Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে রহিমা খুন প্রশ্নের মাঝেই ঘুরছে তদন্ত

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

নিজ বাড়িতে আইনজীবী এহতেশামুল পারভেজ সিদ্দিকী জুয়েলের স্ত্রী বিবি রহিমার খুনি কারা তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে এখনো অন্ধকারে তারা। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। খুনিরা রহিমার পরিচিত কেউ। কারণ দিনদুপুরে খুনের ঘটনা ঘটলেও কোন শোর চিৎকার হয়নি। জোর করে বাসায় ঢোকারও কোন আলামত মেলেনি। বাসায় জিনিসপত্র এলোমেলো হলেও একটি টিভি মনিটর ছাড়া মূল্যবান কিছু খোয়া যায়নি।
পারিবারিক কলহ-বিরোধ এবং ব্যক্তিগত বিরোধকে প্রাধান্য দিয়ে তদন্ত এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কর্মকর্তারা। পুলিশের সন্দেহ থেকে বিবি রহিমার স্বামী, স্বজন, ভাড়াটিয়ারাও বাদ যাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে হত্যাকান্ডের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী বিবি রহিমার পৌনে তিন বছরের শিশু কন্যা হৃদি আক্তারের সাথে কথা বলেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তার সাথে কথা বলে ঘটনার ব্যাপারে ধারণা নেয়ার চেষ্টা করেন তারা।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আব্দুল ওয়ারিশ খান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, রহিমা খুনের রহস্য এখনো জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে এটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলেই মনে হচ্ছে। পারিবারিক দ্ব›দ্ব, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ বা অন্য কোন কারণে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। ডাকাতি বা লুটপাটের কোনো বিষয় বলে মনে হচ্ছে না। তবুও আমরা সব বিবেচনায় রাখছি। ইতোমধ্যে দুই ভাড়াটে ও নিহতের দেবর ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে এখনো উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য মেলেনি। খুনের ঘটনায় জড়িতরা রহিমার পরিচিত হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনা ঘটেছে দিনের বেলায়। আর ওই সময়ে কোন শোর চিৎকার কেউ শোনেনি। হাত-পা বেঁধে গলায় ওড়না পেচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। তবে তদন্তে সবকিছু বের হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
বুধবার নগরীর চান্দগাঁও থানার ফরিদার পাড়ায় বিবি রহিমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। খুনের সময় শিশু কন্যা হৃদি ছিল বাসায়। বাড়ির পেছনের টিনশেডের ঘরে আরিফ ও ইয়াছিন নামে দুইজন রংমিস্ত্রি ভাড়াটিয়া থাকতেন। হত্যাকান্ডের পর থেকে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে বলা হলেও ওইদিন সন্ধ্যায় তারা বাসায় আসেন। পুলিশ তাদের দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। থানার ওসি আবুল বাশার জানান, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এর বেশিকিছু বলতে চাননি তিনি।
বিবি রহিমার বাড়ির পাশে থাকেন তার দেবর সানাউল হাসনাত রাসেল ও তার পরিবার। তবে হত্যার বিষয়টি তারা টের পাননি বলে দাবি তাদের। এহতেশামুল পারভেজ সিদ্দিকী জুয়েল বিকেল ৩টার দিকে আদালত থেকে এসে প্রথম স্ত্রীর লাশ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন বলে দাবি তার। পুলিশ বলছে, এসব বক্তব্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। জুয়েল ও রহিমার মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল বলেও নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। ঘটনার আগের রাতেও স্বামী-স্ত্রীতে ঝগড়া হয় বলে প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছে।
রহিমার সাথে জুয়েলের বিয়ে হয় ২০১৪ সালে। তিনি আগেও একটি বিয়ে করেছিলেন বলে জানা গেছে। অন্তঃসত্ত্বা থাকাবস্থায় সেই স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সেই ঘরে ৫ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। পুলিশ বলছে, এসব বিষয়েও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। রহিমার মা বেদুরা বেগম বাদী হয়ে গতকাল চান্দগাঁও থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছেন থানার এসআই আমির হোসেন। স্বামীর বদলে মামলার বাদী মা হলেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে থানার ওসি জানান, যিনি সবচেয়ে আপন আমরা তাকেই মামলার বাদী হতে বলি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ