মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আসামে এনআরসি প্রশ্নে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এই দুইজনের মধ্যে মত বিরোধ চরমে পৌঁচেছে। একজন তৃণমূল নেত্রী, অন্যজন বিজেপি নেতা। একজন বাঙালি, অন্যজন অসমিয়া। আসামের এনআরসি ইস্যু নিয়ে তারা উভয়েই এখন রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন। চলছে বাদানুবাদ। সর্বশেষ পাল্টা-পাল্টি আইনি লড়াই।
গত বৃহস্পতিবার আসামের পুলিশ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআর করেছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের নির্দেশে এসব হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। আসামের লখিমপুর, পানবাজার ও বশিষ্ঠ থানায় এসব এফআইআর হয়েছে। মমতার অপরাধ, তিনি গত সোমবার আসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) প্রকাশিত হওয়ার পর অশালীন মন্তব্য করে আসামের মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চেয়েছেন। তাই আসাম সরকার মমতাকে ঘায়েল করার জন্য তিনটি থানায় তিনটি এফআইআর করেছে।
আসামের এনআরসি তালিকা থেকে ৪০ লাখ বাঙালির নাম বাদ যাওয়ায় ক্ষুব্ধ মমতা বলেছিলেন, তিনি এটা মানেন না। এটি বাতিল চান। এভাবে ৪০ লাখ বাঙালিকে আসাম থেকে বিতাড়নের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার। তিনি বলেন তিনি এর শেষ দেখে নেবেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা এবং তাঁদের কথা শোনার জন্য গত বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের আটজনের একটি প্রতিনিধিদলকে আসামে পাঠান। বেলা দুইটার দিকে প্রতিনিধিদলটি আসামের বাঙালি-অধ্যুষিত শিলচর বিমানবন্দরে নামে। কিন্তু আসাম পুলিশ প্রতিনিধিদলের সদস্যদের বিমানবন্দর থেকে বের হতে দেয়নি। কার্যত আটকে রাখে। এ নিয়ে বাগ্বিতন্ডার এক পর্যায়ে পুলিশ তাঁদের ওপর চড়াও হয়। তাঁদের হেনস্তা করে, মারধর করে। এমনকি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। রাতভর তাঁদের বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয়। ১৯ ঘণ্টার পর গতকাল শুক্রবার ভোরে তাঁদের জোর করে ফেরত পাঠানো হয়। এর মধ্যে ছয়জন চলে আসেন কলকাতা আর দুজন চলে যান দিল্লিতে।
কলকাতায় ফিরে আসার পর এই প্রতিনিধিরাও কলকাতার দুটি থানায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআর ঠুকে দেন। অভিযোগ করা হয়, সর্বানন্দের নির্দেশেই বাংলার আট প্রতিনিধিকে হেনস্তা করা হয়। মারধর করা হয়। বেআইনিভাবে বিমানবন্দরে আটকে জনপ্রতিনিধিদের অধিকারে বাধা দেওয়া হয়, যেটা অগতান্ত্রিক। এমনকি হেনস্তার পাশাপাশি শ্লীলতাহানি এবং মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও ওঠে।
কলকাতার আলীপুর থানায় এই নিয়ে এফআইআর করেন বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। এয়ারপোর্ট থানায় আরও দুটি এফআইআর দায়ের করেন সংসদ সদস্য কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও সংসদ সদস্য মমতাবালা ঠাকুর। ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
শিলচরে তৃণমূলের আট জনপ্রতিনিধিকে হেনস্তা এবং আসামের এনআরসি তালিকা বাতিলের দাবিতে তৃণমূল কংগ্রেস গতকাল শনিবার এবং আজ রোববার রাজ্যব্যাপী ‘কালা দিবস’ পালনের ঘোষণা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে এই দুদিন গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারন ও মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানাবেন। আর স্লোগান তুলবেন, ‘দানবিক সরকার, আর নেই দরকার’।
এই কালা দিবস পালনের ঘোষণা দিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, আসামে শুধু মুসলিম নয়, ওই রাজ্যে সাড়ে ১২ লাখ হিন্দুর নামও কাটা গেছে। নাম কাটা গেছে শিখ, নেপালিদেরও।
অন্যদিকে, আসামে ৪০ লাখ বাঙালির নাম বাদ দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। তারা দাবি করেছে, ওই ৪০ লাখ নামকাটা মানুষের মধ্যে ১৩ থেকে ১৪ লাখ রয়েছে মতুয়া সম্প্রদায়ের।
এদিকে গতকাল কলকাতায় আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি চালু করার দাবিতে মিছিল বের করে বিজেপির যুব ও নারী মোর্চা। শুধু তা-ই নয়, বিকেলে বিজেপির নেতারা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির সঙ্গে দেখা করে এই রাজ্যে এনআরসি চালুর দাবি করেন।
এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ মমতা বিজেপিকে এক হাত নেন। তিনি বলেন, ‘ওরা কারা? বাংলার রাজনীতিতে কী গুরুত্ব রয়েছে ওদের। কেউ চেনে না। কয়েকটি গুন্ডার দল। নিজেদের অস্তিত্ব নেই। তারা আবার নাগরিক পঞ্জির দাবি করেছে?’ এরপরই মমতা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘দেখি কীভাবে ওরা বাংলায় নাগরিক পঞ্জি কার্যকর করে?’ মমতা আরও বলেন, ‘এ তো বিজেপির শেষের শুরু। ওরা অবসাদে ভুগছে। চাপে পড়ে গেছে। তাই ওরা পেশিশক্তির আস্ফালন করছে। আর বেশি দিন ক্ষমতায় নেই বিজেপি।’ ওয়েবসাইট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।