২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
মাংসপেশির আঘাত হলো মাংসপেশি ছিঁড়ে যাওয়া, টান খাওযা বা আঘাতের জন্য রক্ত জমাট বাঁধা। বর্তমানে বিশ্বের সেরা ফুটবলার মেসির খেলা দেখার জন্য আমি সারা রাত জেগে থাকি; সেই মেসি যখন হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ে সাইডলাইনে বসে থাকেন, খেলার আকর্ষন তখন অনেকটাই কমে যায়। আর আমার মতো মেসি-ভক্তদের খেলা দেখাই বন্ধ হয়ে যায়।
এই হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি হলো হ্যামস্ট্রিং মাংসপেশির আঘাত। মাংসপেশির এই আঘাত খুবই বিরক্তিকর। একজন খেলোয়াড়কে অনেক দিন খেলা থেকে দূরে রাখে।
স্পোর্টস ইনজুরির ১০-৩০ শতাংশ হলো মাংসপেশিতে আঘাত। আর ফুটবলের ইনজুরির ৩০ শতাংশ হলো মাংসপেশিতে আঘাত। মাংসপেশিতে আঘাত হলো সরাসরি আঘাতের জন্য অথবা অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য ছিঁড়ে যাওয়া-
রক্ত জমাট হওয়া
০ মাংসপেশির ভেতরে ি মাংসপেশির মধ্যবর্তী স্থানে
যখন মাংসপেশিকে এমন কাজ করতে হয, যা মাংসপেশির স্বাভাবিক ক্ষমতার চেয়ে বেশি, তখনই আঘাতপ্রাপ্ত হগয়। টানে সাধারণতঃ যেসব মাংসপেশি ছিড়ে যায়, যারা দুটি জয়েন্টকে যেমন- হ্যামস্ট্রিং, বাইসেপস ইত্যাদি।
মাংসপেশি ছেঁড়া গুরুত্ব অনুসারে তিন প্রকার।
প্রথম - ৫ শাতাংশ মাংসতন্তু ছিঁড়ে যায়। শক্তি ও অস্থিসন্ধি নাড়াতে ব্যথা হবে এবং শক্তিও কম থাকবে।
দ্বিতীয়- ৫ শতাংশের অধিক মাংসতন্তু ছিঁড়ে যায়। অস্থিসন্ধি নাড়াতে ব্যথা হবে এবং শক্তিও কম থাকবে। তৃতীয় - সম্পূর্ন মাংসপেশি ছিঁড়ে যায়।
লক্ষণ : মাংসপেশিতে ব্যথা হবে।
মাংসপেশিতে নাড়াচাড়ায় ব্যথা বাড়বে এবং বিশ্রামে ব্যথা কমবে।
পার্শ্বিয়াল ছেঁড়াতে একটা গর্ত পাওয়া যাবে এবং সম্পুর্ন ছেঁড়াতে মাংস ফুলা তৈরি হবে। পার্শি¦য়াল ছেঁড়াতে ব্যথার জন্য নাড়াতে পারবে না আর সম্পূর্ন ছেঁড়ার কারনে নাড়াতে পারবে না। আঘাতের স্থানের রং পরিবর্তন হবে ও ফুলে যাবে।
মাংসপেশিতে রক্ত জমাট বাঁধা
০ খেলাধুলার সময় মাংসপেশিতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়।
০ আঘাতে এই মাংসপেশিতে কী পরিমাণ রক্তক্ষরণ হবে তা নির্ভর করবে কী পরিমান রক্ত মাংসপেশিতে চলাচল করছিল, এই মাংসপেশি কেমন টানে ছিল।
০ আঘাতের পরবর্তী ফলাফল নির্ভর করবে কোথায় এবং কী পরিমাণ আঘাত পেয়েছিল।
০ মাংসপেশির ভেতরে ি মাংশপেশির মধ্যবর্তী স্থানে
রক্তক্ষরণ মাংসপেশির ভেতরে ছিঁড়ে যাওয়া বা চাপের কারণে হতে পারে।
জমাট রক্ত মাংসপেশির ভেতরে চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়।
মাংসপেশির ভেতরে চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়।
মাংসপেশিতে ব্যথা ও কার্যকারিতা কমে যায়।
মাংসপেশির মধ্যবর্তী স্থানে রক্তক্ষরণ হয পার্শ্ববর্তী রক্তনালী যখন ছিঁড়ে যায়-একটা ফোলআপ তৈরী হয় রক্ত জমাট রাখার জন্য। সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা পর। কার্য়কারিতাও তেমন হারায় না। সহজে আরোগ্য লাভ করে।
যে যে কারণে মাংসপেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়-
পর্যাপ্ত পরিমাণ ওয়ার্মআপ না হলে
০ আগেই আঘাতপ্রাপ্ত মাংসপেশি, যা পরিপূর্ণ চিকিৎসা হয়নি
০ আগে আঘাতপ্রাপ্ত মাংসপেশি, বা স্কার টিস্যু দিয়ে সেরেছে
০ অতিরিক্ত ব্যবহৃত বা অবসন্ন মাংসপেশি
০ টেন্স মাংসপেশি, যা সম্পাূর্নরুপে নাড়াচড়া করা যায় না।
ি অতিরিক্ত ঠান্ডায় মাংসপেশি, যা স্বাভাবিক সম্প্রসারণ করা যায় না।
চিকিৎসা : চিকিৎসা, সুস্থতা ও পুনর্বাসন নির্ভর করে কোন ধরনের, কী পরিমাণ এবং কোথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে তার ওপর।
আঘাতপ্রাপ্ত মাংসপেশিতে রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য নি¤œলিািখত পদ্ধতি অবলম্বন করবেন।
০ বিশ্রাম ি ঠান্ডা সেক ি ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ
০ আহত অঙ্গ উঁচুতে রাখবেন ি আহত অঙ্গ কোন ধরনের চাপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে (ক্র্যাচ/অ্যালবো ব্যাগ)
ঘন্টা পর নি¤œলিখিত বিষয়গুলো পর্যবেক্ষন করতে হবে।
০ ফোলা কমে গেছে কি না ি ফোলা ছড়িয়ে পড়েছে কি না
০ আঙ্গুল নাড়াতে পারে কি না।
এই সময় রোগ নির্ণয় খুব জরুরী । কেননা যদি মাংসের ভেতরে রক্তক্ষরণ অথবা সম্পূর্ন মাংসপেশি ছিঁড়ে যায়। সম্পূর্ন চিকিৎসার আগে ব্যায়াম শুরু করলে স্থায়ী ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। যদি অল্প আঘাত হয়, তাহলে ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ, গরম সেক ও ব্যায়াম করলেই সেরে যায়।
পরবর্তীকালে-
০ স্টেটিক এক্সারসাইজ ০ কোঅর্ডিনেশন ট্রেনিং
ধীরে ধীর কাজের গতি ও পরিমাণ বাড়াতে হবে।
খেলার ধরন অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
যদি আশানুরুপ উন্নতি না হয় তবে বুঝতে হবে মাংসের ভেতরে ছিঁড়েছে। সার্জারী করতে হবে যখন-
জমাট রক্ত বের করতে
ছেঁড়া মাংসপেশি জোড়া লাগাতে, তাহলে স্কার টিস্যু কম তৈরি হবে।
পুনর্বাসন : অপারেশনের পর কখন ব্যায়াম ও কাজ শুরু করবে তা নির্ভর করে কোন মাংসপেশি এবং কত গভীরভাবে ছিঁড়েছে তার ওপর। যত আগে ব্যয়াম ও পুনর্বাসন শুরু করবে তত তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে। যখন মাংসপেশির সঙ্কোচন ও প্রসারণের সময় ব্যথা পাওয়া যায় না, তখন বুঝতে হবে যা শুকিয়ে গেছে। যখন মাংসপেশি স্বাভাবিক কাজ ও স্বাভাবিক নাড়াচড়া করবে তখন থেকে ট্রেনিং প্রোগ্রাম শুরু করতে পারে। মাংসপেশির আঘাত সারাতে ৩ থেকে ১৬ সপ্তাহ লাগে।
কন্ডিশনিং ব্যায়াম ধীর ধীরে শুরু করতে হবে।
যত দিন ব্যায়াম করার সময় ব্যথা লাগে তত দিন প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশগ্রহণ করবে না।
মাংসপেশির আঘাত থেকে মুক্তির উপায়-
পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রস্তুতি। শারীরিক ও মানসিক ।
খেলার আগে ওয়ার্মআপ করে নিতে হগবে।
অতিরিক্ত গরম, ঠান্ডা, শুষ্ক আবহাওয়া ও উঁচু স্থানে খেলার শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে।
নির্দিষ্ট মাংসপেশির নির্দিষ্ট ব্যায়াম করে প্রতিটি মাংসপেশিকে সম্প্রসারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাধ্যমে মাংসপেশির ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
কনসালটেন্ট
অর্থোপেডিক্স ডিপার্টমেন্ট
ইউনাইটেড হসপিটাল
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।