পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদীমার্তৃক এই দেশে নদীভাঙন একটি নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যমুনা, গঙ্গা এবং পদ্মা নদীর ১ বছর আগে নদীর তীর ভাঙনের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য একটি অনন্য টুল তৈরি করেছে সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিস (সিইজিআইএস)। এটা করা হয় শুষ্ক মৌসুমের উপগ্রহ থেকে চিত্র গ্রহণের উপর ভিত্তি করে। সিইজিআইএস ২০০৪ সাল থেকে তিনটি ভিন্ন সম্ভাবনার (৩০%, ৫০% এবং ৭০%) জন্য এই নদীর উভয় তীরে ভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানের পূর্বাভাস দিচ্ছে। এই টুলটির সামগ্রিক নির্ভুলতা ৭০% থেকে ৮০% পর্যন্ত যা ফ্লুভিয়াল প্রক্রিয়ার অনিশ্চয়তা বিবেচনা করে বেশ ভালো হিসাবে বিবেচিত হতে পারে বলে গবেষণা প্রতিবেদন গত বছর প্রকাশ করেছে সিইজিআইএস। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জে ও সিলেটে বাঁধ ভেঙে বিলীন হয়েছে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ও সেতু। এ বছরে প্রতিবেদনটি চলতি মাসে যে কোনো সময় প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে (সিইজিআইএস)-এর প্রধান।
গত বছর বলা হয়েছিল বর্ষা মৌসুমে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলা ভয়াবহ নদী ভাঙনের কবলে পড়তে পারে। পদ্মা, গঙ্গা ও যমুনা নদীর ভাঙনে এসব জেলার প্রায় ২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হতে পারে। এছাড়া নদীতে পৌনে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ২৪১ মিটার মহাসড়ক, সাড়ে তিন কিলোমিটার জেলা ও দেড় কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক চলে যেতে পারে। ভাঙনে দোকানপাট, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাটবাজার এমনকি হাসপাতালও বিলীন হতে পারে। এবারও যমুনা নদী ভাঙনের পর নিঃস্ব হওয়ার আশঙ্কার কথা বলা হয়েছিল গবেষণা প্রতিবেদনে। তথ্য অনুযায়ী, গাইবান্ধায় সবচেয়ে বেশি জমি বিলীন হবে। সড়ক ভাঙবে বেশি জামালপুরে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশি পরিমাণ হুমকির মুখে সিরাজগঞ্জের। এই ভাঙন শঙ্কা থেকে মুক্ত নেই বগুড়া।
জরিপ বলছে, বগুড়ায় এবার শুধু যমুনায় অন্তত ৫১১ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হবে। তবে তাদের প্রতিবেদনের চেয়ে তিন থেকে চারগুন জমি নদীগর্ভে বিলীন এবং নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে মানুষ। দেশের উত্তরাঞ্চলের যমুনা-ব্র্রহ্মপুত্র-তিস্তা, ধরলা, করতোয়া নদীতে প্রতিবছরে ভাঙছে। নদী ভাঙনে বসতবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন যমুনা পাড়ের বহু মানুষ। ভূমি হারিয়ে তারা বিচ্ছিন্ন হয়েছেন পরিবার থেকে, নিজের চিরচেনা লোকালয় থেকে। শুধু তাই নয়, এসব জনপদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সড়ক, বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে নষ্ট হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। এদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে এডিপিভুক্ত ৮১টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ৬ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি ৫ হাজার ৭০৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা এবং বিদেশি সাহায্য ৯৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। তার মধ্যে গত বছর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেন। চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে ৩৯টি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এ ছাড়া এবছর নতুন করে ১৪টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হলেও নদীভাঙন কবলিত জেলাগুলোর বাঁধ সংস্কার ও মেরামত প্রকল্প স্থান পায়নি বলে জানা গেছে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, বন্যার মতো নদীভাঙনও প্রতিবছরের সমস্যা। যে একবার নদীভাঙনে ফসলি জমি হারায় বা বসতভিটা যার নদীগর্ভে চলে যায়, সে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়ে। এ ধরনের পরিবারগুলোর জন্য দীর্ঘমেয়াদে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
আগামী সপ্তাহজুড়ে দেশে কালবৈশাখী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের দক্ষিণে আন্দামান সাগরের কাছে মার্তবান উপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরবর্তীতে নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর এটি দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে বর্তমানে থাইল্যান্ড ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার এলাকায় অবস্থান করছে। পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সে সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারীবর্ষণ হতে পারে।
বন্যা-নদীভাঙন-খড়া দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নদীভাঙন এলাকার মানুষের কাছে নিত্যঘটনা। তিস্তা-ব্র্রহ্মপুত্রে ও যমুনা নদীর পাড়ে কোটি মানুষ বসবাস করেন অথচ তাদের জমি ও জীবন কোনো সুরক্ষা নেই। পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে এবার আগাম বন্যা-নদীভাঙন শুরু হয়েছে। আগাম বন্যায় পানিতে উত্তরাঞ্চলের জেলায় মধ্যে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট, নীলফামারি, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ ১৬ জেলার বন্যার পানির চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। হাজার হাজার বাড়িঘরে পানি উঠেছে। অথচ নদীপাড়ের মানুষের সুরক্ষায় এসব এলাকায় উঁচু বাঁধ নির্মাণে পরিকল্পনা থাকলেও বাঁধ নির্মাণে এখনো নজরে নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর বাঁধগুলো উঁচুকরণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে নজর না থাকার কারণে ভারত থেকে আসা পানির ঝুঁকিতে কোটি মানুষ। এসব নদীর পাড়ের লাখ লাখ মানুষকে পানিবন্দি জীবনযাপন করতে হচ্ছে। নতুন করে বাঁধ সংস্কার ও মেরামত করা হচ্ছে না গোটা উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে। বাঁধ সংস্কার না হওয়ার কারণে নতুন করে বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে উলিপুর-রাজাহাটের তিস্তা নদীর ভাঙনের মুখে বেশ কয়েকটি বাঁধ রয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আল মামুন কাজ না করে লাখ লাখ টাকার ভুয়া বিল তুলে নিয়েছেন বলে স্থানীয় সংসদ সদস্য অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম ইনকিলাবকে বলেন, ভাঙনের শিকার মানুষের জন্য সরকার বিশেষ সহায়তা দিচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় নদীভাঙন বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোর জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, যে এলাকায় প্রধান নদনদীর সঙ্গে বেশিসংখ্যক শাখা-প্রশাখা যুক্ত হয়েছে, সেসব এলাকায়ই বন্যার প্রকোপ বেশি হয়। আবার বন্যার সময় ও এর মাত্রানির্ভর করে হিমালয়ে বৃষ্টির সময় ও পরিমাণের ওপর। মৌসুমী বৃষ্টিপাতের কারণেই বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। বর্ষার কারণে নদনদীর পানি বাড়ে। এর সঙ্গে নদীতে জমে থাকা পলিমাটির কারণে পানি সরতে সময় নিচ্ছে। ফলে বন্যার বড় কারণ এখন পলি ও কাদা। এফএফডব্লিউসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদ-যমুনা নদীর পানির সমতল বর্তমানে ধীরগতিতে বাড়ছে, তবে বিপদসীমার নিচে রয়েছে। বাংলাদেশ ও উজানের অববাহিকায় ভারতের অরুণাচল, আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের অনেক স্থানে আগামী দুই সপ্তাহে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষার্ধে ব্রহ্মপুত্র নদ-যমুনা নদীর পানির সমতল বেড়ে যাওয়ার উল্লেখযোগ্য প্রবণতা দেখা যেতে পারে। আর তৃতীয় সপ্তাহের প্রথমার্ধে তা সতর্কসীমায় পৌঁছতে পারে। এছাড়া আগামী দুই সপ্তাহে হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে ভারি বৃষ্টিপাত ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানির সমতল দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষার্ধে ও তৃতীয় সপ্তাহের প্রথমার্ধে সময়বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে। এ সময়ে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানির সমতল বিভিন্ন স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। অববাহিকাভুক্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ ইনকিলাবকে বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানির সমতল বাড়বে। নদীর পানি সতর্কসীমায় পৌঁছতে পারে। এ সময়ে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানির সমতল বেশকিছু স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে প্রতিবছর অনেক জেলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে এবং বিলীন হয়েছে।
মধ্যাঞ্চলে বন্যার অবনতি, উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ নদীভাঙন উজানে বৃষ্টির পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি শুরু করেছে। এর ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্রের পানি যমুনা হয়ে পদ্মায় প্রবাহিত হওয়ায় মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে নতুন বিপদ এসে গ্রামীণ জনপদে হাজির হচ্ছে প্রতিবছর। উত্তরাঞ্চলে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। কিন্তু ভাঙন রোধে নেয়া হচ্ছে না নতুন নতুন প্রকল্প। কুড়িগ্রাম থেকে গাইবান্ধা হয়ে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নদীভাঙন তীব্র হতে শুরু করেছে। নদী নিয়ে কাজ করা গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) তথ্য অনুযায়ী, ১০ বছর ধরে দেশে নদীভাঙনের পরিমাণ কমছে। কিন্তু এ বছর বন্যার কারণে তা বাড়তে পারে।
সংস্থাটি গত জুন মাসেই পূর্বাভাস দিয়েছিল, এ বছর ২ হাজার ৩৬৫ হেক্টর এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। নিঃস্ব হতে পারে ২৩ হাজার মানুষ। তবে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারণে সংস্থাটির গবেষকরা এখন বলছেন, পূর্বাভাসের তুলনায় ভাঙনের পরিমাণ ৩০ শতাংশ বাড়তে পারে এবং নিঃস্ব হতে পারে ৩০ হাজার মানুষ। ভাঙনের পূর্বাভাসটি দেওয়া হয়েছিল চলতি বছর স্বাভাবিক বন্যা হতে পারে এ আশঙ্কা মাথায় রেখে। তবে এবার বন্যা হঠাৎ করে দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াল রূপ নেওয়ায় সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, যেসব এলাকায় এবার ভাঙনের পরিমাণ কম হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, সেখানেও এবার ভাঙন দেখা দিতে পারে।
সিইজিআইএসের নদীভাঙন পূর্বাভাস দলের প্রধান মমিনুল হক সরকার বলেন, এবারের বন্যা অস্বাভাবিকভাবে তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। নদীর পাড়গুলোতে চাপ পড়েছে এবং ভাঙন বেশি হবে। মাটির ধরন, ভৌগোলিক অবস্থানসহ প্রতিটি এলাকার ভাঙনের কারণ পৃথকভাবে বিশ্লেষণ করে সামগ্রিক পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন। টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের বেলাহাটি গ্রামের ফসলি জমি ধীরে ধীরে যমুনার পেটে চলে যেতে থাকে। সেই ভাঙন তীব্র হয়ে এখন বসতভিটা এলাকাও গ্রাস করা শুরু করেছে। এমনকি ভাঙনের কারণে ঢাকার পাশের নবাবগঞ্জেও বসতভিটা পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের নদী অববাহিকাজুড়ে এই ভাঙন শুরু হয়েছে।
সিইজিআইএসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এ বছর ১২ থেকে ১৫টি জেলায় নদীভাঙন বেশি হবে। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, জামালপুর, রংপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঢাকার নবাবগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর জেলা রয়েছে। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে এবার দুই দফায় বন্যা হওয়ায় সেখানে ভাঙন অন্যান্য জেলার চেয়ে বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে।
সিইজিআইএসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে দেশে বছরে ৬ হাজার ৬০০ হেক্টর এলাকা নদীভাঙনে তলিয়ে যায়। ২০১৮ সালে তা কমে ৩ হাজার ২০০ হেক্টরে নেমে আসে। চলতি বছর যে ১৬টি এলাকায় নদীভাঙন বেশি হবে, তার মধ্যে রয়েছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, কুড়িগ্রামের উলিপুর, চিলমারী, রাজারহাট, রৌমারী ও রাজীবপুর, টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও সলিমাবাদ চরে, পদ্মা নদীর অংশে মাদারীপুরের শিবচর, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট ও পাংশা উপজেলা এবার তীব্র ভাঙনের কবলে পড়তে পারে। এসব এলাকার অনেক স্থানে এরই মধ্যে ভাঙন শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্টের (আইডব্লিউএফএম) অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, এখন যে হারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তাতে দ্রুতই তিস্তা ও ধরলা বিপদসীমা অতিক্রম করবে। বৃষ্টিপাত আর কতদিন স্থায়ী হয়, তার ওপর নির্ভর করছে বন্যার স্থায়িত্বকাল। এখন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ঝুঁকি রয়েছে।
##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।