Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্দোলন এখন সারাদেশে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

সারা দেশের স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার পরেও গতকাল পঞ্চম দিনের মতো রাজপথে নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অবস্থানে অচল হয়ে পড়ে পুরো নগরী। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে চলমান এ আন্দোলনে গতকালও রাজধানীতে বেশিরভাগ গণপরিবহনকে রাস্তায় দেখা যায়নি। এতে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অফিসগামীদের। এরপরও দুর্ভোগের শিকার নগরবাসী বলছেন, শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। আন্দোলন আমরা সমর্থন করি। পরিবহন সেক্টরের এ নৈরাজ্যের সমাধান হওয়া জরুরী। আন্দোলনের সমর্থনে অনেক নারীরাও ঘর ছেড়ে নেমে আসেন রাজপথে। এ ছাড়াও অভিভাবক, শিল্পীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ রাজপথে নেমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন। গতকাল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ এবং অভিনব। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে তারা গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করেছেন। তাদের কথা মতো ট্টাফিক সার্জেন্টকে মামলা নিতে দেখা গেছে। ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের মুখে ঘাতক বাসের মালিক শাহাদত হোসেন ও চালকদের র‌্যাব-পুলিশ গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকালে অল্প সংখ্যক গাড়ি চলাচল করলেও বেলা ১১টার পর তা একেবারে কমে আসে। ওদিকে সকাল থেকে রাস্তা দখল নিয়ে শিক্ষার্থীরা গাড়ি ও চালকের লাইসেন্সসহ বিভিন্ন কাগজপত্র তল্লাশী ও যাচাই করে। তবে অনেক পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ি নিয়ে আটকে থাকতে হয় চালককে। লাইসেন্স না থাকায় বিপাকে পড়তে হয় মন্ত্রী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসারসহ বিভিন্ন সরকারী সংস্থার গাড়ি চালকদেরও। শিক্ষার্থীদের গাড়ির কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স তল্লাশী করার কারণে ভয়াবহ এ চিত্র ফুটে উঠে। রাজধানীসহ দেশের বেশ কিছু শহরের অচল অবস্থা দূর করতে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক দুঘর্টনায় নিহত মিমের বাবা-মা ও আবদুল করিমের মাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন। এর পর পরই মিমের বাবা ও করিমের মা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহŸান জানান। একই সাথে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহŸান জানানো হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ্য থেকে। এছাড়া পুলিশের সকল গাড়ি চালককে লাইসেন্সসহ গাড়ির সকল কাগজপত্র সাথে রাখাও নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার। বিমানবন্দর সড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রাস্তায় নেমেছেন অনেক অভিভাবকও। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাবার, পানি, স্যালাইন এবং বিস্কুট বিতরণ করতে দেখা গেছে অনেক অভিভাবককে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎফুল ও প্রেরণা সৃষ্টি হয়। রাজধানীর বাইরেও শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলন চলছে। সাভার, গাজীপুর, টঙ্গী, রংপুর, ফেনী, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা রাজপথে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে। সেখানেও তারা গাড়ির কাগজপত্র চেক করছেন। বিভিন্ন ¯েøাগান দিচ্ছেন তারা।
ক্লাস না থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ড্রেস ও কাঁধে ব্যাগ নিয়েই বিক্ষোভে যোগ দেন শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে নগরীর উত্তরা, মৌচাক, মালিবাগ, মগবাজার, শাহবাগ, সাইন্সল্যাব, গুলশান, রামপুরা, মহাখালী, ফার্মগেট, আসাদগেট, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনটা দেখা গেছে। বেলা ১১টার পর থেকে উত্তরা জসীমউদ্দিন রোড মোড় থেকে হাউজ বিল্ডিং পর্যন্ত পুরো সড়ক শিক্ষার্থীরা দখলে নিয়েছে। ফলে উত্তরা হয়ে ঢাকায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যা চলে বিকেল পর্যন্ত। মহাখালীতে রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনের কাগজ ও চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করেন শিক্ষার্থীরা। গাড়ির কাগজপত্র সব ঠিক থাকলেই কেবল গাড়িগুলো যেতে দেন তারা।
নগর পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার রায় জানান, বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো আজও পুলিশ ধৈর্যের সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চলছে। একই অবস্থা মহাখালীতেও। কোনো ভাঙচুর নেই, তবে কাগজ ছাড়া রক্ষা নেই। মিরপুরে রিকশা লেন মেনে চলা, পথচারীকে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা নিশ্চিত করছে খুদেরা। পথচারীরাও শিক্ষার্থীদের কর্মকান্ডকে ভলেন্টিয়ারের কাজ হিসেবেই তুলনা করেছেন। এদিকে কাকরাইল-বেইলি রোড মোড়, রামপুরা, মৌচাক, মালিবাগ ও মগবাজার এলাকার সড়কও দখলে রয়েছে আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, স্কুল বন্ধ থাকা সত্তে¡ও বিবেকের তাড়নায় নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার দাবিতে তারা রাস্তায় নেমেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ অনেককেই বিক্ষোভে অংশ না নিতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন।
মামলা নেয়ার পুলিশ নেই
সায়েন্স ল্যাব মোড়ে চালকের লাইসেন্স না থাকায় বাস, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল আটকে রাখছে শিক্ষার্থীরা। তবে এসব যানবাহনের চালকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার জন্য পুলিশকে তারা খুঁজে পায়নি। দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা একটি গাড়ি আটক করে। গাড়ির ভেতরে ছিলেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এটা আমাদের জেলা প্রশাসনের গাড়ি নয়। আমরা গাড়িটি ভাড়া করেছি। গাড়ি ভাড়া করার সময় চালক জানিয়েছিল লাইসেন্স ও কাগজপত্র ঠিক আছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তাঁর কথায় গরমিল আছে। কয়েকজন ছাত্র বলেন, আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি। মিটারে সিএনজিচালিত অটোরিকশা না যাওয়া এক ধরনের অপরাধ। তাই তাঁর শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু মামলা দেয়ার জন্য যথাযথ কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। বেলা আড়াইটার দিকে মিরপুর রোডে ল্যাব এইডের সামনে পুলিশ বক্সে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্টের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগ্বিতান্ডা হয়। একপর্যায়ে ছাত্ররা ট্রাফিক সার্জেন্টের ব্যবহৃত সাদা রঙের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ওই পুলিশ সার্জেন্টকে তারা মারধর করে। একপর্যায়ে ওই পুলিশ সার্জেন্ট ল্যাব এইডের সামনে থেকে সায়েন্স ল্যাবের দিকে দৌড়ে পালান। শিক্ষার্থীরাও ধাওয়া দেয়। পরে পোড়ানো মোটরসাইকেলটি পুলিশের কন্ট্রোল প্যানেলের সামনে এনে রাখে তারা।
খাবার নিয়ে অভিভাবকরাও রাজপথে, একাত্ব শিক্ষার্থীদের সাথে
দুপুরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাবার, পানি, স্যালাইন এবং বিস্কুট বিতরণ করতে দেখা গেছে অনেক অভিভাবককে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎফুল ও প্রেরণা সৃষ্টি হয়। খাবার ও পানি নিয়ে আসা অভিভাবকদের একজন নার্গিস আক্তার। ধানমন্ডিতে থাকেন তিনি। তার সন্তনও নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় আন্দোলন করছে। নার্গিস আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, শুধু আমার ছেলেই না, আরও অনেক মায়ের সন্তানেরা ন্যায্য দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। আমি তাদের দাবির সঙ্গে একমত। আমি আশা করি, অন্য অভিভাবকরাও তাদের সন্তানের জন্য নিরাপদ সড়ক চান। শিক্ষার্থীদের খাবার ও পানির বোতল দিচ্ছেন অভিভাবকরাঅন্যদিকে, কয়েকজন তরুণীকে দেখা গেলো খাবারের প্যাকেট নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করতে। পরিচয় জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং এই শিক্ষার্থীদের বড় বোন। আর কোনও পরিচয় নাই।
সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার রাস্তায় কয়েকজন মাকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা যায়। একজনের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘উই আর উইথ ইউ, টিচার্স ফর স্টুডেন্টস, চিলড্রেন্স ফর স্টুডেন্টস। আরেকজনের পোস্টারে লেখা, আই এম এ মাদার, আই ওয়ান্ট জাস্টিস। আরেক মায়ের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা রয়েছে, সাপোর্টিং দ্য ইয়ুথ ইন বিল্ডিং এ সেভ নেশন। উই আর দ্য ৯৯% বেটার ট্যুমরো।
মিরপুরঃ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে। বিকাল ৪টার দিকে মিরপুর-১৩ ও ১৪ নম্বরের মধ্যে বিআরটিএ থেকে কাফরুল থানা হয়ে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের গেইট পর্যন্ত সড়কে এ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় যুবলীগের কর্মীরাও তাদের ওপর হামলা করে। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা মিরপুর ১০ নম্বরের দিকে সরে যায়। এর আগে সকাল ১০টা থেকে মিরপুর সড়কের সায়েন্স ল্যাবরেটরি, লালমাটিয়া, আসাদগেট ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। অবরোধ চলে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতেও। সাইন্সল্যাবরেটরিঃ ধানমÐি, আসাদগেট, মোহাম্মদপুর এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন যানবাহন ও চালকের লাইসেন্সসহ ফিটনেস সংক্রান্ত কাগজপত্র তল্লাশী করেন। যাদের কাগজ ঠিক ছিল তাদের ছেড়ে দেন। এ ছাড়া কাগজ দেখাতে না পারায় অন্যদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। এ সময় বিজিবির দুটি গাড়ির কাগজপত্র ঠিক না থাকায় সেগুলোতে মামলা দেওয়া হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, সাইন্সল্যাব ফুটওভারব্রিজের নিচে সিটি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা কলেজ, গভমেন্ট ল্যাবরেটরি এবং ধানমÐি আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে গাড়ি তল্লাশী চালায়। শিক্ষার্থীদের একটি দল সারিবদ্ধভাবে রিকসা ও অ্যাম্বুলেন্স পার করে দিচ্ছিলেন। এ সময় অনেক অভিভাবককেও সড়কের পাশে বসে শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রতি সম্মতি জানিয়ে ¯েøাগান দিতে দেখা গেছে। ধানমন্ডি-২৭ নম্বর সড়কে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। অভিনেত্রী বন্যা মির্জা ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে এসে আন্দালনকারীদের সাথে সংহতি জানান। মোহাম্মদপুরে বাস স্ট্যান্ড এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ ও গাড়ির কাগজ যাচাই করে পাইওনিয়ার কলেজ, আলহাজ মকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। কাগজপত্র তল্লাশীকালে যারা দেখাতে পেরেছে তাদের যেতে দেওয়া হয় এবং অন্যদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে দুপুর ২টার দিকে সাইন্সল্যাব এলাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একটি গাড়ি আটকিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও কাগজ দেখতে চাইলে চালক তা দেখাতে পারেনি। পরে শিক্ষার্থীরা গাড়ির চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয় এবং গাড়ির ওপর ৯ দফার বিভিন্ন দাবি ও মন্তব্য লিখে দেয়।
শাহবাগঃ বেলা ১১টার পর থেকে শাহবাগে এসে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বৃষ্টি শুরু হলেও তারা তারা শাহবাগ মোড়ে বৃত্ত তৈরি করে অবস্থান করে। যদিও অন্যদিনের মতো যান চলাচল বন্ধ করেনি। রিকশা ও বাস এক লাইনে যাতায়াতের জন্য নির্দেশনা দিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের তারা গাড়ির লাইসেন্স তল্লাশী ও কাগজপত্র যাচাই করছিল। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনেক অভিভাবকে দেখা গেছে শাহবাগ।ে তারা নিজেরাও সন্তানদের সঙ্গে বৃষ্টিতে ভিঁজতে ছিলেন। অনেক অভিভাবককে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের ঠান্ডা পানি ও বিভিন্ন ফলা খাওয়াচ্ছিলেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি গাড়ি লাইসেন্স না থাকায় গাড়িটি আটকে সার্জেন্টকে দিয়ে মামলা করিয়ে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সম্মিলিত ছাত্রী ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলন করতে দেখা গেছে।
ফার্মগেটঃ ফার্মগেট, বিজয়স্বরণী, সংসদভববনের আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও বিভিন্ন গাড়ির কাগজপত্র তল্লাশী করে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও তেজগাও কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তেজগাঁও থানার দুটি গাড়ি আটক করে শিক্ষার্থীরা। পরে বাধ্য হয়ে গাড়ি ১০-১২ জন পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে যায়। রুমানা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা পুলিশের কাছে গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স দেখতে চাইলে তারা জানায় লাইসেন্স নেই বলে জানায়। অন্য আরকেটি গাড়ির সিটবেল্ট নেই এছাড়া লাইসেন্সও দেখাতে পারেনি। এ সময় পুলিশ মামলার হুমকি দিলে তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেই। একজন পুলিশ সদস্য বলেন, আমরা নিয়মিত ডিউটি করছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা গাড়ি আটকে দেয়ায় বাধ্য হয়েই থানায় ফিরে যাচ্ছি।
পুরান ঢাকাঃ এদিকে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড়, বকশি বাজার, সদরঘাটসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করে উদায়ন স্কুল, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরিস্কুল, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেখ বোরহান উদ্দিনসহ আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজসহ অনেককে কাগজপত্র যাচাই করতে দেখা গেছে। জগন্নাথ কলেজ এলাকায় লাইসেন্স দেখাতে না পারায় পুলিশ সদর দফতরের একটি গাড়ি আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, গতকাল সকালে রাজশাহীতেও বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতশত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ইউনিফরম পড়ে নগরীর প্রাণ কেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে তাদের নয় দফা ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধনও এক মিনিট নিরবতা পালন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ তাদের পাশে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভ মানববন্ধন চলাকালে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শিক্ষার্থীদের বলেন, আমি তোমাদের হারাতে চাই না। আন্দোলন সুষ্ঠু ভাবে করতে হবে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়: সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চৌমুহনীতে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক ও আসেপাশের সড়ক অচল করে দেয় ছাত্রÑছাত্রীরা। গতকাল সকাল থেকে বিক্ষোভ ও পরে অবরোধের ফলে দক্ষিনাঞ্চলের সাথে দেশের বিভিন্ন রুটে যানবাহন চলাচল যথেষ্ঠ হ্রাস পেয়েছে। বুধবার একইস্থানে অবরোধ চলাকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করায় বিএমপি’র কোতোয়ালী থানার এসআই হাবিবুর রহমানকে ঐদিন বিকেলেই প্রত্যাহার করা হয়।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ছাত্র বিক্ষোভ আর অবরোধে দিনভর অচল ছিল দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো রাস্তায় নামে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলেও শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব স্কুল কলেজের ইউনিফর্ম পরে ভোর থেকেই রাস্তায় নেমে যায়। অবরোধ, বিক্ষোভ এবং এরপর যানবাহন ও চালকের লাইসেন্স তল্লাশি শুরু করে তারা। এর ফলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো নগরী যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে। বিকেল ৩টার পর শিক্ষার্থীরা ফিরে যায়। এদিকে ১১টার দিকে নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় অবস্থায় নেয় প্রায় হাজার খানেক শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট ও শ্যামলী পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। সেখানেও একই উপায়ে যানবাহনের কাগজপত্র দেখছিল শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে নগরীর টাইগার পাস, বাদামতলী, অলঙ্কার, এ কে খান গেইট, সাগরিকা ও বড় পোল এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহনের লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট পরিক্ষা করে শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিকেল থেকেই ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বাইরেও অন্য লোকজনদের বিক্ষোভে ওয়াসার মোড় ও দুই নম্বর গেট এলাকায় জড়ো হওয়ার আহŸান জানানো হচ্ছিল।
দিনাজপুর অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় আকষ্মিকভাবে দিনাজপুর শহরের ব্যস্ততম লিলিমোড় এলাকায় ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের দাবীতে মানববন্ধন শুরু করে। বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে আসা ছাত্ররা হাতে লেখা প্লাকার্ড নিয়ে সড়কে অবস্থান নিলে যানজটের সৃষ্টি হয়। বন্ধ হয়ে যায় লিলি মোড় হয়ে জেলা প্রশাসন ও আদালত চত্বরে যাওয়ার পথটি। পুলিশ এসে অবরোধকারী ছাত্রদের সাথে কথা বলে বেলা ১২ টা পর্যন্ত তাদের অনুমতি দেয়। এসময় ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। ছাত্রদের সাথে কয়েকজন পথচারীও মানববন্ধনে অংশ নেয়। বিকেল ৪টায় দিনাজপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষনা করার কথা জানিয়ে অবরোধ শেষ করা হয়।
জাবি সংবাদদাতা জানান, নিরাপদ সড়কসহ নয় দফা দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা এই অবরোধ কর্মসূচী পালন করে।
কিশোরগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার সকালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে কিশোরগঞ্জে স্কুল ড্রেস পরা শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নেমে আসতে দেখা গেছে। সাত দফা দাবি আদায়ে আজ সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শান্তিপ‚র্ণ মানববন্ধন কর্মস‚চির অংশ হিসেবে কিশোরঞ্জের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে।
ষ্টাফ রিপোর্টার মাগুরা থেকে জানান, মাগুরায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে সরকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়র্দী কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিন শেষে কলেজ চত্বরে সমাবেশ করে। আর যেন কোন মায়ের বুক খালী না হয় সেই আহবান করে সড়কে চলাচল নিরাপদ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান সমাবেশে ছাত্ররা।
স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেও থামানো গেল না বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের। বৃহস্পতিবার ২ আগস্ট সকাল ১০টা হতে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থান নেয় শত শত শিক্ষার্থী। তারা শহীদ মিনারে অবস্থানের পর চাষাড়া গোল চত্বরে সমাবেশ করে সেখানে আটকে দেয় সকল প্রকার যানবাহন। তবে এদিন আন্দোলনের মাত্রা ছিল একটু ভিন্ন। এদিন শুধু লাইসেন্স চেক করে ছেড়ে দেয় যানবাহন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা হতেই নারায়ণগঞ্জ সরকারী তোলারাম কলেজ, নারায়ণগঞ্জ কলেজ, কমার্স কলেজ, মডেল কলেজ সহ বেশ কয়েকটি কলেজ ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা দলে দলে চাষাঢ়া মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। শহরের চাষাঢ়া গোল চত্ত¡রে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ ও চাষাঢ়া-আদমজী-শিমরাইল সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে নরসিংদীর ভেলানগর এলাকায় বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই অবরোধ সৃষ্টি করে। মুহুর্ত্তের মধ্যে অবরোধ সৈয়দনগর ইটাখোলার সহ মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ৫টা পযর্ন্ত তাদের অবরোধ চলে।
পাবনা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, বেলা ১২টার দিকে পাবনা জেলা স্কুল, কালেক্টরেট উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ ও সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর হত্যায় দায়ী ঘাতক বাস চালকের বিচার দাবি এবং রাস্তায় ট্রাফিক শৃংখলা মেনে শহরে চলাচল করা রিকশা(ব্যাটারী চালিত ইঞ্জিন ) অটোবাইক মোটর সাইকেল চালকদের সুশৃঙ্খলভাবে চলার অনুরোধ করেন। এ সময় সড়কে চলাচলকারীরাও তাদের অনুরোধে সাড়া দেন। সড়কটিতে শৃঙ্খলা ফিরে আসে।
রাবি সংবাদদাতা জানান,নিরাপদ সড়ক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে ঢাকায় স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন পালন করে শিক্ষার্থীরা।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা: বেলা সাড়ে ১১টায় চৌরাস্তা এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। এতে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাগামী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুই ঘন্টা বন্ধ থাকার পরে পুলিশের মধ্যস্ততায় শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে শহরের গুরুত্ব পূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক। সকালে বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বর, পাঁচমাথা মোড় ঘুরে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানব বন্ধন করে।
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হতে থাকে। তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল নিয়ে রেডিও কলোনী বাসস্ট্যানে মহাসড়ক অবরোধ করে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা মহাসড়কে বসে পড়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে উল্লাস করতে থাকে। পরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠারে শিক্ষার্থীরা সড়কের উভয় পাশে আটকা পড়া যানবাহনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিং করে। সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা ব্যাপী এই সড়কে তারা অবস্থান করে। এ সময় মহাসড়কের দুই দিকে দুই ২ কি.মি. যানযটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ভোগান্তিতে পরে এ রুটের হাজারো বাসযাত্রী। আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও কেয়াইন ইউপি চেয়ারম্যান বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা অবরোধ উঠিয়ে নেয়।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে আশিকপুর বাইপাস গিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে সেখানেই অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন্ প্লে-কার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করতে থাকে তারা। দুপুর ১১টা ৪০ মিনিট থেকে ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এতে করে মহাসড়কে চলাচলকারী সকল যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু পাশে দেখা দেয় দীর্ঘ যানজটের।
দুমকি(পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০ ঘটিকায় বাসের ধাক্কায় দুই শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার প্রতিবাদে দুমকি টু বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে দুমকি সরকারি জনতা কলেজের শিক্ষার্থীরা। বাস দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকদের ফাঁসি এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে প্রায় ২ ঘন্টা ধরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ চলতে থাকলে রাস্তায় যানজটের সৃষ্ঠি হয় তাতে করে দুমকি টু বরিশালের সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কাউতলীতে কিছুক্ষণ অবস্থান নেয়। পরে মিছিলটি সেখান থেকে পুনরায় ঘুরে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।
সিলেট ব্যুরো জানায়, বেলা আড়াইটা থেকে নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্ট ও সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাতে নৌমন্ত্রী শাজান খানের পদত্যাগ দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে জড়ো হয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী। জড়ো হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা পড়ুয়া বলে জানা গেছে। তারা নগরীর ব্যস্ততম চৌহাট্টা সড়কের চারটি রাস্তাই অবরোধ করে রাখে। তবে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে কোন বাধা দেয়নি তারা। এর আগে নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় মিছিলসহকারে চৌহাট্টায় জড়ো হন। তারা সড়কে অবস্থান করে গাড়ির বিভিন্ন কাগজপত্র, লাইসেন্স যাচাই করেন।
এদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, নোয়াখালীতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এসময় কয়েকটি গাড়ীতে ইট নিক্ষেপ করে গাড়ীর কাঁচ ভাঙচুর করে। গতকাল বৃহস্পতিবার ক জেলা শহর মাইজদীতে এই কর্মসূচী পালন করে তারা। এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা শহরের টাউন হল চত্বরে এসে জড়ো হয় হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মাইজদী পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড থেকে জিলা স্কুল মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে।

 



 

Show all comments
  • Khairul Islam ৩ আগস্ট, ২০১৮, ৩:১৪ এএম says : 0
    ন্যায় বিচার আর নিরাপদ সড়কের দাবী এই আন্দোলনের আনন্দপূর্ণ সমাপ্তি দরকার। সরকার যদি চির চেনা পথে আন্দোলন থামাতে চায় তা মনে হয় ভালো হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Jamir Ahmed Ayon ৩ আগস্ট, ২০১৮, ৩:১৮ এএম says : 0
    শুধুমাত্র ইউনিফর্মের অভাবে আমার মতো লাখো মানুষ মাঠে নামতে পারছে না...!
    Total Reply(0) Reply
  • Ismail Hossain Rakib ৩ আগস্ট, ২০১৮, ৩:২১ এএম says : 0
    এগিয়ে যাও দোয়া কামনা ৱইল
    Total Reply(0) Reply
  • Jamal Ahmed ৩ আগস্ট, ২০১৮, ৩:২২ এএম says : 0
    নিরাপদ সড়ক চাই
    Total Reply(0) Reply
  • ইয়াসমিন ৩ আগস্ট, ২০১৮, ৩:২৪ এএম says : 0
    এবার যখন রাস্তায় নামতে হয়েছে তখন রাস্তা নিরাপদ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেই ঘরে ফিরব।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আন্দোলন

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ