মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রথম ধাপে তিন হাজার চারশ’ কোটি ডলার সমমূল্যের চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক গতকাল শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে। একই মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর চীনের পাল্টা ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তও একই সাথে কার্যকর হয়। এতে করে চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধে প্রথম হামলা করলো ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গতকাল শুক্রবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বড় দুই অর্থনীতির দেশের মধ্যকার এ বাণিজ্যযুদ্ধ বিশ্বের স্টক মার্কেটগুলোকে অস্থিরতায় ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত ২২ মার্চ ৫০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের আমদানিকৃত চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের জন্য একটি আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিযোগ, চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মেধাসম্পদ চুরি ও স্থানান্তর করছে। জবাবে এপ্রিলের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ১২৮টি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করে চীন। এর আর্থিক পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি ডলার।
এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর উপক্রম হয়। গত মে মাসে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার পর সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে ১৫ জুন ৫০০০ কোটি মূল্যের চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তার ঘোষণা অনুযায়ী, বার্ষিক ৩৪০০ কোটি ডলার বাণিজ্য হয় এমন ৮০০ পণ্যের ওপর ৬ জুলাই থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। আর বাকি ১৬০০ কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক কবে থেকে কার্যকর হবে সে ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জবাবে একই মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় চীন। ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম দফায় শুক্রবার থেকে তিন হাজার চারশ’ কোটি ডলার মূল্যের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। এখন থেকে বিমানের টায়ার ও বাণিজ্যিক ডিশওয়াশারসহ বিভিন্ন রকমের চীনা পণ্য আমদানিতে মার্কিন ব্যবসায়ীদের শুল্ক গুনতে হবে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বাকি ১৬০০ কোটি ডলার মূল্যের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ নিয়ে আলোচনা চলছে। চীনও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিজাত পণ্য ও গাড়িসহ ৩৪০০ কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্য থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক সংগ্রহ করবে।
এছাড়া ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদ নীতির আওতায় গত মার্চে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর যথাক্রমে ২৫ শতাংশ ও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়। সে সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ তিনি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয় ১ জুন। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ঘনিষ্ঠ মিত্রদের বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২৮০ কোটি ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যে আমদানি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি ২২ জুন থেকে কার্যকর হয়। শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের রক্ষণশীল কর্মসূচির অংশ। যাতে বিশ্বে চলমান মুক্তবাজার অর্থনীতির মৌলিক মানদন্ডের লঙ্ঘন করা হয়েছে। গত কয়েক দশক ধরেই বিশ্ব বাণিজ্যে এই নীতির অনুসরণ করা হয়।
ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন প্রযুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের পাচার রোধ করতে এবং যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আর হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা চীন থেকে আমদানিকৃত আরো ১৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন।
এর আগে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এ মাসে চীন থেকে আমদানিকৃত বাকী পণ্যগুলোর ওপরও শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। চীন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকো, কানাডা ও ইউরোপের দেশগুলো থেকে আমদানিকৃত স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।