Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিচারের আওতায় আনতে হবে সেনা কর্মকর্তাদের : জাতিসংঘ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ফেসবুক মিয়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাংকে নিষিদ্ধ করেছে । জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে রাখাইনে রোহিঙ্গা সংকটের জন্য তাকে দায়ী করার পর এমন ব্যবস্থা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। সেনাপ্রধান ছাড়াও ফেসবুক আরও ২০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করেছে তারা।
গত বছরের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলা হলেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সব পথ বন্ধ করতে আরসার হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিত সেনা-অভিযান শুরু হয়েছিল। চলমান জাতিগত নিধনে হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ।
সর্বশেষ সোমবার এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতার কথা তুলে ধরে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেসামরিক কর্তৃপক্ষও এই নিধনযজ্ঞে ইন্ধন জুগিয়েছে। রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিও তার সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই সহিংসতা থামাতে ব্যর্থ হয়েছেন। জাতিসংঘ জানায়, রাখাইনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ নিয়ে মিয়ানমার সরকারের প্রত্যাখ্যান ও অস্বীকারের মাত্রায় তারা অবাক হয়েছেন। এই ঘটনায় জড়িত সেনা কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মন্তব্য করা হয় প্রতিবেদনটিতে। সেখান ছয়জন সেনা কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে তারা যার মধ্যে ছিলেন সেনাপ্রধানও।
সোমবার নিজেদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে ফেসবুক জানায়, আমরা মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মি অং হ্লাংসহ ২০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করছি।’ তারা জানায়, সা¤প্রদায়িক ও ধর্মীয় উত্তেজনা যেন আরও বৃদ্ধি না পায় সেজন্য এই সিদ্ধান্ত তাদের।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কিং সাইট আরও জানিয়েছে, ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানোয় জড়িত ৪৬টি পৃষ্ঠা এবং ১২টি অ্যাকাউন্ট তারা এরই মধ্যে সরিয়ে ফেলেছে। সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিয়ে তিক্ত সমালোচনাম‚লক পোস্টের স্রোত সামাল দিতে ফেইসবুক ব্যর্থ হয়েছে বলে কিছুদিন আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়। এর একদিন পর ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করে এক বিবৃতিতে বলে, “মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতা যন্ত্রণাদায়ক আর আমরা ফেইসবুকে ভুল তথ্য আর ঘৃণাম‚লক বিবৃতি ঠেকাতে খুবই ধীর গতির।”
বিবৃতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি জানায়, ‘আমরা মিয়ানমারে ফেসবুকের অপব্যবহার রোধে কাজ করে যাচ্ছি। চলতি বছরের শুরু থেকেই মানবাধিকার বিবেচনা করে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেক মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করায় এটা আমাদের বিশাল দায়িত্ব। আমরা ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
গত জুনে অ্যামনেস্টির এক প্রতিবেদনে (উই উইল ডেস্ট্রয় এভরিথিং) রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর দমন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ১২ জনের নাম উঠে আসে, যাদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লায়িং রয়েছেন।
সংগঠনটি এদেরকে আটক করে জবাবদিহিতার আওতায় আনার সুপারিশ করেছে। বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলের অনুমোদন নিয়ে তাদেরকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হাজির করা এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য তাদের অপরাধের তথ্যপ্রমাণ সংরক্ষণের একটি পদ্ধতি খুঁজে বের করার সুপারিশ করেছে অ্যামনেস্টি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ