বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নরসিংদীতে বেড়েছে ধর্ষণের ঘটনা। কয়েক বছর ধরে অব্যাহত ধর্ষণের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ছয় মাসে নরসিংদীতে ৪০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দেড় বছরের শিশু থেকে মধ্য বয়সী মহিলা পর্যন্ত কেউই ধর্ষকদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।গত দুই মাসে বেড়েছে শিশু ধর্ষণের ঘটনাও। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধর্ষণের পর হত্যা করছে কোমলমতি শিশুদের।
এদিকে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় শিশু-কিশোরীদের অভিভাবকরা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। পিতামাতা তাদের মেয়েদের স্কুল কলেজে পাঠিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় থাকেন। সর্বশেষ শিশু ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে পলাশ উপজেলার ধানারচর গ্রামে। গত মঙ্গলবার বিকেলে নিজ বাড়ির পাশে কাকলি নামের ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করে রবিন নামে এক কিশোর। এ ঘটনায় তাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার প্রায় ১০ দিন আগে পলাশের চলনা গ্রামে স্কুলে যাওয়ার পথে ধর্ষণের শিকার হয় পঞ্চম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থী। এছাড়া এ মাসের প্রথম দিকে ঘোড়াশালে বাড়ির পাশে খেলা করতে গিয়ে এক কিশোরের হাতে ধর্ষণের শিকার হয় চার বছরের এক শিশু কন্যা। এ নিয়ে গত এক মাসে শুধু মাত্র পলাশেই ঘটে গেল তিনটি শিশু ধর্ষণের ঘটনা।
অপরদিকে মনোহরদী উপজেলায় গত ২৬ জুন পঞ্চম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সজল নামে এক বখাটে ধর্ষণ করে গলাটিপে হত্যা করে। পরে ঘটনার কয়েকদিন পর র্যাব ধর্ষক সজলকে আটক করে। এ ঘটনার এক মাসের মাথায় উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে এক মাদরাসা ছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে কামরুল ইসলাম নামে এক বখাটে। এদিকে গত সোমবার উপজেলার বারুদিয়া গ্রামে তিন বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টায় গিয়াসউদ্দিন নামে এক বেকারি শ্রমিকের নামে থানায় মামলা করেন শিশুটির পরিবার। এ ছাড়া রায়পুরা ও নরসিংদী সদরে গত দুই মাসে পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয় এক প্রতিবন্ধী শিশুসহ দুটি পাঁচ বছরের শিশু।
জানা যায়, গত ১০ বছরে নরসিংদীতে কমবেশি দেড় সহস্রাাধিক নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গত ২০১৭ সালে নরসিংদীতে ১২৮টি ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বছরে শিশু ধর্ষণসহ ৪০টি ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নরসিংদী জেলা জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি শান্ত বণিক বলেন, ধর্ষণ বিষয়ে সন্তানদের অবহিত করা একান্ত প্রয়োজন। বিশেষত ছোট ছেলেদের এই বিষয়ে সম্যক ধারণা দিতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে এটা ঘৃণ্যতম অপরাধ।বিদ্যালয়ে নৈতিক শিক্ষা হিসেবে এটি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সমাজের সচেতন মহলের ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। এতে করে মনস্তাত্তি¡ক দিক থেকে পরিবর্তন ঘটবে। এছাড়াও পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের পরিবর্তন আনা এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কারণে অনেক পুরুষেরাই মনে করে থাকেন তাদের অবস্থান নারীদের উপরে। তাই মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে।
এ ব্যাপারে নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন জানান, ধর্ষণের প্রতিটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ সব আসামিকেই গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি জানান, যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা সবাই দরিদ্র পরিবারের। তাদের মধ্যে সামাজিকতা ও শিক্ষার কোনো আলো নেই। শুধুমাত্র লালসার কারণেই তারা শিশু ধর্ষণের মতো এমন জঘন্য অপরাধ করছে। আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি আমাদের সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, তবেই এর প্রতিকার সম্ভব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।