বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজধানীর মগবাজারের বৈকালি হোটেলে বৃষ্টি আক্তার (১৬) নামে এক কিশোরীকে হত্যার ঘটনায় নিহত কিশোরীর দুলাভাই সুমনকে (২৯) গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত মঙ্গলবার রাতে মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকা থেকে র্যাব-৩ এর একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। অনৈতিক সম্পর্কে রাজী না হওয়ায় শ্বাসরোধে বৃষ্টিকে হত্যা করা হয়। এরপর আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার জন্য লাশটি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে নাটক সাঁজায় সুমন। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল একরামুল হাসান এ সব কথা বলেন। গত সোমবার বৈকালি হোটেলের ৪০৭ নম্বর কক্ষ থেকে বৃষ্টির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
কর্নেল একরামুল হাসান বলেন, ২০১০ সালে বৃষ্টির মেজো বোনের সঙ্গে সুমনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বৃষ্টিকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে সুমন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি পারিবারিকভাবে বৃষ্টির বিয়ের কথা চলছিল। এতে সুমনের সঙ্গে তার কিছুটা দুরত্ব তৈরি হয়। এ ঘটনায় সুমন আরও ক্ষুব্ধ হয়। এমনকি তাদের পূর্বেকার ঘনিষ্ট ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে দেবে বলে বৃষ্টিকে হুমকি দেয়।
একরামুল হাসান আরও বলেন, গত সোমবার বিষয়টি মিমাংসার কথা বলে বৈকালি হোটেলে বৃষ্টিকে ডেকে নিয়ে আসে। তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলের ৪০৭ নম্বর কক্ষ বাড়া নেয়। সেখানে পূর্ববর্তী সম্পর্কের জেরে দু’জনের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সুমন বৃষ্টির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করে। এতে বৃষ্টি বাধা দিলে সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে গলায় ওড়না পেচিয়ে মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে সুমন। এদিকে মৃত্যু নিশ্চিত হলে সুমন আতঙ্কিত হয়ে পরে। তখন সে ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য হোটেল কতৃপক্ষকে ডেকে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে। কিন্তুকতৃপক্ষের সন্দেহ হলে তারা পুলিশকে খবর দেয়। সুমন বিষয়টি টের পেয়ে হোটেলের ভেতরে বৃষ্টির লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সুমন প্রাথমিকভাবে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। হত্যাকান্ডের পর সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পালিয়ে যাওযার আগেই র্যাব মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এদিকে বৃষ্টিকে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। সুমনের গ্রামের বাড়ি ভোলায়। সে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রাইভেটকার চালক হিসেবে কর্মরত ছিল।
এদিকে সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল বিকেলে ঢাকা মূখ্য মহানগর আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান। শুনানী শেষে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কোর্ট রির্পোটার জানান, রাজধানীর মগবাজারের বৈকালী আবাসিক হোটেলে শ্যালিকাকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেফতার দুলাভাই সুমনকে পাঁচদিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এর আগে বুধবার ভোরে আসমি সুমনকে মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে গ্রেফতার করে রমনা থানা পুলিশ আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।
মামলা সুত্রে জানাগেছে, সোমবার ভোরে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভুয়া নাম দিয়ে নিহত বৃষ্টি ও আসামি সুমন মগবাজারের বৈকালী হোটেলের ৪০৭ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। বেলা সাড়ে ১১টায় সেই কক্ষ থেকে বৃষ্টির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরআগে আসামি সুমন পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সুমনকে একমাত্র আসামি করে রমনা থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।