Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নওগাঁয় বাড়ছে আমের ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম


সাপাহারের ফ্রুট ব্যাগিং আম বাগানের দৃশ্য। গাছে গাছে ঝুলছে ব্যাগ; আর তার মধ্যেই সুরক্ষিত পুষ্ট আকর্ষণীয় রুপালি জাতের আম। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ফ্রুট ব্যাগিং। বাহিরের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড়, বিরুপ আবহাওয়া কিংবা কোন ক্ষতিকারক প্রভাবই এই ব্যাগের মধ্যে প্রবেশ করে আমের কোন প্রকার ক্ষতি করতে পারে না।
ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতির সফল আম চাষি আব্দুর রাজ্জাক। সাপাহার উপজেলার এ কৃষক গত বছর ২০ বিঘা জমিতে সুমিষ্ট আম রুপালিতে ফ্রুট ব্যাগিং করে বেশ লাভের মুখ দেখেন। ফলে এবারও ৪০ বিঘা জমির আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন। তার মতে কীটনাশক, পোকামাকড়, বিরুপ আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আমকে বাঁচাতে এই পদ্ধতির বিকল্প নাই। তবে সরকারি সহযোগিতা প্রদান করা হলে বিষমুক্ত আম দেশের জনগন খেতে পারতো এবং বিদেশেও রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যেতো বলে আশা এই আম চাষির। আমের ২য় রাজ্য হিসাবে খ্যাত নওগাঁর ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল হিসাবে পরিচিত পোরশা, সাপাহার, পতœীতলা ও ধামইরহাট উপজেলা। এই কয়টি উপজেলায় উৎপাদিত আম রাজশাহী ও চাপাইকেও ছাড়িয়েছে। কিন্তু রাজশাহী ও চাপাইয়ে আম চাষ অনেক পুরাতন হওয়ায় দেশের প্রচার-প্রচারণায় নওগাঁর নাম সাড়া জাগাতে পারেনি। তবে বর্তমানে কৌশলী আম ব্যবসায়ীরা নওগাঁর আমকে রাজশাহী ও চাপাইয়ের বলে বেশি দামে বিক্রয় করছে। চলতি মৌসুমে নওগাঁর আমের প্রচার-প্রচারণার কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট উপজেলার কৃষি অফিসগুলো।
নওগাঁয় গত বছর থেকে শুরু হয়েছে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি। আর এতে করে লাভবান হচ্ছেন শত শত কৃষক। তবে কৃষকরা ফ্রুট ব্যাগিং করে থাকে এ জেলার সবচেয়ে সুপরিচিত সুমিষ্ট রসালো আম রুপালিতে। গত বছর ফ্রুট ব্যাগিং এর আম কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়েছিল এবারও যাবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে, এটি আধুনিক ও পরিবেশসম্মত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত আমে বিদেশে পাঠানোর জন্য যে সকল গুণাগুণ প্রয়োজন তার সকল কিছুই বিদ্যামান ।
উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন শুধু রাজ্জাক নয়; আগামীতে এ অঞ্চলের অনেকেই শুরু করবেন এই পদ্ধতিতে আম চাষ। তবে এই পদ্ধতি একটু ব্যয়বহুল হলেও আম বিক্রয়ের লাভ তা পুষিয়ে দেয়। কারণ এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত নির্ভেজাল আমের কদর ক্রেতাদের কাছে অনেক। ক্রেতারা একটু বেশি দামে হলেও এই বিষমুক্ত আম কিনেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন, এটি আধুনিক ও পরিবেশসম্মত পদ্ধতি। কৃষকদের এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সভা সেমিনার করা হচ্ছে। তবে এই পদ্ধতির উপকরণগুলোর মূল্য কম ও সহজলভ্য হলে এই পদ্ধতি দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। কারণ বর্তমান ভেজালের যুগে নির্ভেজাল পণ্য খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। যেহেতু এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত আম বিষমুক্ত তাই বর্তমান সময় ও আগামীতেও এর কদর অটুট থাকবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো বলেন চলতি বছর নওগাঁ জেলায় প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করা হয়েছে যা গত বছরের চেয়ে ৬ গুণ বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আম

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ