নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশের একেকটি রান কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের একেকটি উইকেটের পর গ্যালারিতে শোনা যায় গর্জন। ফ্লোরিডার লডারহিল যেন হয়ে উঠেছিল এক টুকরো বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেই সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, দ্বিতীয় বাড়িতে খেলবে বাংলাদেশ। সিপিএলে খেলার সুবাদে ফ্লোরিডার লডারহিলের মাঠ সাকিবের চেনা ছিল ভালোমতোই, আর যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাঙালিদের সমর্থন তো আছেই। আজ সত্যিই সত্যিই সেই সমর্থন দেখা গেল অকুন্ঠভাবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ১২ রানের জয়ের পর ম্যাচ শেষে সাকিব তাই বললেন, মনেই হয়নি বাংলাদেশের বাইরে খেলছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই মাঠে আগে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলেও কখনো খেলেনি বাংলাদেশ। অভিষেক ম্যাচ বলে কথা, বাংলাদেশিরা তাই দল বেঁধে এসেছিলেন খেলা দেখতে। শুধু ফ্লোরিডা নয়, অনেক দূরের রাজ্য থেকেও অনেকে এসেছিলেন। চার হাজার দর্শকে লডারহিলের মাথে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। বাংলাদেশের প্রতিটি চার-ছয়ে দর্শকেরা উৎসাহ দিয়েছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিটি উইকেট পতনে ফাটিয়েছেন গলা। কাগজে কলমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্বাগতিক হলেও আসলে বাংলাদেশই যেন ছিল স্বাগতিক।
ম্যাচ শেষে সাকিব তাই বললেন, দর্শকের সমর্থন বড় ব্যাপার ছিল, ‘দর্শক একটা বড় ব্যাপার ছিল, আমার মনেই হয়নি দেশের বাইরে খেলছি। মনে হয়েছে যেন বাংলাদেশেই আছি। আশা করি কালও (আজ) আমরা এ ধরনের সমর্থন পাব।’ বাংলাদেশের দেওয়া ১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ থামে ১৫৯ রানে। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হারের পরও বিশ্বাস হারাননি, দলের জয়ে সব বোলারের সমান অবদান দেখেন সাকিব, ‘সেন্ট কিটসে হারের পরেও নিজেদের ওপর আমার আস্থা ছিল। জানতাম, ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলকে হারাতে পারব। আবু হায়দার আর অন্যরা দারুণ বল করেছে। মুস্তাফিজ খরুচে হলেও গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছে।’
সেন্ট কিটসে প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়া বাংলাদেশের শরীরী ভাষাই ছিল এদিন অন্য রকম। সাকিব জানান, সেই ম্যাচে হারার পর নিজেদের মধ্যে কথা বলার সুফল মিলেছে ফ্লোরিডায়, ‘সেন্ট কিটসে হারার পর আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলেছিলাম। আমরা একমত হয়েছিলাম যে, এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে হারানো সম্ভব। আমার মনে হয়, মানসিকতা মুমেন্টামে পরিবর্তন এনে দিয়েছে।’
৪৪ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে ম্যাচ সেরা হওয়ার পর তামিমও বললেন, ঘরের মাঠে খেলার স্বাদ পেয়েছেন, ‘পিচটা খুবই ভালো লেগেছে আমার, প্রথম বার ফ্লোরিডায় খেলেছি। আগের ম্যাচে শুরুতে আউট হয়ে গিয়েছিলাম, আজ ওই ভুল করিনি। সাকিবের ইনিংসটা দারুণ ছিল, আমার ওপর থেকে চাপ অনেক কমিয়ে নিয়েছে ওটা।’
ম্যাচ জয়ের পর বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান মনে করছেন, চাপে পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ‘চাপটা অবশ্যই ওদের ওপর পড়ছে। ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আমরা জয় পায়নি। তবে, এই ম্যাচ জয়ে আমরা সিরিজে ফিরেছি।’ টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। তবে নিজেদের দিনে যে কোন দলকেই হারানোর সামর্থ্যরে কথা জানিয়ে দিলেন তামিম, ‘টি-টোয়েন্টিতে ওরা বিশ্বের অন্যতম সেরা দল, এটা স্বীকার করতেই হয়। তবে, নিজেদের সেরাটা দিয়ে যে কোনও দলকেই আমরা হারাতে পারি। ম্যাচ জয়ের পর আমাদের আত্মবিশ্বাসটাও বেড়েছে। তবে এই ম্যাচে জয় পাওয়া মানে এই নয় যে, পরের ম্যাচটাও আমরা জয় পাবো।’
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে রান যোগ করার আগেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তামিমকে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ভালভাবেই ফিরেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান, ‘দারুণ সুযোগ পেয়েও খেলতে পারিনি (প্রথম ম্যাচে)। তবে আজকে ধৈর্য ধরে, সময় নিয়ে লম্বা ইনিংস খেলার চেষ্টা করেছি।’ এক প্রান্তে তামিম খেলছিলেন দুর্দান্ত; কিন্তু যোগ্য সঙ্গ মিলছিল না অন্য প্রান্তে। সাকিব অষ্টম ওভারে ক্রিজে আসার পর সে সমস্যা মিটে যায়। শুরু থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া বাংলাদেশ অধিনায়ককে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তামিম, দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাটিং ছিল অবিশ্বাস্য। সাকিবের ঝড়ো শুরু সুর বেঁধে দিয়েছিল তাদের জুটির, ‘সাকিব অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছে। ও আমার ওপর থেকে চাপ অনেকটাই সরিয়ে নিয়েছিল। ক্রিজে আসার পর থেকেই ওকে খুব ভালো মনে হচ্ছিল। ওর শুরুর বাউন্ডারিগুলোতে আমরা মুমেন্টাম পেয়ে যাই।’
প্রথমবারের মতো তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। তামিম মনে করেন, সবাই নিজের দায়িত্ব পালন করলে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করা সম্ভব, ‘কাল (আজ) আবার নতুন খেলা হবে, যারা ভালো শুরু করবে, যারা সব বিভাগে ক্লিক করবে তারাই জিতবে। সিরিজ জিততে কাল আবার শুরু থেকে সব কাজ ঠিকঠাক করতে হবে। যাদের যে দায়িত্ব তা পুরোপুরি পালন করতে হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।