Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মধুর মধ্যে মানুষের শেফা রয়েছে

মুনশী আবদুল মাননান | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম | আপডেট : ১২:১১ এএম, ১০ আগস্ট, ২০১৮

খাদ্য হিসেবে মধু সববয়সী মানুষেরই প্রিয়। বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবেও মধুর প্রচলন রয়েছে। তাবৎ চিকিৎসাশাস্ত্রেই মধুর গুণাগুণ ব্যাখ্যাত হয়েছে। আধুনিক কালের চিকিৎসাসম্পর্কিত গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, মধু অগণিত রোগের ওষুধ। এর মধ্যে ভিটামিন এ, বি, সি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। মধু কুষ্ঠকাঠিন্য দূরকারী বাত-ব্যথা উপশমকারী এবং দুর্গন্ধ বিনাশকারী। মধু শরীর ও ফুসফুসকে শক্তিশালী করে, রুচি বৃদ্ধি করে এবং শক্তিসামর্থ্য স্থায়ী করে। কাশি, হাঁপানি ও ঠাÐা রোগের জন্য মধু বিশেষভাবে উপকারী। মধু মুখ ও দেহের পক্ষাঘাত রোগের প্রতিষেধক। মধু রক্ত পরিষোধণকারী এবং মানসিক রোগের জন্যও উপকারী। এটা পেটের ব্যথা ও রোগের জন্যও অত্যন্ত কার্যকর। মধু চক্ষু রোগ নিরাময় ও দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির মহৌষধ।
পবিত্র কোরআনে মধুর ওষুধিগুণ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে, কোরআনে একটি সূরার নাম ‘নাহল’ অর্থাৎ মধুমক্ষিকা। ওই সূরার ৭৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে। মধুর মধ্যে মানুষের শেফা রয়েছে। চৌদ্দ শ’ বছরেরও আগে যখন চিকিৎসাবিজ্ঞান এখনকার মতো অগ্রসর ছিল না, তখন আল্লাহপাক কোরআনের মাধ্যমে মানবমÐলীকে জানিয়ে দেন, মধু শেফা দানকারী।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধুর অনেক প্রশংসা করেছেন। ওষুধ হিসেবে মধু ব্যবহারের নির্দেশনাও দিয়েছেন। হজরত আবু হুরাইরা রা. বর্ণিত একটি হাদিস থেকে জানা যায়, হুজুর সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিনদিন সকাল বেলায় মধু চেটে পান করে তার কোনো কঠিন রোগব্যাধি হবে না।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা দুটি শেফাদানকারী বস্তুকে নিজেদের জন্য আবশ্যকীয় করে নাও। একটি মধু এবং অপরটি কোরআন। এই হাদিসের ব্যাখায় ব্যাখ্যাকাররা বলেছেন, মধু মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও দৈহিক রোগব্যাধি মুক্তির অব্যর্থ মহৌষধ আর কোরআন দুনিয়া ও আখেরাতে সাফল্যের জন্য অপরিহার্য, মহানবী সা. এটাই এই হাদিসে বলেছেন।
হজরত আবু সায়ীদ কুদরী রা. বর্ণিত একটি হাদিস সংক্ষেপাকারে এরূপ : একদিন এক ব্যক্তি হুজুরপাকের কাছে এসে বলেন, তার ভাইয়ের পেট ব্যথা, সে আমাশায় ভুগছে। হুজুর সা. তাকে মধু পান করাতে বলেন। ওই ব্যক্তি পরে এসে জানাল, মধু পান করানোর পর কোনো উপকার হয়নি। হুজুর সা. আবারো তাকে মধু পান করাতে বলেন। এভাবে চতুর্থবার সেই ব্যক্তি হুজুর সা. এর খিদমতে এসে একই কথা বলেন। তখন তিনি বলেন, আল্লাহতায়ালা সত্যই বলেছেন, হয়তো তোমার ভাইয়ের পেটই মিথ্যা। অত:পর ওই ব্যক্তি পুনরায় মধু পান করালে সে সুস্থতা লাভ করে। এই হাদিসের শেষে বলা হয়েছে, সে মধু পান করল এবং সুস্থ হয়ে গেল।
হজরত নাফে রা. এর একটি বর্ণনায় জানা যায়, হজরত ইবনে ওমর রা. এর যখনই কোনো ফোঁড়া, পাচড়া বা অন্য কিছু বের হতো, তিনি তার ওপর মধু লাগিয়ে দিতেন এবং পবিত্র কোরআনের এই আয়াতটি পাঠ করতেন : তোমাদের মালিক মৌমাছিদের বার্তা দিয়েছেন, তোমরা ঘর বানাও পর্বতে ও বৃক্ষে আর মানুষের নির্মিত আশ্রয় বা স্থাপনায়। অত:পর সবধরনের ফলফলাদি থেকে আহার করো এবং তোমাদের মালিকের প্রদর্শিত পথগুলোতে শান্তিতে চলাচল করো। মৌমাছিদের পেট থেকে রঙ বেরঙয়ের পানীয় বের হয়। যার মধ্যে মানুষের শেফা ও রোগমুক্তি রয়েছে। সূরা নাহল : আয়াত ৭৯।
আল্লাহতায়ালা ও রাসূল সা. এর এই চিকিৎসাবিধান অনুসরণ করে মানুষ অনেক রোগব্যাধি থেকে শেফা লাভ করতে পারে।



 

Show all comments
  • সাইফ ১০ আগস্ট, ২০১৮, ২:২৪ এএম says : 1
    মধু চক্ষু রোগ নিরাময় ও দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির মহৌষধ।
    Total Reply(0) Reply
  • হাবিব ১০ আগস্ট, ২০১৮, ২:২৬ এএম says : 1
    কোরআন হাদিসের রেফারেন্সসহ এই লেখাটির জন্য ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Kayum Khan ১২ আগস্ট, ২০১৮, ৯:৪৪ এএম says : 0
    মহানবী (সঃ) বলেছেন যে “ মধু এবং কালোজিরা একমাত্র মৃত্য ব্যতীত সকল রোগের মহা ঔষধ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মধুর


আরও
আরও পড়ুন