Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আলোচনায় ১/১১

বিএনপি এক-এগারোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির চক্রান্ত করছে : ওবায়দুল কাদের , তারাই আবার ১/১১’র ধুয়া তুলে নতুন করে ষড়যন্ত্র করতে চাইছে : মির্জা ফখরুল , তখন কে কি করেছে দেশবাসী ভালো করে জা

ফারুক হোসাইন : | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:৩৮ এএম | আপডেট : ১:১৬ এএম, ১৮ আগস্ট, ২০১৮

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) রোডম্যাপ অনুয়ায়ি আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গত বৃহস্পতিবারও জানিয়েছেন ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে কিংবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের ৮০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কমিশন। তবে ইসির পক্ষ থেকে যাই বলা হোক না কেন? রাজনৈতিক অঙ্গনে এখনো নির্বাচনের সেই বাতাস অনুভব করছেনা কেউই। বরং নির্বাচন নিয়ে এখনো এক ধরনের সংশয়-সন্দেহ সবার মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে খোদ সরকার দলের সাধারণ সম্পাদকও যখন নির্বাচন নিয়ে ১/১১ ষড়যন্ত্রে গন্ধ পায় তখন এ সন্দেহ আরও ঘনিভুত হয়। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নিজ নিজ অবস্থানে অনঢ় থাকাতে আবারও ১/১১’র সম্ভাবনার বিষয়টি উড়িয়ে দিতে পারছেন না।

সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বারবারই ১/১১ সেই জুজুর ভয় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের শোক দিবসের আলোচনায় তিনি বলেছেন, আবারও বাংলাদেশে ওয়ান-ইলেভেনের মতো ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। এর সাথে মিডিয়ার একাংশ উস্কানি দিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিএনপি এক-এগারোর মত পরিস্থিতি সৃষ্টির চক্রান্ত করছে। আর গণমাধ্যমের একটি অংশ বিএনপিকে এই চক্রান্তে সহযোগিতা করছে। অন্যদিকে ২০০৭ সালে এক-এগারোর পরের সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১/১১’র সরকার নাকি আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল, তাদের সভানেত্রীই সেকথা বলেছেন। এখন তারাই আবার ১/১১’র ধোঁয়া তুলে নতুন করে ষড়যন্ত্র করতে চাইছে। আওয়ামী লীগ কী ভুলে গেছে ১/১১’র বেনিফিশিয়ারি (সুফল ভোগকারী) তারাই?
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড.তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এক এগারো কি কারণে হয়েছিল? কারা করেছিল? এটা বর্তমান সরকারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের খুব ভাল করে জানেন। তার পরও আমি বলবো বিএনপি ক্ষমতায় ছিল আর আওয়ামীলীগ বিরোধী দলে ছিল তখন দুই দলের মধ্যে লড়াই শুরু হলো। তখন কে কি করেছে তা দেশবাসী ভাল করে জানে। দেশবাসীকে রক্ষা করার জন্য সেনাবাহিনী দায়িত্ব দিয়েছিলো। এরপর কারা সুবিধা ভোগ করেছে? খুঁজে বের করা দরকার। এখন যদি সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক এক-এগারোর কথা বলেন, তাহলে তো এটা খুঁজে বের করা দায়িত্ব সরকারেরই। আর তারা যদি শঙ্কার কথা বুঝতেই পারে তাহলে সেই পরিস্থিতি কে তৈরি করছে? বা কি করা দরকার? ওবায়দুল কাদের সাহেবের কাছে এটা আমার প্রশ্ন।
জাতীয় নির্বাচনের আগ মূহুর্তে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেখানে প্রচার-প্রচারণা, প্রার্থী নির্ধারণ, ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘোরার কথা সেখানে এখনো নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশায় কাটছে না। তারচেয়ে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবর্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন হঠাৎ করে মূখ্য হয়ে ওঠেছে ১/১১। এক দল অপর দলকে ১/১১’র জুজুর ভয় দেখাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে। এ বলছে, ওরা আবার এক-এগারোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। আর ও বলছে, এরাই পরিস্থিতিকে ওদিকে ঠেলে দিচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি এক-এগারোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির ‘চক্রান্ত’ করছে। এক-এগারোর কুশীলবদের সঙ্গে এখন গণমাধ্যমের একটি অংশ বিএনপিকে সহযোগিতা করছে। দেশের মানুষ উন্নয়ন অর্জনে শেখ হাসিনার ওপর খুশি। জনগণ উন্নয়নের পক্ষে রায় দেবে। এবারের নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে আবারও রায় দেবে বাংলার জনগণ। কেননা বিএনপি এবং তাদের দোসররা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি আবারও হুমকি সৃষ্টি করছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব একটি মারাত্মক কথা বলেছেন। এক-এগারোর পদধ্বনি তিনি শুনতে পাচ্ছেন। এরপরও আপনি (ওবায়দুল কাদের) সরকারে আছেন! এখনো পদত্যাগ করছেন না! সরকার আপনাদের আর আপনি এক-এগারোর পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন?’ তিনি বলেন, এই ওবায়দুল কাদেরের সরকার ১/১১ তে এত বেনিফিশিয়ারি যে সরকারে যাওয়ার আগেই, তাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) বিদেশে যাওয়ার আগেই বলেছিলেন যে আমরা এই ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন অবৈধ সরকারের সব কর্মকান্ড বৈধ করে দেবো। দিয়েছেনও তাই, পার্লামেন্টে আইন পাস করেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, আগেও সংঘাতপ‚র্ণ রাজনীতিতে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও ওদিকে যাবার চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো অচলাবস্থা ও পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল বলেই এক-এগারো হয়েছিল।
সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, নির্বাচন প্রশ্নে যে ধরনের রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে তার সমাধান না হলে দেশ কোন দিকে যাবে বলা যায় না? এখনও পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে তাতে গন্তব্য অনিশ্চয়তার দিকেই যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
নির্বাচন এবং ১/১১’র ইস্যুর মূল বিষয়বস্তু মূলত: তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সরকার। সরকার আদালতের একটি রায়ের কারণ দেখিয়ে সংবিধান সংশোধন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান করেছে। যেটা আসলে ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারেরই একটি ছোট সংস্করণ। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা মানবে না বলে জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের কথা হলো, অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে গেলে সংবিধানবহির্ভূত শক্তি সহজেই ক্ষমতা নিয়ে নিতে পারে। তখন গণতন্ত্র পরাজিত হয়। সে জন্যই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এখানেও নির্বাচনের সময় থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এখানেই বিএনপির আপত্তি। কারণ, তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী কলকব্জা নাড়ার ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করে রাখবেন। তাই কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে তাঁরা যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
যেকারণে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধী জোটের দলগুলো অংশ নিলেও নির্বাচন হয় একতরফা। এরফলে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪টি (সংখ্যাগরিষ্ঠ) আসনে প্রায় বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিতন হন জনপ্রতিনিধিরা। সেবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সেটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। তবে সেই নিয়ম রক্ষার নির্বাচনও ৫ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। তাই আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার কঠোর অবস্থানে বিএনপিবিএনপিকে ছাড়া এদেশে কোন নির্বাচন হবে না বলে বিভিন্ন সভা সমাবেশে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ প্রায় সব নেতাই। আর বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা, সংসদ ভেঙে দেয়া, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন করার শর্ত দেয়া হয়েছে। এই বিষয়ে আলোচনার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বানও করা হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৮০ভাগ প্রস্তুত হয়ে গেছে জানিয়ে কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে কোন দলের সাথে ইসির সংলাপের সম্ভাবনা নেই। যা রাজনৈতিক অঙ্গনে সমঝোতার বিষয়টি আরও ঝাপসা করে তুলেছে। তবে এরই মধ্যে বিএনপির আহ্বানের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে বলেছেন আলোচনা হতে পারে। তবে তা শর্তহীন হতে হবে। এছাড়া টেলিফোনেও আলোচনা হতে পারে। যদিও শর্তহীন আলোচনার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট শর্ত দেয়া আছে। আলোচনা হতে পারে এসব বিষয়ে। খালি টেবিলে কোন আলোচনার কিছু নেই।
দেশের বিশিষ্টজনেরা বলছেন, আজ বিএনপি যে যুক্তি দিচ্ছে, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য আওয়ামী লীগও হুবহু একই যুক্তি দিত। আর আজ আওয়ামী লীগ যে যুক্তি দিচ্ছে, ১৯৯৬ সালে বিএনপিও ঠিক সেসব কথাই বলত। দুই প্রতিদ্ব›দ্বী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টে ফেলেছে। বলতে গেলে, এই বিশেষ প্রশ্নে বিএনপি গেছে আওয়ামী লীগে আর আওয়ামী লীগ গেছে বিএনপিতে!
এই অবস্থান বদলের মাঝখানে যদিও ১৭ বছর কেটে গেছে, কিন্তু রাজনৈতিক অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।
সা¤প্রতিক কিছু ঘটনায় মানুষ বিচলিত, সন্দেহ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকার রিজার্ভ চুরি, ব্যাংকের ভল্টে থাকা সোনা তামা হয়ে যাওয়া, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ার কয়লা খনি থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার টন কয়েলা গায়েব, দিনাজপুরের মধ্যপাড়া খনি থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টন পাথর গায়েব, কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে দেশের সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দেশব্যাপী আন্দোলন, কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যবহার, শিক্ষার্থীদের আটক, রিমান্ড দেশে-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দেশে-বিদেশের শিক্ষক, সুশিল সমাজ, মানবাধিকার সংস্থা, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এছাড়া বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে কিছু দিন পরপরই উদ্বেগ জানাচ্ছেন বিদেশি রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলো। এর সাথে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি প্রভৃতি ঘটনায় মানুষ বিরক্ত। চাঁদাবাজি, দলবাজি, দখলবাজির ঘটনাও কম নয়। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে তার কিছুটা দেখা গেছে।
১/১১ প্রসঙ্গ কেন আসছে এমন প্রশ্নে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই প্রধান দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থান। তারা যদি একরোখাভাবে নিজেদের অবস্থানে বসে থাকে, কোনো সমঝোতায় না আসে, তাহলে অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটবে। এর পরিণতি কি ১/১১, নাকি অন্য কিছু, তা নির্ভর করে শেষ মুহূর্তের ঘটনাবলির ওপর।
দেশের বিশিষ্টজনদের মতে, ২০০৭ এর ১/১১ পরবর্তীতে সার্বিক পরিস্থিতি এক বিন্দুও এগোয়নি। বরং বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগামী দিনে ওয়ান ইলেভেনের চেয়েও ভয়াবহ বিপর্যয় দেখছেন বিশিষ্টজনরা। বিশেষত নির্বাচন প্রশ্নে বড় দু’দলের মধ্যে যে ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তাতে সঙ্কট বাড়বে। তাদের মতে যেখানে টেকসই গণতন্ত্র নেই, রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা নেই সেখানে এক এগারোর মতো অশুভ তারিখের বারবার ফিরে আসা অস্বাভাবিক নয়।
সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, যে গুণগত পরিবর্তনের কথা অলোচনায় ছিল তা একবিন্দুও হয়নি। ক্ষমতা কেন্দ্রীভ‚ত হওয়ার প্রবণতা আরও বেড়েছে। ক্ষমতায় থাকার আকাক্সক্ষার পাশাপাশি অসহিষ্ণুতাও বেড়েছে। দেশ চলছে অনেকটাই একনায়কতন্ত্রের আমেজে। গণতন্ত্র আছে; সংসদও আছে। তবে তা চলছে শুধুই প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তিতে। গণতন্ত্রে মূল্যবোধের ভিত্তি একবিন্দুও এগোয়নি।
২০০৭ সালে রাজনৈতিক অনিশ্চিয়তার মধ্যে দৃশ্যপট বদলে যায় বাংলাদেশে। বড় দু’দলের দ্বিমুখী অবস্থানে সংঘাত গড়ায় মাঠে। আসে ওয়ান ইলেভেন। এদিন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। পরে ড. ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়। দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গ্রেপ্তার হন দুই নেত্রী শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়াসহ প্রায় ১৫ হাজার রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী। মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নেরও চেষ্টা হয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ওয়ান ইলেভেন এখনও আলোচনায়। ওয়ান ইলেভেন-পরবর্তী প্রেক্ষাপট কারও অজানা নয়। বাংলাদেশে আবারও নির্বাচন প্রশ্নে বিতর্ক চলছে। রাজনীতির আকাশে নানা দুর্যোগের রেখা। কি হতে চলেছে?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ