Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাড়ছে আম-কাঁঠালের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ফলে ‘ভেজাল’। গত কয়েক বছরে যেন সর্বত্র প্রচলিত একটি শব্দ ছিল। তবে এ বছর প্রচলিত এই শব্দটি নেই বললেই চলে। আর তাই এ বছর ক্রেতাদের ব্যাপক চাহিদা মৌসুমী ফলে। ক্রেতার এমন চাহিদায় হরেক রকমের ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন নগরীর ফল ব্যবসায়ীরা। ফুটপাত থেকে শুরু করে নগরীর প্রত্যেকটি বাজারেই দেখা মেলে হরেক রকমের ফল বিক্রেতার। ঠেলাগাড়িতে করে ফেরি করে বেড়ানো বিক্রেতার সংখ্যাও নেহাত কম নয়।
মৌসুমী ফলে ঠাসা ফলের বাজারে পৃথকভাবে যেন আম-কাঁঠালের মৌ মৌ গন্ধ সর্বত্র বিরাজ করছে। মৌসুম শুরুর দিকে আম-কাঁঠালের দাম ছিল গত এক যুগের মধ্যে সর্বনিম্ন। কাঁঠাল ছিল একেবারেই সস্তা। যদিও গত কয়েকদিন থেকে রাজধানীর খুচরা বাজারে বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের আম ও কাঁঠালের দাম। প্রকারভেদে আমের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা। তবে দাম বাড়লেও এখনো তা সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতদিন ছিল আমের ভরা মৌসুম। এখন সেই মৌসুমে একটু ভাটা পড়েছে। বাজারে আসতে শুরু করেছে ফজলি আম। এ আমের দাম কমই আছে। তবে অন্য আমের দাম কিছুটা বাড়তি। এদিকে রাজধানীর বাজারে সুস্বাদু এই ফল দুটির দাম কিছুটা বাড়লেও চাষীরা আগের মতোই কম দামে বিক্রি করছেন। আম-কাঁঠাল ছাড়ও আঙুর, আপেল, মাল্টা, নাশপাতির মতো অভিজাত ফলের সাথে কলা, বেল, আনারসসহ মৌসুমী ফলও অনেকটা জায়গা দখল করে রেখেছে ফলের বাজারে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগে যেসব আম ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হত, এখন সেসব আম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। অর্থাৎ বাজারে এর চেয়ে কম দামের কোনো আম নেই। এদিকে রাজধানীর এলাকাভেদে আমের দামের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। মিরপুরের বাজারে হিমসাগর কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এটা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেশি। ল্যাংড়া ও আম্র পলি মান ভেদে ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফজলি আম বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকায়। ব্যবসায়ী সিরাজ বলেন, এতদিন সুন্দরী জাতের আম কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি করতাম। পাইকারী বাজারে দাম বাড়ায় এখন সেটা ১২০ টাকার নিচে দেয়া সম্ভব না। তিনি বলেন, কম দামে বহু আম খেল পাবলিক। এখন আর সেটা হবে না। মৌসুম শেষ হয়ে আসছে।
রফিুকল ইসলাম নামের এক ক্রেতা জানান, আমের দাম রেকর্ড পরিমাণ কম ছিল। বলতে পারেন গত এক দশকের মধ্যে আমের দাম এত কম ছিলনা। আলহামদুলিল্লাহ খেয়েছিও প্রচুর। এখন একটু দাম বেড়েছে। সেটাও খুব বেশি না। সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। তিনি বলেন, এখনও আমের মৌসুম শেষ হয়নি। এরপর ফজলি ও চুষা জাতের আম আসবে। আশা করি সেগুলোর দামও কম থাকবে।
এদিকে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও জাতীয় ফল কাঁঠাল। আকারে বড়, সহজ প্রাপ্য, দামে সস্তা, একটি ফল পরিবারের সবাই মিলে খাওয়া যায়, পুষ্টিগুণ বেশি - এসব কারণেই জাতীয় ফলের খেতাব পায় কাঁঠাল। বাঙ্গালির সঙ্গে কাঁঠালের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। সুস্বাদু এই ফলটির দাম গত প্রায় এক যুগে চলতি বছরে সর্বনি¤œ পর্যায়ে। তবে কয়েকদিন থেকে কাঁঠালের দামও কিছুটা বাড়তির দিকে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাঝারি সাইজের একটা কাঁঠাল আগে ১০০ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন সেটা ১২০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ী আনিস রহমান বলেন, গাজীপুরের কাঁঠাল ভালো। কিন্ত এখন দাম একটু বেশি। ফলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে রাজধানীর ফলের বাজারে কাঁঠালের দাম কিছুটা বাড়লেও গ্রামীণ চাষীরা দাম পাচ্ছেন না এই ফলটির। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে এ বছর দাম কম হওয়ায় কাঁঠাল চাষি ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে। চাহিদা না থাকায় তারা হা-হুতাশ করছে। পাইকারি ব্যবসায়িরা কাঁঠাল ঠিকমতো না কেনায় কাঁঠাল মালিকরা বাজার থেকে অনেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। জাতীয় ফল কাঁঠালের সকল অংশই ব্যবহার্য্য হলেও কমমূল্য হওয়ায় এখন অনেক পরিবার মনের দুঃখে গরুকে খাওয়াচ্ছে।##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আম

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ