Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাঁচামরিচের ডাবল সেঞ্চুরি

ডিমের ডজন টমোটোর কেজি শত টাকা বৃষ্টি-বন্যার দোহাইয়ে বাজার আগুন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০১৮, ৩:২২ এএম

 সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও রমজান মাসে ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচের দাম ছুঁয়েছে দুই শতকের ঘর। সরবরাহ কম হওয়ার কারণে মরিচের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আড়তে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকার কারণে দাম বেড়েছে। বর্ষায় মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়া ও অপর্যাপ্ত সরবরাহকেই দুষছেন তারা। বাজার ঘুরে দখা গেছে বাজার ও মানভেদে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। কিন্ত একই মরিচ মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে।
কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার বিষয়ে ব্যবসায়ী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কাঁচা মরিচের দাম সহসা কমার সম্ভাবনা কম। কারণ বৃষ্টিতে অনেকের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। যার প্রভাবে বাজারে সরবরাহ কমেছে। সামনে বৃষ্টি কমলেও কাঁচা মরিচের সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা কম।
অবশ্য কিছু কিছু পণ্যের দাম কমেছে। মুরগির মাংসের দাম এখন কিছুটা কমিয়ে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। গরুর মাংসেও ঈদের প্রভাব নেই। সবজির বাজারও স্থিতিশীল আছে। কমেছে আমদানি করা রসুনের দাম। জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক ক্রেতা জানান, যে কোনো ছোট্ট একটা কারন পেলেই দাম বেড়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। সরবরাহ কম, বর্ষা, বন্যা ও ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার অজুহাতে সবজির দাম বেড়ে যাওয়া নতুন কিছু নয়। এদেশে এসব দেখার কেউ নেই।
পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিংগা, বেগুন, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে, করলাসহ প্রায় সব সবজিই বাজারে ভরপুর। যে কারণে বেশির ভাগ সবজিই ৪০-৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তবে রোজার সময় ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া টমেটোর দাম বেড়ে গত সপ্তাহে হয় ১৩০-১৪০ টাকা কেজি। তবে গতকাল শুক্রবার এ সবজিটির দাম কিছুটা কমে ১০০-১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
টমেটোর দামের বিষয়ে শান্তিনগর বাজারের আবদুর রহমান বলেন, এখন যে টমেটো বিক্রি হচ্ছে তা কোল্ড স্টোরের। আগামী শীতে আবার বাজারে নতুন টমেটো আসবে। নতুন টমেটো আসার আগে বাজারে এর কেজি ১০০ টাকার নিচে নামার সম্ভাবনা কম। এদিকে বাজার ও মান ভেদে প্রতিকেজি চিচিংগা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহেও একই ছিল। বেগুনও আগের সপ্তাহের মতো ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে ঝিঙা, ধুন্দল, পটল, কাঁকরোল ও করলা। ঝিঙা ও ধুন্দল আগের সপ্তাহের মতোই ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স ও করলা।
এদিকে রোজার মধ্যে বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হওয়া কাঁকরোল ও পেঁপের দাম গত সপ্তাহে বেশ কমে যায়। রোজার সময় ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া কাঁকরোলের দাম কমে দাঁড়ায় ৪০-৪৫ টাকায়। আর ৭০-৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পেঁপের দাম কমে দাঁড়ায় ২৫-৩০ টাকায়। চলতি সপ্তাহেও এ সবজি দুটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে কিছুটা দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বরবটি। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে ৪০-৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
সবজির পাশাপাশি স্থিতিশীল রয়েছে শাকের দাম। লাল শাক, সবুজ ডাটা শাক, পাট শাক, কলমি শাক আগের সপ্তাহের মতো ১০-১৫ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। পুইশাক ও লাউ শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা করে।
দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে পেঁয়াজও। দেশি পেঁয়াজ বাজার ও মান ভেদে ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহেও পেঁয়াজের দাম এমনই ছিল।
এদিকে বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই ডিমের দাম কম ছিল। গত দুই-তিন মাসে ৭০-৮০ টাকার মধ্যে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম কিনতে পেরেছেন ক্রেতারা। এখন সেই ডিম কিনতে ক্রেতাকে ৯৫-১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। ডিম বিক্রেতারাও বলছেন, সরবরাহ কম। সে তুলনায় চাহিদা বেশি।
ঈদে গরু ও মুরগির মাংসের বাড়তি চাহিদার কারণে দাম বেশ বেড়ে গিয়েছিল। এখন বাড়তি চাহিদা নেই। তাই দর কিছুটা কমেছে। বাজারে এখন গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৪৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা, যা ঈদের আগে ৫৫০ টাকায় উঠেছিল। অবশ্য রমজান মাসে সিটি করপোরেশন গরুর মাংসের দাম সর্বোচ্চ ৪৬০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। ব্রয়লার মুরগির কেজিপ্রতি দর এখন ১৫০ টাকা, যা ঈদে ১৭০ টাকায় উঠেছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেঞ্চুরি

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ