তায় গজলডোবাসহ বিভিন্ন বাঁধ ও ব্যারেজের গেট খুলে দিয়ে ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে কী হারে পানি ছেড়ে দিয়ে থাকে সে তথ্যও জানায় না। অবশ্য ৪টি নদ-নদীর উজান অববাহিকার মাত্র ৮টি পয়েন্টের তাও আংশিক তথ্য মিলছে। এক. ব্রহ্মপুত্র-যমুনার উজানভাগের অববাহিকায় ৪টি পয়েন্ট, উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামের গুয়াহাটি, পান্ডু গোয়ালপাড়া ও ডুবড়ি। দুই. গঙ্গা অববাহিকায় ২টি পয়েন্ট, উজানের ফারাক্কা এবং সাইফগঞ্জ (বিহার)। তিন. সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উজানে বরাকের শিলচর। এবং চার. তিস্তার একটি উজান পয়েন্টের। অথচ ভারত উজানের অববাহিকায় নদ-নদীর প্রবাহ তথা বন্যার মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত প্রদান করছে না।
একজন পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ জানান, সুনির্দিষ্ট বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কতার জন্য উজানের দেশগুলো বিশেষ করে ভারতের কাছ থেকে আগাম তথ্য-উপাত্ত পাওয়া ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য জরুরি। কারণ অভিন্ন নদ-নদী’র মূল প্রবাহ উজানে। অন্যতম প্রধান ব্রহ্মপুত্র নদ হিমালয় থেকে উৎসারিত হয়ে চীনের তিব্বত, ভারত হয়ে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত এবং বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। ২ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রহ্মপুত্র নদের ৬ লাখ ৫১ হাজার ৩৩৪ বর্গ কিঃমিঃ অববাহিকার সিংহভাগই চীন হয়ে ভারতের অরুণাচল ও আসামে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।