পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বড় পুকুরিয়া খয়লা খনির কয়লা চুরি’র ঘটনায় রাঘব বোয়ালরা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দুদকের তদন্ত চললেও পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ পেট্রোবাংলার উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। চুরির ঘটনা প্রকাশের পর ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও এদের মধ্যে তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা ছাড়া আর তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি।
কয়লা চুরি’র ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে কয়লা ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সকলের মধ্যেই আতঙ্ক বিরাজ করতে থাকে। কেননা এক লক্ষ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা গায়েবের ঘটনায় কেবলমাত্র বড় পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কর্মরতদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে। সময়ে অসময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করে মধু খাওয়া সরকারের অনেক উর্ধতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে টু-শব্দটিও করা হয়নি। গুঞ্জন রয়েছে চুরি ঘটনার সাথে সরাসরি বা কাগজে কলমে জড়িত না থাকার পরও মামলার আসামী করা হয়েছে। যা কিনা শুধু শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্যই করা হয়েছে। মামলা দায়ের ঘটনার কিছু দিন পর স্থানীয়ভাবেও কয়েকজন কর্মকর্তার পক্ষে স্থানীয়ভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনও হয়েছে। এদিকে কয়লার অভাবে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের এক মাস পর গতকাল রোববার বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এক লক্ষ টন কয়লা আমদানীর কথা জানিয়েছেন। একইসাথে আগামী অক্টোবর মাসে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনিতে পূর্ণমাত্রায় কয়লা উত্তোলন হবে উল্লেখ করেছেন। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আমদানীকৃত কয়লা কবে আসবে আর কখন ব্যবহার হবে।
উল্লেখ্য যে রংপুর অঞ্চলে বিদ্যুতের প্রকট সমস্যা দেখা দিলে ঈদের আগে ২য় ইউনিট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সাময়িকভাবে চালু করা হয়। যা আগামীকালের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের পর পুন:রায় চালু করতে কোটি টাকা ব্যয় হয় বলে সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র জানিয়েছে।
দেশের একমাত্র খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি’র ইয়ার্ড থেকে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা গায়েবের ঘটনা ধরা পরে গত জুলাই মাসে। কয়লা’র অভাবে বন্ধ হয়ে যায় ও দেশের একমাত্র কয়লা ভিক্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তাপ বিদুৎ কেন্দ্র। দেশ ব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হওয়া কয়লা চুরির ঘটনায় ক্ষুদ্ধ দেশের প্রধানমন্ত্রী। অতি দ্রæততার সাথে মাঠে নামে দুদক। পেট্রোবাংলা নিয়ন্ত্রিত কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ ১৯কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর তদন্তকারী সংস্থাগুলোর তৎপরতায় খনির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। একইভাবে সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সচেতন মহলের মতে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি সরাসরি নিয়ন্ত্রিত হয় পেট্রোবাংলা দ্বারা। পেট্রোবাংলা হচ্ছে জ্বালানী মন্ত্রনালয়ের একটি অঙ্গ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সুত্র জানিয়েছে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পেট্রোবাংলা ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের হাতের পুতুল। কয়লা নিয়ে বানিজ্যের যত ঘটনাই ঘটেছে তার সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে উল্লেখিত দুটি প্রতিষ্ঠান ও সরকারের প্রভাবশালী স্থানীয় এক মন্ত্রী’র ছত্রছায়ায়। তবে এর সাথে খনির কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। মামলা হয়েছে ১৯ জনের বিরুদ্ধে। মামলার পর স্থানীয়ভাবে এক কর্মকর্তার পক্ষে এলাকাবাসী মানব বন্ধন করেছে। তাদের অভিযোগ বোর্ড সচিব আবুল কাশেম প্রধানীয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামী করা হয়েছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানীয়ার কর্মস্থল হচ্ছে ঢাকাস্থ পেট্রোবাংলা কার্যালয়ে। কয়লা লোপাট ঘটনা ফাঁস হওয়ার ৬ মাস আগে তাকে খনি প্রশাসনের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রশাসনিক কারনে অনেকের কাছেই বিরাগভাজন হোন তিনি। এ কারনেই তার বিরুদ্ধে বিষাদগার করা হচ্ছে। বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির বানিজ্যিক কোন কর্মকান্ডের সাথেই তার সম্পৃক্ততা নেই। বোর্ড সভার সদস্য সচিব হিসাবে তিনি কেবল পোষ্ট মাষ্টারের ভূমিকা পালন করেছেন। অনেকের মতে মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষের কাছে তার গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। যার কারনে এমডিসহ দুই জন উপমহাব্যবস্থাপক বরখাস্ত হলেও তাকে নুতন কর্মস্থলে বদলি করা হয়েছে। এরকম আরো অনেকেই রয়েছেন। যারা কয়লা ছুয়েও দেখেননি কোনদিন। তবে অনেকেই রয়েছেন যারা চুষে খেয়েছেন কয়লা থেকে খনির অনেক কিছুই। আর সাথে জড়িত রয়েছেন পেট্রোবাংলা ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের অনেকেই। সচেতন মহলের মতে এরকম আরো অনেকেই রয়েছেন যাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে রাঘব বোয়ালেরা পার পাওয়ার চেষ্টা করছেন। যদিও দুদক মামলার আসামীসহ পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদেরও জিঙ্গাসাবাদ করছেন।
উল্লেখ্য যে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে উত্তোলিত কয়লার মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা ঘাটতি হওয়ায়, খনিটির নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা গত ১৯ জুলাই খনির এমডি প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মেদ ও কোম্পানী সচিব মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানীয়কে প্রত্যাহার করে। একইসাথে খনির মহাব্যবস্থাপক মাইনিং এটিএম নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক খালেদুর ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এই ঘটনায় দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। এরপর গত ২৪ জুলাই খনির ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে কয়লার অভাবে গত ২২ জুলাই থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে দেশের একমাত্র কয়লা ভিত্তিক বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের সর্বশেষ তৃতীয় ইউনিটটি। বিপর্যয় নেমে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহে। অব্যাহত লোডশেডিং ও লোভোল্টেজের কারনে শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ ফ্রিজ, টিভি, ওভেন সবকিছুই অচল হয়ে পড়ে। অত:পর ঈদুল আযহার দুদিন আগে যতটুকু কয়লা রয়েছে তা দিয়েই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু করে কোরবানীর ঈদের গোশত সংরক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়। আজ রাতের পর যে কোন মুহুর্তে এই ইউনিটটি আবারও বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সৃষ্টি হবে আবারও বিদ্যুৎ বিপর্যয়।
এদিকে গতকাল রোববার মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক সম্বেলনের মাধ্যমে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি বড় পুকুরিয়া কয়লা উত্তোলন হবে জানিয়ে জ্বালানী প্রতি মন্ত্রী বলেছেন বিদেশ থেকে এক লক্ষ টন কয়লা আমদানী করা হবে। কয়লা উত্তোলন সেপ্টেম্বরের আগে সম্ভব নয় একথা সকল মিডিয়া আগেই প্রচার করেছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় বুঝতে পারেনি একথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তার পরও এখন আমদানীর স্বিদ্ধান্ত নেয় হলেও কবে নাগাদ তা আসবে এ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এখন আমদানী করা কয়লা বড় পুকুরিয়া কয়লা উত্তোলনের আগে আসবে কি। তাহলে কয়লার অভাবে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের এক মাস পর আমদানীর স্বিদ্ধান্ত নেয়া হলো কেন। এছাড়া কর্তৃপক্ষের যদি স্বদি¦চ্ছা থাকতো তাহলে স্থানীয়ভাবে দরপত্র আহবানের মাধ্যমেও কয়লা ক্রয় করে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখতে পারতো। কেননা স্থানীয়ভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে এক লক্ষ নয় তার অনেক বেশী কয়লা মজুত রয়েছে। এসকল দিক বিবেচনা করলে মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের বাঘা বাঘা উপদেষ্টারা কি নিজেদের দায় এড়াতে পারবেন ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।