Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মার ভাঙনে নির্ঘুম রাত

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) থেকে মো. নজরুল ইসলাম : | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া এলাকায় পদ্মা নদীতে আবারো ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে দু’গ্রামের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে । বিগত কয়েকদিনের ভাঙনে ঘাট সংলগ্ন সিদ্দিক কাজী ও ছাত্তার মেম্বার পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে ২০টিরও বেশি বসতঘর সরিয়ে নিতে হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে একটি ফেরিঘাট। বাকীগুলোও রয়েছে হুমকির মুখে।
জরুরি ভিত্তিতে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, যে পরিমাণ জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা তারাবানু বলেন, ২২ বছর আগে পদ্মা নদীতে ভেঙে কুশাহাটা থেকে এখানে এসে আশ্রয় নেই। কিন্তু,নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন আমার বাড়ির কাছে এসে ঠেকেছে। গেল কয়েকদিন ধরে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাই আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে। কখন যেন ভিটেমাটিসহ বিলীন হই সর্বগ্রাসী পদ্মায়।
একই এলাকার হজরত আলী মন্ডল, মোক্তার মন্ডল, আতর আলী ও খোদেজা বেগম বলেন, আমরা ৩-৪ বার ভাঙনের কবলে পড়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। এবারও ভাঙন শুরু হওয়াতে খুব আতঙ্কে আছি। ভাঙন ঠেকাতে যে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে এতে ভাঙন ঠেকবে না।
এদিকে, প্রতিবছর লাগাতার ভাঙনে এখন পদ্মা নদী এসে ঠেকেছে দৌলতদিয়া ঘাটের কোল ঘেঁষে। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার রাসেল বলেন, গত বছর ঘাট এলাকার অনেক অংশ নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। এবারও ভাঙনের কবলে পড়ে ছয়টি ফেরিঘাটের মধ্যে ইতোমধ্যে দুই নম্বর ঘাটটি বন্ধ হয়ে গেছে। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার ভাঙন ঠেকাতে যে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। এ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি ফেরিঘাট, দুইটি স্কুল ও প্রায় এক হাজার পরিবারের বসবাস। তাই এখানে ভাঙন রোধে বেশি বেশি করে জিও ব্যাগ ফেলা প্রয়োজন।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে আমাদের ডিজাইন দপ্তর থেকে প্রকৌশলীরা এসে দেখে গেছেন। ঘাটে এক কিলোমিটারে এলাকায় জরুরি ভাঙন ঠোকাতে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার বালি ভর্তি জিও ব্যাগ দরকার হবে। আপাতত এক কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যায় ধরে গত ১৪ জুন থেকে ঘাটের এক কিলোমিটার এলাকায় জরুরি ভাঙন ঠেকাতে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। প্রতিদিন ট্রলারে করে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ ব্যাগ ফেলা হচ্ছে পদ্মা পাড়ের পানিতে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরিফ এন্টারপ্রাইজ। ভাঙন অব্যাহত থাকলে পর্যায়ক্রমে যখন যে পরিমাণ টাকা লাগবে তা দিয়ে কাজ করা হবে। ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।
উপজেলা সহকারী কমশিনার (ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) আব্দুল্লাহ্ আল সাদীদ বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক যে বালির বস্তা ফেলার কার্যক্রম চলছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা আমি তদারকি করছি। কাজ সুষ্ঠুভাবে চলছে। তবে বালির বস্তার পরিমাণ আরো বাড়ানো গেলে ঘাট রক্ষার্থে সুবিধা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মার ভাঙন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ