পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রেফতারের পর নিজেকে অমর দাশ দাবি করে আসামি স্বপন দাশ। তিন বছর জেল খেটে কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পান। এরমধ্যে আদালতে ২২ বছরের সাজা হয়ে যায় তার। সাজা পরোয়ানা পেয়ে পুলিশ ধরে এনে জেলে পাঠায় অমর দাশকে। প্রায় দেড় মাস জেল খাটার পর পুলিশ নিশ্চিত হয় অমর দাশ নিরপরাধ, অপরাধী স্বপন দাশ। অবশেষে গতকাল (মঙ্গলবার) স্বপন দাশকে পাকড়াও করে পুলিশ। পুলিশের জেরার মুখে নিজেকে বাঁচাতে কৌশলে চাচাতো ভাই অমর দাশকে ফাসিয়ে দেয়ার কথা অকপটে স্বীকার করে সে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে ২২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি স্বপন দাশ। নগরীর সদরঘাট থানার ওসি মোঃ নেজাম উদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, অপরাধী স্বপন দাশের এ প্রতারণা সিনেমার গল্প-কাহিনীকেও হার মানায়। টানা এক মাসের অনুসন্ধানে এ প্রতারণা ধরা পড়ে এবং সেইসাথে পাকড়াও হয় প্রকৃত অপরাধী। ওসি জানান, আদালতের সাজা পরোয়ানা নিয়ে অমর দাশকে গ্রেফতারের পর আমরা বুঝতে পারি সে প্রকৃত অপরাধী নয়। এরপর অনুসন্ধান শুরু করি। তবে এরমধ্যে কোন অপরাধ না করেও দেড় মাস জেলে আছে অমর দাশ।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের পর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার হয় স্বপন দাশ। তার সাথে গ্রেফতার হয় আরও তিন আসামি। পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গু হয়ে যায় স্বপন দাশ। ধরা পড়ার পর স্বপন নিজের নাম গোপন করে তার চাচাতো ভাই অমর দাশের নাম উল্লেখ করে। ফলে মামলায় স্বপন দাশের বদলে অমর দাশ লেখা হয়। স্বপন দাশ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার উত্তর বামনডেঙ্গা গ্রামের দেবেন্দ্র জলদাশের ছেলে। অমর দাশ দেবেন্দ্রর ভাই রেবতী জলদাশের ছেলে।
তাদের ডাকাত হিসেবে উল্লেখ করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় তিন বছর জেল খেটে ২০০৭ সালে জামিনে বের হন স্বপন। ২০১৭ সালে অস্ত্র মামলায় ১৭ বছর এবং বিস্ফোরক আইনে ৫ বছরসহ মোট ২২ বছরের সাজা হয় অমরসহ (স্বপন) আসামিদের। এজাহারে অমরের (স্বপন) ঠিকানা লেখা আছে সদরঘাট থানা এলাকায়। সেই হিসেবে জামিনে বেরিয়ে পলাতক অমরের সাজা পরোয়ানা আসে সদরঘাট থানায়।
ওই পরোয়ানামূলে গত ৫ জুলাই অমরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাড়িতে পুলিশ দেখে চমকে উঠে অমর ও তার পরিবারের সদস্যরা। অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে ২২ বছরের সাজা হয়েছে একথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়ে তারা। অমর ও তার পরিবারের সদস্যরা বারবার বলতে থাকে পুলিশের কোন ভুল হচ্ছে। তবে ওয়ারেন্টে নাম-ঠিকানা মিলে যাওয়ায় পুলিশ তাকে ধরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, গ্রেফতারের পর অমর দাশের যে প্রতিক্রিয়া দেখেছি সেটি আমার কাছে অস্বাভাবিক লেগেছে। আর এ কারণে আমি নিজে উদ্যোগী হয়ে অনুসন্ধান শুরু করি। আদালতের অনুমতি নিয়ে ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের সাথে কথা বলি। কারাগারে গিয়ে ২০০৪ সালে গ্রেফতার হওয়া আসামির শনাক্তকরণ চিহ্ন মেলাই। শনাক্তকরণ চিহ্নে মিল পাওয়া যায়নি। এরপর আমরা ওই মামলায় কারাগারে থাকা আসামি মতিনকে দিয়ে অমরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করি। মতিন জানায়-২০০৪ সালে গ্রেফতার হওয়া আসামি (স্বপন) আর অমর একই ব্যক্তি নন।
অমর দাশ অপরাধী নয় এটা নিশ্চিত হয়ে আমরা স্বপন দাশকে ধরতে অভিযানে নামি। গতকাল সকালে নগরীর কদমতলী এলাকা থেকে স্বপনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেফতারের পর বিকেলে স্বপন আদালতে পুরো বিষয় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, এখন নিয়ম অনুযায়ী আমরা পুরো বিষয়টি উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন দেব। আর এর মাধ্যমে নিরপরাধ অমর মুক্তি পাবেন বলে আশা করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।