বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে কমিশন গঠন করে ‘গুম’ ঘটনার তদন্ত ও বিচার করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, এটুকু বলতে চাই বিএনপি দল হিসেবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে একদিন না একদিন যারা সত্যিকারভাবে এসব হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদের চিহ্নিত করা হবে এবং তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যদি আমাদের সুযোগ আসে অবশ্যই তার ব্যবস্থা আমরা করবো। আমাদেরকে এজন্য একটা কমিশন করতে হবে। এই কমিশন করে যারা এর সঙ্গে জড়িত ওপরের ব্যক্তিরা, যাদের নির্দেশে এদের গুম করা হয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যদি না পারি এর চাইতে বড় ব্যর্থতা আমাদের জন্য আর কিছু হতে পারে না। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে আমাদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন এমন আকার ধারণ করেছে যে এটা বর্ণনা করা যায় না। কিন্তু সবচাইতে পরিতাপের বিষয় হলো ১৬ কোটি মানুষের দেশ, তরুনদের দেশ সেই দেশে একচেটিয়াভাবে অব্যাহতভাবে অন্যায়-অত্যাচার-নির্যাতন-গ্রেফতার-গুম-বিচারবর্হিভুত হত্যা চলছে। পত্রিকায় দেখা যায় একেবারে ছোট করে দুইজন মাদকব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। মানুষ হত্যা করাটা এখন একটা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশে। সেই লোকটা দোষী কিনা, নাকি নির্দোষ, নাকি ব্যবসায়ী, তার কাছে পুলিশ টাকা চাইছে, টাকা দেয় নাই বলে গুলি করে মেরে ফেলেছে- এরকম অনেক দৃষ্টান্ত আছে। আগামীতে নির্বাচন। পুরো বিষয়টার উপরে যদি আমরা সুযোগ পাই চেষ্টা করবো বাংলাদেশে সুষ্ঠু রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে, একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্”ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপির জন্য এই দিবসটি আমাদের কাছে শোকদিবস। যখনই গুমের প্রশ্ন উঠে, তখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভরাক্রান্ত হৃদয়ে থাকেন। এ দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী গুমের শিকার হয়েছে। জাতিসংঘ স্বীকৃত এই গুম দিবসটি সরকারের পালন করার কথা থাকলেও তারা পালন করছে না। তারা নিশ্চুপ। কেননা এই গুম বাংলাদেশে সেই ১৯৭২-৭৫ এবং ২০০৯ থেকে অদ্যাবদি যে গুম হচ্ছে সব গুমের পেছনে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। সরকারের ইচ্ছা, সরকারের প্রয়োজনে এই গুম করা হচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে তারা(সরকার) এ কাজ করছে যা গর্হিত অপরাধ করছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। বিএনপি আগামীতে সুযোগ পেলে অবশ্যই এসব ঘটনার বিচার করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, গুম দিবসটি আমাদের নয়, সরকারের পালন করা উচিৎ ছিলো কিন্তু তাদের সেই সাহস নেই। কারণ অত্যাচারি মহাসড়কের সঙ্গে এই সরকার বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে, গুমের মহাসড়কে এ সরকার নাম লিখিয়েছে। এভাবে কী দেশ চলতে পারে? গুম হওয়া পরিবারের শিশুদের হাত থেকে আপনারা রেহাই পাবেন না। এ শিশুরা একদিন বিচারপতি হবে, ডিবি অফিসার হবে তাদের মুখোমুখি একদিন আপনার হতে হবে এবং এজন্য আপনি প্রস্তুত থাকুন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম আলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহানগর দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ গুম হওয়া পরিবারের কয়েকজন সদস্য বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।