২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
শরীর ঠিক রাখতে শারিরিক সঞ্চালন খুবই জরুরি। প্রাকৃতিক নাড়াচাড়া যেমন হাঁটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ শরীরের জন্য। শারিরিক শ্রম দেহের ক্যালরি ও চর্বি খরচ করে শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। মনকে করে তোলে প্রফুল্ল। কিন্তু কম্পিউটার ল্যাপটপ বা ইন্টারনেট আমাদের শারীরিক যন্ত্রটাকে স্থবির করে তুলছে। দীর্ঘসময় বসে থেকে আমরা ঢ়ড়ংঃঁৎধষ ফুংভঁহপঃরড়হ ংুহফৎড়সব (চউঝ) এ আক্রান্ত হচ্ছি। চল্লিশের আগেই ভুগছি ঘাড় কোমরসহ শারীরিক ব্যথায়। ভুল দেহ ভঙ্গিমা শারীরিক শ্রম না করা বা স্বাস্থ্যসম্মত খ্যাদ্যাভাস গড়ে তুলতে না পারাই শারীরিক ব্যথার মূল কারণ।
পরিত্রাণের উপায় কী : সঠিক দেহ ভঙ্গিমা আর শারীরিক শ্রম। কিন্তু চাইলেই কি তা সম্ভব। একজন ব্যাংকারকে প্রায় ১২-১৬ ঘণ্টা বসে কাজ করতে হয়। একইভাবে পোশাক শিল্পিদের টানা দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ করতে হয়। মালিক শ্রমিক সুসম্পর্কটা জরুরি। শারীরিক প্রয়োজনে কাজের ধরণ বদলিয়ে শ্রমিককে সুযোগ করে দিতে হবে। সচেতন হতে হবে রোগীকেও। যেমন : একভাবে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হলে পায়ের নীচে ছোট চৌকি রাখা যেতে পারে। চৌকির উপর এক পা তুলে পা কে বিশ্রাম দেয়া যেতে পারে। তাছাড়া যারা দীর্ঘ সময় বসে কাজ করেন তারা আরাম কেদারা ব্যবহার না করে কঠের চেয়ার ব্যবহার করুন। পিঠ সোজা রেখে বসুন। সামনে ঝুঁকে কাজ পরিহার করুন। এতে ঘাড় কোমর দুটোই বাঁচবে। যানজটে পড়লে দীর্ঘ সময় পা গুটিয়ে বসে থাকতে হয়। তাই যানবাহন থেকে বাসা বা অফিসের সামান্য আগেই নেমে পড়–ন এবং বাকি রাস্তাটুকু হেঁটে যান, দেখবেন অনেকক্ষণ বসে থাকার ক্লান্তিটা দূর হয়ে গেছে নিমিষেই।
চিকিৎসা কখন প্রয়োজন : জীবনে কোন দিন কোমর বা ঘাড় ব্যথায় ভোগেননি এমন মানুষ মেলা ভার। সামান্য টুকটাক ঘাড় কোমর ব্যথা হতেই পারে। এগুলো এমনিতেই চলে যায়। কিন্তু ব্যথা যদি স্বাভাবিক কর্মকা-কে ব্যাহত করে তবে তা আমলে নিতেই হবে। কোন অবস্থাতেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথানাশক সেবন ঠিক না। হঠাৎ ব্যথা শুরু হলে বিশ্রামে চলে যান। বিশেষ প্রয়োজন হলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন। আপনার পাকস্থলি, কিডনি রোগ উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস আছে কিনা তা চিকিৎসকে জানাতে ভুলবেন না। পূর্ণ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন রোগ নির্ণয়। বসার ধরণ কাজের ধরণ শোয়ার অভ্যাস আঘাত হাড় ক্ষয় মেরুদ-ের অব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কারণে ঘাড় কোমর হাঁটু, কাঁধ ইত্যাদি ব্যথা হতে পারে। রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা আর চিকিৎসার মেয়াদ।
ফিজিওথেরাপি কখন নেবেন : শারীরিক ব্যথার প্রাথমিক চিকিৎসা হলো ফিজিওথেরাপি। অনেকে ফিজিওথেরাপিকে জটিল করে তোলেন। ভাবেন, ব্যথার ওষুধ অকার্যকর হলেই ফিজিওথেরাপি নিতে হয়। কিন্তু ব্যাপারটি উল্টো। সাধারণ কারণে ব্যথায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য ব্যথা নিরাময়ই মূল শর্ত। আর ব্যথা নিরাময়ের আধুনিক অস্ত্র হলো ফিজিওথেরাপি। এটি কোন উপদেশ বা পরামর্শ নয়, পরিপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি। এমন অনেক শারীরিক ব্যথাই আছে যা এক সেশন ম্যানিপুলেশন দিয়েই সারিয়ে তোলা সম্ভব। তাই শারীরিক ব্যথা ফিজিওথেরাপিই প্রাথমিক চিকিৎসা। তবে শারীরিক পরীক্ষায় জটিলতার আভাস পাওয়া গেলে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, এম আর আই, এক্সরে ইত্যাদির প্রয়োজন হতে পারে। নিতে হতে পারে শল্যবিদের পরামর্শ বা সহায়তা।
ষ ডা. মোহাম্মদ আলী
বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি বিভাগ
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসতাপাতাল
হাসনা হেনা পেইন এন্ড ফিজিওথেরাপি রিসার্চ সেন্টার (এইচ পি আর সি)
বাড়ি-১, শায়েস্তাখান রোড, সেক্টর-৪, উত্তরা, ঢাকা। মোবাইল : ০১৮৭২ ৫৫৫ ৪৪৪, ০১৭৩২ ৭৬২ ৩৩৩। ইমেইল : যঢ়ৎপ২০০৫@ষরাব.পড়স
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।