পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্কভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বেশ বেড়েছে। প্রথমবারের মতো গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) ১০০ কোটি ডলারের ঘর ছাড়িয়েছে। আর আগের অর্থবছরের তুলনায় রফতানি বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ, যেখানে বাংলাদেশের সার্বিক রফতানিতে প্রায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, নানা সুবিধা বিবেচনায় ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলকও যথেষ্ট কম। দেশের মোট রফতানি আয়ের ৩ শতাংশেরও কমে গেছে এ অঞ্চলে। সার্কের মধ্যে রফতানি বলতে আবার ভারতসর্বস্ব। আট জাতির এই জোটে মোট রফতানি আয়ের ৮৭ ভাগই এসেছে ভারত থেকে। বাকি ছয় দেশে রফতানি হতাশাজনক। তবে রফতানিতে কিছুটা গতি আসায় উদ্যোক্তারা খুশি। পর্যায়ক্রমে রফতানি প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়বে বলে তারা আশাবাদী।
নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য এলাকা চুক্তি সাফটার সুবিধা কার্যকর রয়েছে। এর বাইরে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে পণ্য পৌঁছাতে সাশ্রয়ী অর্থ ব্যয় ও সময়ের সুযোগও রয়েছে। তারপরও কাক্সিক্ষত হারে রফতানি না বাড়ার পেছনে অশুল্ক, আধা-শুল্ক বাধা এবং কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক বাধা রয়েছে। এ ছাড়া রফতানিকারকরাও প্রতিবেশী দেশগুলোতে যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছেন না। দুর্বল আঞ্চলিক সংযোগও বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতার একটা বড় কারণ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে সার্কের বাকি সাত দেশে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি হয়েছে ১০৪ কোটি ডলারের কিছু বেশি। আগের অর্থবছরের (২০১৬-১৭) তুলনায় রফতানি বেশি হয়েছে ২০ কোটি ডলার। ওই অর্থবছরে রফতানি ছিল ৮৪ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ শতাংশ। গত অর্থবছরে ভারতে ৮৭ কোটি ৩২ লাখ ডলারে পণ্য রফতানি হয়েছে। বাকি ছয় দেশে রফতানি হয়েছে মাত্র ১৭ কোটি ডলারের পণ্য। এর মধ্যে পাকিস্তানে সাত কোটি ডলার, নেপালে চার কোটি ৫২ লাখ ও শ্রীলংকায় তিন কোটি ডলারের কিছু বেশি। বাকি দেশের মধ্যে আফগানিস্তানে সাত লাখ ডলার, মালদ্বীপে পাঁচ কোটি ও ভুটানে চার লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর সেলিম রায়হান বলেন, লিড টাইমের সুবিধা এবং উৎপাদিত পণ্যের মান ও ধরনের সুবিধায় সার্কে বাংলাদেশের রফতানি কয়েক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারত। শুধু ভারতে আরও অনেক বেশি রফতানির সুযোগ আছে। তবে ভারতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হলেও অসংখ্য অশুল্ক বাধা আছে। পণ্যের মানসনদ জটিলতার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কলকাতায় মাছ রফতানি করতে ত্রিপুরায় নমুনা পাঠিয়ে সনদ নিতে হয়। প্রায় সব পণ্যেই এই সনদ জটিলতা আছে। এ ছাড়া পাটপণ্যে অ্যান্টিডাম্পিং আরোপ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।