Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ভাঙনে বিপর্যস্ত লোহাগাড়া

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) থেকে তাজউদ্দীন | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পুরো লোহাগাড়া। বাড়িঘর, সেতু কালভার্ট ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি রাস্তাঘাট ভেঙে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে। বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা থেকে সৃষ্ট ডলু, টংকাবতি, হাঙর, সরই নদীগুলো লোহাগাড়ার বুক চিরে প্রবাহিত হয়ে পড়েছে কর্নফুলী নদীতে। এই নদীগুলো এলাকার যেদিক দিয়ে বয়ে গেছে তার আশপাশ এলাকায় প্রতিবছর বন্যার পানি উপচে পড়ে। বিগত কয়েকদিন আগে টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে টংকাবতীর করাল গ্রাসে পড়ে চরম্বা পশ্চিম রাজঘাটা এলাকার অর্ধ-কিলোমিটার সড়ক ভেঙে নদীর পেটে চলে যায়। এ ছাড়াও কলাউজানের দারুস সুন্নাহ মাদরাসা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। একই নদীর করাল গ্রাসে আমিরাবাদের মল্লিক ছোবহান, হাজারবিঘা, বনিক পাড়া, মোস্তফা বর পাড়া, চৌধুরী পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েকশত বাড়ি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া নদী পাড়ের কাচা পাকা সড়কের কোনো কোনো অংশ একেবারে ভেঙে পড়েছে। যার কারণে সড়কগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ডলু নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে চুনতি নারিশ্চা গ্রাম, আধুনগর, বড়হাতিয়াসহ প্রায় কয়েকটি গ্রামের শতাধিক কাঁচা-পাকা ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়। পাশাপাশি নদী পাড়ের রাস্তাও ভেঙে একাকার।
লোহাগাড়া লামা যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম লোহাগাড়া দরবেশহাট ডিসি সড়কের উপর সরই নদীর উপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে লাখো মানুষের মাঝে চরম দুর্ভোগ নেমে আসে। এ ছাড়াও একই নদীর উপর পুটিবিলা রামবিলা সড়কের উপর এলাকাবাসীর নির্মিত একমাত্র কাঠের সাকোটি ভেঙে প্রায় ১০ হাজার মানুষ গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে। হাঙ্গর নদীর ভাঙনে পড়ে পদুয়া আধার মানিক এলাকার প্রায় ২০ টির অধিক ঘর ভেঙে গেছে। এ ছাড়াও আধারমানিক ধলিবিলা সড়ক, জঙ্গল পদুয়া সড়কের কোনো কোনো অংশে এই নদীর ভাঙনের মুখে পড়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এদিকে হাতিয়া ও কুলপাগলী খালের ভাঙনে চুনতি নারিশ্চা বড়–য়া পাড়া সড়ক, চান্দা টানা সেতু ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছেন চুনতি ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জনু এ ছাড়াও সাতগড়ছড়া খালে লাম্বা সিয়া সড়ক হাতিয়ার খালে ছবি নগর, রহমানিয়া পাড়ার কয়েকটি মাটির ঘর ভেঙে গেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
বড়হাতিয়ার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোনাইদ জানান, থমথমিয়া ও চিয়ানখালের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় ৪০টি ঘর বিলীন হয়ে গেছে। সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুচ্ছফা কোম্পানি জানান, সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের হাকিনজানি ভাঙার সেতুটি ভেঙে গেছে। এ ছাড়াও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নদীগুলো থেকে বালু ব্যবসায়ীরা সারাবছর অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে প্রতি বছর বর্ষা এলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয় এবং ভাঙনের শিকার হয়। লোহাগাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম রাশেদ জানান, সাম্প্রতিক টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে লোহাগাড়ার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড একেবারে ভেঙে পড়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী ভাঙন

২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ