Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হুমকিতে বঙ্গবন্ধু সেতু

বন্যায় ঝুঁকিতে প্রথম সেতু রক্ষা বাঁধ, ১০০ মিটার ধসে ১০ বসতভিটা বিলীন, জিও ব্যাগও কোনো কাজে আসছে না

নূরুল ইসলাম : | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

হুমকীর মুখে পড়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু। বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা গাইড বাঁধ এলাকায় আবারো দেখা দিয়েছে ভাঙন। গত বুধবার মধ্যরাত থেকে সেতুর পূর্বপাড় গরিলাবাড়ী অংশে এ ভাঙন শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ১০০ মিটার অংশ ধসে ১০টি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, গত বছর ভাঙনের ফলে দ্বিতীয় সেতু রক্ষা বাঁধটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় এখন ঝুঁকির মুখে পড়েছে প্রথম সেতু রক্ষা বাঁধটি। ভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকির মধ্যে পড়বে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বঙ্গবন্ধু সেতু।
এদিকে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়ের ৮নং ওয়ার্ডের রানাগাছা এলাকার ঝিনাই নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই দিনের ভাঙনে কবরস্থান ও বেশ কয়েকটি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেকোন সময় শহর রক্ষাবাঁধ ভেঙে টাঙ্গাইল শহরে পানি প্রবেশ করতে পারে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুকনো মৌসুমে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করায় বন্যার সময় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। অবৈধ এসব ড্রেজারের বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনকে একাধিকবার অভিযোগ করার পরে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রানাগাছা এলাকার বাসিন্দারা। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, ইতোমধ্যেই ভাঙন কবলিত এলাকাসহ শহর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভাঙন ঠেকাতে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। এছাড়া, সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের রামাগাছা এলাকার রাস্তাটি (শহর রক্ষা বাঁধ) আংশিক ভেঙে হুমকির মুখে রয়েছে।
ইতোমধ্যেই ওই এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দার বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে তুলা মিয়ার ৪০ শতাংশ, আজাহার আলীর ৪০ শতাংশ, বাদশা মিয়ার ৪০ শতাংশ, সাহাদত আলীর ৩০ শতাংশ, খালেম মিয়ার ৪০ শতাংশ সহ এলাকার বেশ কয়েকজনের জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। পানির তোড়ে হুমকির মুখে রয়েছে আরও শতশত বসতভিটা।
রানাগাছা এলাকার একজন বাসিন্দা জানান, গত দুইদিনের ভাঙনে শহর রক্ষা বাঁধটির অর্ধেকের বেশি নদীগর্ভে চলে গেছে। বাঁধের বাকি অংশেও ফাঁটল দেখা দিয়েছে। এই নদী ভাঙন রোধে এলাকাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অপরদিকে, সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলী, রাঙ্গাচিড়া, খাসকুকুয়া এলাকায় যমুনার ভাঙনে অনন্ত ৩০টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের ভাঙনে দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ ও ঐহিত্যবাহী চরপৌলী হাট নদীগর্ভে চলে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে শতশত একর ফসলি জমি ও বসতভিটা। চরপৌলী এলাকার একজন বাসিন্দা জানান, গত তিন বছর ধরে বাড়ি সরিয়ে পরের জমিতে ঘর তৈরি করে থাকছেন তিনি। এবারেও যমুনার ভাঙন তার ঘরের পেছনে এসেছে। এখন তার আর যাওয়ার কোন জায়গা নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ