Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি

উজানে অতিবৃষ্টিতে বন্যা বিস্তার

শফিউল আলম : | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম


 উজানে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা অতি বর্ষণের কারণে বিস্তৃত হচ্ছে বন্যা এবং ক্রমেই দেশটিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। ভারতসহ হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চলের উজানভাগে অববাহিকায় ও উৎসে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা নদীসমূহ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বরাক অঞ্চলে পানি অবিরাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরফলে ভারতে বন্যায় প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে একথা জানা গেছে।
অন্যদিকে উজানের বর্ষণে ঢলের পানি গড়াচ্ছে ভাটির দিকে। এতে করে বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গতকাল সর্বশেষ নদ-নদী প্রবাহের তথ্যে জানায়, দেশের ৯৪টি নদ-নদীর পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৬৭টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। হ্রাস পায় ২৩টি পয়েন্টে। বিপদসীমার ঊর্ধ্বে রয়েছে ২টি পয়েন্টে। সেগুলো হচ্ছে ফেনীর পরশুরামে মুহুরী এবং ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদ।
নদ-নদীর প্রবাহের পূর্বাভাসে পাউবো জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকতে পারে। আপার মেঘনা অববাহিকায় পানি বৃদ্ধির ফলে কুশিয়ারা ও মনু নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাড়তে পারে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে পাহাড়ি নদ-নদীগুলোর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুযায়ী আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন ভারতীয় অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীগুলোর পানির সমতল আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দ্রæত আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। উজানে আসামে অতিবৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল চেরাপুঞ্জিতে ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আবার দেশের অভ্যন্তরেও বিভিন্ন স্থানে হচ্ছে ভারী বর্ষণ।
মৌসুমী বায়ু ফের সক্রিয় হওয়ায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অধিকাংশ স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় স›দ্বীপে ১৭৩ মিলিমিটার। ঢাকায় ৩৩, চট্টগ্রামে ৯৩, ময়মনসিংহে ২৩, সিলেটে ১৮, রাজশাহীতে ১৬, রংপুরে ৪২, খুলনায় ৯, বরিশালে ৬ মিমি বৃষ্টি হয়েছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এর পরের ৫ দিনেআবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্ষার মৌসুমী বায়ুর বলয় ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয়। উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী থেকে জোরালো অবস্থায় বিরাজ করছে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচলের এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ