পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকাকে শিল্প কাম বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকায় রূপান্তরের মাস্টারপ্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) চূড়ান্ত হয়েছে। গত রোববার সচিবালয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মাস্টারপ্ল্যান পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সভায় এ সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সুপারিশ শিঘ্রই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী এখানে ভারী ও শ্রমঘন কোন শিল্প থাকবে না। যে ভবনগুলো থাকবে সেখানে গাড়ী পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ এলাকায় কাজের জন্য আগত বা অতিথিদের গাড়ী পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রিত প্লটগুলোয় সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। বেসরকারী প্লটে শিল্প, বাণিজ্যিক, হোটেল, হাসপাতাল ইত্যাদি স্থাপনা নির্মাণ করা হলে পয়ঃবর্জ, রাসয়নিকবর্জ্য ও বায়ু পরিশোধনের নিজস্ব ব্যবস্থা রাখতে হবে। মাস্টারপ্ল্যানের বিভিন্ন্ সুপারিশ সঠিকভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে তেজগাঁও শিল্প মালিক কল্যাণ সমিতিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ সমিতি কোন বিষয়ে ত্রুটি দেখলে তা রাজউককে জানাবে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজধানীর অবকাঠামোগত পরিবর্তন ও সম্প্রসারণ হয়েছে। এখনও হচ্ছে।
১৯৪৮ সালে রাজধানীতে যখন ৫০০ একর জমি নিয়ে তেজগাঁও শিল্প এলাকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সে সময়ের বাস্তবতা আর এখন বিদ্যমান নেই। আজকের ঢাকা আর ৪০/৪৫ বছর আগের ঢাকার মধ্যেও বিস্তর ব্যবধান তৈরি হয়েছে। ১৯৯৮সালে তেজগাঁও-গুলশান সংযোগ সড়কের পার্শ্ববর্তী প্লট বাণিজ্যিক প্লটে পরিণত করা হয়। পরে পুরো তেজগাঁও বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকায় রূপান্তরে জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সুপারিশ করে। এ সময় স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতিকে প্রধান করে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ও একটি কমিটি গঠন করে। গৃহায়ণমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি সাব-কমিটির প্রতিবেদন, সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে প্রস্তাব প্রস্তুত করে ২০১৪ সালে মন্ত্রিসভায় পাঠায়। উল্লেখ করা প্রয়োজন, স্বাধীনতার পর ঢাকা শহরে সম্প্রসারিত হওয়ায় তেজগাঁও শহরের মাঝখানে চলে আসে। এখানে প্লটের সখ্যা ৪০৫টি। এর মধ্যে সরকারী ১৬৬টি এবং বেসরকারী ২৩৯টি। মাস্টারপ্ল্যান যেভাবে করা হয়েছে, তাতে থাকবে বহুতল ভবন, বাণিজ্যিক সেন্টার সোলার অ্যানার্জি সিস্টেম। বাড়িগুলোর দূরত্ব থাকবে প্রয়োজন মতো। ভবন নির্মিত হবে বিল্ডিং কোর্ড মেনে। গার্বেজ সিস্টেম থাকবে অত্যাধুনিক। পুরো এলাকাটিকে পরিবেশবান্ধব করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বলাবাহুল্য, এ পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে পুরো এলাকাটি অনিন্দ্যরূপ লাভ করবে।
একথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, যখন তেজগাঁকে শিল্পাঞ্চল হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল তখন গুলশান, বনানী ছিল জলাভূমি, ধানক্ষেত। এখন এসব এলাকা অভিজাত এলাকায় রূপান্তরিত হয়েছে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সব সিদ্ধান্তই পরিবর্তিত হয়। একারণেই যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সুদূরপ্রসারি দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হয়। আলোচ্য ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় হবে না, এটাই প্রত্যাশিত। আমরা তেজগাঁওকে নিয়ে প্রস্তাবিত মহাপরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানাই এবং এটি নাগরিকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হবে এমনটাই আশা করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।