বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ অচল করে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সকালে শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া অবরুদ্ধ করে রেখেছে শত শত শিক্ষার্থী। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ। ‘আমরা বিচার চাই’ শিক্ষার্থীদের স্লোগানে মুখরিত নারায়ণগঞ্জের রাজপথ। আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীরা নৌ-মন্ত্রী শাহ্জাহান খানের পদত্যাগ এবং দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায় বিচার দাবি করেন।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে শহর অবরোধ করে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ডেমরার ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
অনেক শিক্ষার্থী সড়কের উপর শুয়ে পড়ে। এ সময় তারা ঢাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেয়া ৯ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে স্লোগান দিতে থাকে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে ‘নৌ-মন্ত্রীর পদত্যাগ চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘৯ টাকায় ১ জিবি নয়, নিরাপদ সড়ক চাই’, পড়তে এসেছি, মরতে নয়’, ‘স্বার্থক জনম মাগো জন্মেছি এই দেশে, গাড়ি চাপায় মানুষ মরে মন্ত্রী কেন হাসে’ এসব স্লোগান লিখিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
এদিকে শহরে মূল সড়ক চাষাঢ়ার মোড় অবরোধ করাতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে কোন যান চলাচল করতে পারছে না। পুরো সড়ক জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স কিংবা জরুরী সার্ভিসের যান ছাড়া কোন যান চলাচল করতে দিচ্ছে না। বেলা ১২ টার দিকে ট্রেন সার্ভিসও বন্ধ করে দেয়া হয়। চাষাড়া মোড় এলাকায় এলোপাতাড়ি যানবাহন রেখে যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে রাখা হয়। শান্তিপূর্ণভাবেই শিক্ষার্থীরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। পরিস্থিতি স্বাভারিক রাখতে সকাল থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিলেও তারা নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করছেন। শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্দ হয়ে উঠতে পারে এমন কোন কাজ তারা করছেন না।
ঘটনাস্থলে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম, ইন্সপেক্টার (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক. ইন্সপেক্টর (অপারেশন) জয়নাল আবেদীন ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।
কয়েকজন শিক্ষার্থীদের জানান, ‘সকাল ১০টা থেকে তারা অবরোধ শুরু করেছে। এই অবরোধ চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এর মধ্যে কোন গাড়ি চলাচল করতে দেয়া হবে না। তবে জরুরী প্রয়োজনের কয়েকটা গাড়ি ছাড়া হচ্ছে।’
তারা আরো জানান, ‘তাদের সহপাঠীর মৃত্যু হয়েছে। তারা তাদের ভাই-বন্ধুকে হারিয়েছে। আগামীকাল তাদের নিজের জীবনেরও সংশয় রয়েছে। এর প্রতিবাদে তারা শান্তিপূর্ণ একটি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে কোন বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে না।’
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় মিজানুর রহমান নামের এক ছাত্রসহ ৪ জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে যানবাহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাকি তিনজন হলেন কাউসার আহমেদ, সজীঊব ও হৃদয়। শরীরে স্কুল ড্রেসের মতো পোশাক দেখে তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা।
দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের অবরোধের মধ্যে বুধবার সকাল ৭টা থেকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে পরিবহন শ্রমিকরা। এরই এক পর্যায়ে ছাত্র সন্দেহে ৪ জনকে গণপিটুনি দেয় এবং পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম জানান তাদেরকে আট করা হয়নি। পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এবিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে। চার শিক্ষার্থীকে মারধর ও সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে বিপুল পরিমান শিক্ষার্থী সাইনবোডের দিকে রওয়ানা হলে পরিবহন শ্রমিকরা দ্রুত ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে পুরো এলাকা শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রনে চলে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।